ফার্স্ট ফাইনান্স দেউলিয়া হয়ে যাবার আশংকা

মিথ্যা তথ্য দিয়ে ৫% ডিভিডেন্ট ঘোষণা!

বিডিমেট্রোনিউজ ফার্স্ট ফাইনান্স লি. এর জন্ম ১৯৯৩ সাল। বহু বির্তকের মধ্যদিয়ে জন্ম দেয়া এ ফাইনান্স কোম্পানিটি গত বছর ডিভিডেন্ট দিতে ব্যর্থ হওয়ায় এর শেয়ারটি জেড ক্যাাটাগরিতে ট্রেড হচ্ছে। যে কোন সময় কোম্পানিটি দেউলিয়া হয়ে যাবার আশংকা বিদ্যমান।

অনিয়ম, দুর্নীতির অভিযোগে বাংলাদেশ ব্যাংকের ৪ কোটি টাকা জরিমানার মুখে এর আগে চেয়ারম্যান ফারুক আহমেদ চৌধুরী পদত্যাগ করলে তার ভাই ফয়সাল আহমেদ চৌধুরীকে চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। যিনি আগে ছিলেন ভাইস চেয়ারম্যান।

ফার্স্ট ফাইনান্স কোম্পানিতে পারিবারিক শেয়ার হোল্ডিং প্রায় ৪২ শতাংশ। বাংলাদেশ ব্যাংক বিশেষ পরিদর্শনে প্রাপ্ত অতিরিক্ত পারিবারিক শেয়ার হোল্ডিং কমাতে বললেও ৫টি বেনামী ও নাম সর্বস্ব পারিবারিক ব্যক্তি শেয়ার হোল্ডিং এখনো সেই ৪২ শতাংশই আছে। এমনকি ঐ ৫টি কোম্পানির ইনকাম ট্যাক্স ফাইল বাংলাদেশ ব্যাংকে প্রতিবেদন আকারে দাখিল করতে উপর্যুপরি নির্দেশ দেয়া সত্ত্বেও তারা তা দিতে ব্যর্থ হয়।

এ অবস্থায় তাদের প্রভিশন সর্টফল গত ডিসেম্বর প্রান্তিকে দাঁড়ায় ৬ কোটি ৭০ লক্ষ টাকা। এ সময়ের মধ্যে সি এল এবং জি এলের প্রায় ২৩ কোটির টাকায় অসমাঞ্জস্যতা পরিলক্ষিত হয়।

অন্যদিকে ইনকাম ট্যাক্স প্রভিশন সর্টফল বেড়ে দাঁড়ায় ১০ কোটি ৩৫ লক্ষ টাকায়। আমানতের বিপরীতে সুদ প্রভিশন করবার নিয়ম প্রতিটি ফাইনান্স কোম্পানিতে বাধ্যতামূলক। কিন্তু এখানে সুদ প্রভিশন করা হয় না। যদি আমানতের বিপরীতে সুদ প্রভিশন করা হতো তাহলে প্রায় ২০ কোটি টাকা প্রভিশন করতে হতো।

এ অবস্থার পরিপ্রেেিত ইনকাম ট্যাক্স প্রভিশন, জেনারেল প্রভিশন, সি,এল-জি,এল এর ঘাটতি এবং সুদের প্রভিশন সব মিলে দাঁড়ায় প্রায় ৬০ কোটি টাকা।

এদিকে প্রথম কোয়ার্টারে তাদের লসের পরিমাণ দাঁড়ায় ৯ কোটি ৫৯ লক্ষ টাকা। সর্বমোট প্রায় ৭০ কোটির বিপরীতে তাদের লাভের পরিমাণ মাত্র ৬.৩৪ লক্ষ টাকা। প্রায় ৭০ কোটি টাকা প্রভিশন ঘাটতি থাকা স্বত্ত্বেও হিসাবের কারসাজি ও মিথ্যা তথ্য দিয়ে তারা ৫% ডিভিডেন্ট ঘোষণা করেছে বলে অভিযোগ রয়েছে। যা খতিয়ে দেখবার বিষয়। শেয়ারের মূল্য বৃদ্ধি করবার জন্য মালিক পক্ষ এমনটি করেছে বলে জনশ্রুতি আছে, যাতে করে তারা শেয়ারের মূল্য বৃদ্ধি করে শেয়ার বিক্রয় করতে পারে।

আবার অপরদিকে তাদের কু ঋনের পরিমাণ দেখানো হয়েছে ৩৩ শতাংশ। কিন্তু বাস্তবে তা নয়। অনেকগুলি কোম্পানি হাইকোর্টের রিট করে CIB স্থগিত করেছে। তাদের ঋণগুলো কু-ঋণ হিসেবে গণ্য করতে হবে। কিন্তু ঐ সব কোম্পানির লোনকে STD লোন হিসেবে দেখানো হয়েছে। ঐ কোম্পানিগুলোর কু-ঋণের পরিমাণ মোট ঋণের প্রায় ১০ শতাংশ। তাহলেএতে মোট কু-ঋণের পরিমাণ দাঁড়ায় প্রায় ৪৩ শতাংশ। ৪৩ শতাংশ কু-ঋণ নিয়ে এবং অধিক সুদ দিয়ে টাকা এনে এই ফাইনান্সে কেবল লোকসান বাড়তে থাকবে বলে অভিজ্ঞমহল ধারণা করছেন।

বস্তুতঃ কোম্পানিটি অন্তসারশুণ্য। সংশ্লিষ্টরা আশঙ্কা করছেন অন্তসারশুণ্য কোম্পানিটি যে কোন সময় দেউলিয়া হয়ে যাবার আশংকা রয়েছে। কেবলমাত্র বাংলাদেশ ব্যাংকের দ্রুত হস্তক্ষেপ এই ফাইনান্স কোম্পানির সঙ্গে বিপুল সংখ্যক বিনিয়োগকারীর স্বার্থ রক্ষা করতে পারে।

Print Friendly, PDF & Email

Related Posts