বাকি থাকল নাঈম আশরাফ

বিডিমেট্রোনিউজ ॥ মামলায় আসামি পাঁচজন। গত ১১ মে সিলেটে গ্রেপ্তার হন মামলার আসামি সাফাত আহমেদ ও সাদমান সাকিফ। গতকাল রাজধানীর নবাবপুর থেকে সাফাতের গাড়িচালক বিল্লালকে গ্রেপ্তার করে র‍্যাব। গ্রেপ্তার করা হলো রহমত আলী আপন জুয়েলার্সের মালিকের ছেলে সাফাত আহমেদের দেহরক্ষী। বাকি থাকল আরেক আসামি নাঈম আশরাফ।

র‍্যাব ১০-এর প্রধান অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক জাহাঙ্গীর হোসেন মাতুব্বর জানিয়েছেন, গতকাল সন্ধ্যা ৬টার দিকে রাজধানীর নবাবপুর রোডের ইব্রাহিম হোটেল থেকে বিল্লালকে গ্রেপ্তার করা হয়।

ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উত্তর গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) উপকমিশনার শেখ নাজমুল আলম জানান, গতকাল সন্ধ্যা ৭টায় গুলশান-১ এলাকা থেকে রহমতকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গত ৬ মে ধর্ষণের অভিযোগ এনে বনানী থানায় মামলা করেন দুই ছাত্রীর একজন। এতে সাফাতসহ পাঁচজনকে আসামি করা হয়।

দুই ছাত্রী ধর্ষণ মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, গত ২৮ মার্চ রাত ৯টা থেকে পরের দিন সকাল ১০টা পর্যন্ত আসামিরা মামলার বাদী এবং তাঁর বান্ধবী ও বন্ধু শাহরিয়ারকে আটক রাখেন। অস্ত্র দেখিয়ে ভয়-ভীতি প্রদর্শন ও অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করেন। বাদী ও তাঁর বান্ধবীকে জোর করে ঘরে নিয়ে যান আসামিরা। বাদীকে সাফাত আহমেদ একাধিকবার ও বান্ধবীকে নাঈম আশরাফ একাধিকবার ধর্ষণ করেন। আসামি সাদমান সাকিফকে দুই বছর ধরে চেনেন মামলার বাদী। তাঁর মাধ্যমেই ঘটনার ১০-১৫ দিন আগে সাফাতের সঙ্গে দুই ছাত্রীর পরিচয় হয়।

এজাহারে আরো বলা হয়েছে, ঘটনার দিন সাফাতের জন্মদিনে দুই ছাত্রী যান। সাফাতের গাড়িচালক বিল্লাল ও দেহরক্ষী আবুল কালাম আজাদ তাঁদের বনানীর ২৭ নম্বর রোডের দ্য রেইন ট্রি হোটেলে নিয়ে যান। হোটেলে যাওয়ার আগে বাদী ও তাঁর বান্ধবী জানতেন না সেখানে পার্টি হবে। তাঁদের বলা হয়েছিল, এটা একটা বড় অনুষ্ঠান, অনেক লোকজন থাকবে। অনুষ্ঠান হবে হোটেলের ছাদে। সেখানে যাওয়ার পর তাঁরা ভদ্র কোনো লোককে দেখেননি। সেখানে আরো দুই তরুণী ছিলেন। বাদী ও বান্ধবী দেখেন সাফাত ও নাঈম ওই দুই তরুণীকে ছাদ থেকে নিচে নিয়ে যাচ্ছিলেন। এই সময় বাদীর বন্ধু ও আরেক বান্ধবী ছাদে আসেন। পরিবেশ ভালো না লাগায় তাঁরা চলে যেতে চান। এই সময় আসামিরা তাঁদের গাড়ির চাবি শাহরিয়ারের কাছ থেকে নিয়ে নেন। তাঁকে খুব মারধর করেন। ধর্ষণ করার সময় সাফাত গাড়িচালককে ভিডিওচিত্র ধারণ করতে বলেন। বাদীকে নাঈম আশরাফ মারধর করেন এবং তিনি প্রতিবাদ করবেন বলে জানিয়েছিলেন। এরপর বাদী ও বান্ধবীর বাসায় দেহরক্ষী পাঠানো হয় তথ্য সংগ্রহের জন্য। তাঁরা এতে ভয় পেয়ে যান। লোকলজ্জার ভয় এবং মানসিক অসুস্থতা তাঁরা কাটিয়ে উঠে পরে আত্মীয়স্বজনদের সঙ্গে আলোচনা করে মামলার সিদ্ধান্ত নেন। এতে মামলা করতে বিলম্ব হয়।

এ ঘটনায় গ্রেপ্তার হওয়া আপন জুয়েলার্সের মালিকের ছেলে সাফাত এবং সাকিফ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে রিমান্ডে রয়েছেন। তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

Print Friendly, PDF & Email

Related Posts