প্রেস ব্রিফিংয়ে মতলব উত্তর উপজেলা চেয়ারম্যান
জাকির হোসেন বাদশা, মতলব (চাঁদপুর) ॥ চাঁদপুরের মতলব উত্তরে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ‘নেদায়ে ইসলাম’ এর পরিচালনা কমিটি নিয়ে চাচা শায়খ মোস্তাক আহমদ ও ভাতিজা শায়খ মাসউদ আহমদের মধ্যে বাগবিতন্ডতা নিয়ে বহুদিন যাবৎ বিরোধ চলছে। এ বিরোধের জের দিতে হচ্ছে এলাকাবাসীকেও। গত ২০১৪ ঈদের নামাজের সময় তাদের দুই পক্ষের সংঘর্ষে রফিক নামে একজন নিরীহ লোক নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় এখনো মামলা চলমান। তাদের দ্বন্দ্বের কারনে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসেও নেদায়ে ইসলাম ওরশ উদযাপন হয়নি।
বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায় নেদায়ে ইসলামের অন্তর্ভূক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ফরাযীকান্দি আল-আমিন এতিমখানা মাদ্রাসা প্রাঙ্গণে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে সভাপতিত্ব করেন উক্ত প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ আতাউল করিম মুজাহিদ। এসময় চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি শরীফ চৌধুরী, সাধারন সম্পাদক জিএম শাহীন, স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন দানেশ ও স্থানীয় সাংবাদিক এবং এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
‘নেদায়ে ইসলাম’ এর কোটি কোটি টাকার সম্পত্তি একজন ভন্ডপীর আত্মসাৎ করতে চায় বলে দাবী জানিয়ে আল-আমিন এতিমখানার পরিচালনা কমিটির সদস্য ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মনজুর আহমদ বলেন, গত ১৯৪৯ ইং সালে আল্লামা শায়খ সায়্যিদ মুহাম্মদ বোরহানুদ্দিন উয়েসী (রা.) স্থানীয় এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ নিয়ে নেদায়ে ইসলাম সংস্থাটি প্রতিষ্ঠা করেন। যা পরবর্তীতে ১৯৬৩ সালে সমাজসেবা অধিদপ্তর থেকে নিবন্ধন লাভ করে। তিনি পরলোক গমন করার পর তার পুত্র আল্লামা শায়খ সায়্যিদ ড. মানযূর আহমদ আল-আহমাদী উয়েসী রিফা’য়ী (রা.) নেদায়ে ইসলাম পরিচালনা করেন। তিনি তার জীবন দশায় সবসময় বলেছেন তার নিজস্ব কোন সম্পত্তি নেই। যা আছে সব কিছুই নেদায়ে ইসলামের।
মানযূর আহমদ গত ২০১২ ইং সালে পরলোক গমন করার পর তার ভাই শায়খ মোস্তাক আহমদ আইনগত ভাবে নেদায়ে ইসলামের চেয়ারম্যান হয়ে দায়িত্ব পালন করছেন। অথচ মানযূর আহমাদের ছেলে মাসউদ আহমাদ ওয়ারিশীয় সম্পদ দাবী করে স্থানীয় কিছু দুস্কৃতিকারীর সহযোগীতায় নেদায়ে ইসলামের সকল সম্পত্তি আত্মসাৎ করতে চান। যা সম্পূর্ণ আইন বহির্ভূত। মিথ্যাচার ও লোভের কারণে ইতোমধ্যে তিনি একজন ভন্ড পীর হিসেবে মানুষের কাছে পরিচিত হয়ে গেছেন।
‘নেদায়ে ইসলামকে ধ্বংস করার লক্ষ্যে মাসউদ আহমাদ যে মিথ্যাচার করে বেড়াচ্ছেন’ এর সকল প্রমাণাদি সাংবাদিকদের সামনে তুলে ধরে মনজুর আহমদ বলেন, আমাদের জানামতে নেদায়ে ইসলামের ১০০ একরেরও বেশি সম্পত্তি রয়েছে। ঢাকা চট্টগ্রাম ও মতলব উত্তরের ফরাযীকান্দিসহ বিভিন্ন এলাকায় সম্পত্তি রয়েছে। স্থাবর অস্থাবর অনেক সম্পদ আছে। কিন্তু তিনি (মাসউদ আহমাদ) বলছেন মাত্র ৭৩ একর সম্পত্তি আছে। আমি ও এলাকাবাসী সবাই জানি মাসউদ আহমাদের পিতার নিজস্ব কোন সম্পত্তি নেই। নিজেকে নেদায়ে ইসলামের চেয়ারম্যান ও গদিনিশীন পীর দাবী করে মাসউদ আহমাদ বিভিন্নভাবে নেদায়ে ইসলামের ভক্তবৃন্দ ও এলাকাবাসীর মধ্যে বিভ্রান্তি ছড়িয়ে এ প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করে নেদায়ে ইসলামের সকল সম্পত্তির মালিক হতে চান। এ সুযোগ এলাকাবাসী কখনো দিবে না। যেকোন মূল্যে নেদায়ে ইসলাম ও এ সংস্থার অর্ন্তভূক্ত সকল প্রতিষ্ঠানকে রক্ষা করা হবে।