বাংলাদেশ ও মিয়ানমারে জরুরী সাহায্য প্রয়োজন : UNHCR

বিডিমেট্রোনিউজ ডেস্ক ঘূর্ণিঝড় মোরায় বাংলাদেশ ও মিয়ানমারে ক্ষতিগ্রস্থদের জন্যে জরুরী সহায়তার জন্য বিভিন্ন সংস্থার উদ্যোগ প্রয়োজন বলে মনে করেন UNHCR র মুখপাত্র Andrej Mahecic.

চলতি সপ্তাহে বঙ্গপোসাগরে বয়ে যাওয়া ঘূর্ণিঝড় মোরায় বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। হাজার হাজার ঘরবাড়ী বিধ্বস্থ হয়েছে। স্থানীয় এবং শরণার্থী ক্ষতিগ্রস্থ মানুষদের অনেকেই গৃহহীন হয়েছেন। তাদের জরুরী আশ্রয় প্রয়োজন।

আহতদের অনেকেই কক্সবাজারে অবস্থান নেয়া রোহিঙ্গা শরণার্থী। মিয়ানরমারের রাখাইন রাজ্য থেকে কক্সবাজারে আশ্রয় নিয়েছিলেন তারা। বুধবার কক্সবাজারের কুটুপালং শরণার্থী শিবিরে গাছ পড়ে ১১ বছর বয়সী এক শরণার্থী বালক মারা গেছে। মিয়ানমারের মধ্য রাখাইন অঞ্চলে পানির তোড়ে ভেসের গিয়ে পরে মারা গেছে ১০ বছর বয়সী এক বালক।

জাতিসংঘ মানবাধিকার সংস্থার হিসাব মতে, বাংলাদেশের কুটুপালং এবং নয়াপাড়া শরণার্থী শিবিরেই অধিকাংশ রোহিঙ্গা শরণার্থীর বাস। এই শিবির দুটির ঘরগুলোর সবই প্রায় কাঁদা মাটি বাশ প্লাস্টিক জাতীয় হালকা জিনিসপত্র দিয়ে তৈরী। শিবিরের প্রায় ২০ শতাংশ ধ্ধংস হয়ে গেছে ঘুর্নিঝড়ে। স্থানীয় স্কুল কমিউনিটি সেন্টার সরকারী অফিস ও এনজিওর অফিসগুলোও ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। জাতিসংঘ মানবাধিকার সংস্থার কর্মীরা ক্ষয়ক্ষতির অবস্থা পর্যবেক্ষন করে কিভাবে সাহায্য করা যায় সে চেষ্টা করছেন।

মিয়ানমারেও ক্ষতিগ্রস্থদের জন্যে জাতিসংঘের পাশাপাশি স্থানীয় সরকার ও অন্যান্য সাহায্য সংস্থার কর্মীরা সহায়তার চেষ্টা করছেন। রাখাইন রাজে্যর বিভিন্ন স্থানে হাজার হাজার মানুষ ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।

দুটি দেশেই সাহায্য কর্মীরা কাজ করে চলেছেন। অব্যহত বৃষ্টি ও দুর্যোগপূর্ন আবহাওয়ার কারনে অনেক স্থানে ত্রান কাজে বাধা সৃষ্টি হচ্ছে। রাখাইনের বিভিন্ন স্থানে ভূমিধ্বস এবং নদী ভাঙ্গনে পরিস্থিতি আরো ভয়াবহ হয়ে উঠেছে। উত্তর রাখাইন অঞ্চলে বন্যার কারনে ত্রান কাজ ঠিকমত করতে পারছেন না সাহায্য কর্মীরা। তার সাথে বিদ্যুৎ না থাকা এবং যোগাযোগ ব্যাবস্থার দুর্বলতা আরো সমস্যার সৃষ্টি করছে।

বাংলাদেশের শরনার্থী শিবিরগুলোতেও বিদ্যুতের অভাব। অণ্ধকারে স্থানীয়রা ভুগছে নানা ধরণের নিরাপত্তার আশংকায়।

এই অবস্থায় সেখানকার মানুষের জন্য সর্বাগ্রে প্রয়োজন নিরাপদ আশ্রয়ের ব্যাস্থা করা। কিছু কিছু শরনার্থীরা নিজেদের উদ্যোগে ঘরবাড়ী ঠিক করার কাজ শুরু করেছে। বেশিরভাগই সময় কাটাচ্ছে খোলা আকাশের নীচে অসহায়ভাবে। জাতীসংঘ কর্মীরা সবার আগে স্থাণীয় স্কুল ও আশ্রয়কেন্দ্র পূন:নির্মান করে সাময়িকভাবে জরুরী আশ্রয়স্থল তৈরির চেষ্টা করছেন। তারা প্লাস্টিক শিট বিতরণ করছেন ক্ষতিগ্রস্থদের মাঝে।

জাতিসংঘ জরুরী সহায়তা তহবিল থেকে আর্থীক সহযোগিতার আবেদন জানানো হয়েছে ঐ অঞ্চলে জরুরী সাহয্যের জন্য।

রাখাইন রাজ্যে প্রয়োজন আশ্রয়ের পাশাপাশি জরুরী স্বাস্থ্য সেবা। সেখানেও স্কুল ও আশ্রয়কেন্দ্র ঠিকঠাক করে সাময়িকভাবে ক্ষতিগ্রস্থদের জন্যে আশ্রয়ের ব্যাবস্থার চেষ্টা করা হচ্ছে।

খাদ্য খাবার পানি ও পয়োনিস্কাশনের প্রচন্ড অভাব পরিলক্ষিত হচ্ছে ঐসব স্থানে। বাংলাদেশে কুটুপালং ও নয়াপাড়া শরনার্থী শিবিরে ৩৩ হাজারেরও বেশী শরনার্থী অসহায় জীবন পার করছে। শিবিরের বাইরে আরো খারাপা অবস্থায় রয়েছে ২ লক্ষ অবৈধ রোহিঙ্গা শরনার্থী। এর মধৌএ গত বছর অক্টোবরে মিয়ানমারে দাঙ্গার পর পালিয়ে আসা ৭৪ হাজার নতুন শরনার্থী রয়েছে।

মিয়ানমারে ১ লক্ষ ২০ হাজার রোহিঙ্গা বাস্তচ্যুত হয়েছে যারা বিভিন্ন স্থানে মানবেতর অবস্থায় বাস করছে। এদের সহায়তার জন্য বিভিন্ন সংস্থার উদ্যোগ প্রয়োজন বলে মনে করেন UNHCR র মুখপাত্র Andrej Mahecic.

ভয়েস অফ আমেরিকা

 

 

Print Friendly, PDF & Email

Related Posts