‘সিগারেট কোম্পানির পক্ষে বিড়ি শিল্প ধ্বংসের নীল নকশা’

বিডিমেট্রোনিউজ ডেস্ক প্রস্তাবিত ২০১৭-২০১৮ অর্থবছরের বাজেটে বিড়ি শিল্পের ওপর আরোপিত কর প্রত্যাহার করার দাবিতে প্রয়োজনে অমরণ অনশনে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ বিড়ি শ্রমিক ফেডারেশন। সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ফেডারেশন নেতারা এ ঘোষণা দেন।

সংবাদ সম্মেলনে ফেডারেশনের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আমিন উদ্দিন বিএসসির সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন সংগঠনের যুগ্ম সম্পাদক আব্দুর রহমান, সহ-সম্পাদক হারিপ হোসেন, সমাজ কল্যাণ সম্পাদক প্রনপ দেবনাথ প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

সম্মেলনে বক্তারা বিড়ির অতিরিক্ত করারোপের বিরোধিতা করেন।কেননা অতিরিক্ত করারোপের ফলে এ শিল্পটি ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছাবে। আর এ শিল্পের সঙ্গে জড়িত হাজার হাজার বিধবা নারী, বৃদ্ধ ও পঙ্গু শ্রমিকরা বেকার হয়ে পথে বসবে।

বক্তারা বলেন, অর্থমন্ত্রী সিগারেট কোম্পানিগুলোর ব্যবসা বাড়িয়ে বিড়ি শিল্পকে ধ্বংসের নীল নকশা প্রণয়ন করছেন। সভায় বক্তারা এই দ্বিমুখী করনীতির তীব্র সমালোচনা করে অবিলম্বে তা প্রত্যাহারের আহ্বান জানান এবং এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

বিড়ির তুলে দিয়ে অর্থমন্ত্রী পুরো  বাজারটা  সস্তা সিগারেটের হাতে তুলে দিতে বদ্ধ পরিকর। হত দরিদ্র  গ্রামের শ্রমিকদের কথা না ভেবে তিনি বহুজাতিক কোম্পানির স্বার্থ রক্ষায় কাজ করছেন। তিনি বৈষম্যমূলক শুল্কনীতির মাধ্যমে বিড়ি শিল্পকে ধ্বংসের পায়তারা করছেন। তার এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নে কাজ করছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড।

ফেডারেশনের যুগ্ম সম্পাদক আব্দুর রহমান বলেন, অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত একদিকে দেশীয় বিড়ি শিল্পের ওপর অতিরিক্ত কর আরোপ করে বহুজাতিক কোম্পানি ব্রিটিশ এ্যামেরিকা টোবাকোকে সুবিধা দিচ্ছে। এনবিআর ও অর্থমন্ত্রীর  প্রত্যক্ষ মদদে একদিকে দেশের বিড়ি শিল্প ধ্বংস হচ্ছে।

অন্যদিকে ব্রিটিশ এ্যামেরিকা টোবাকোকে দেশের হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে নিয়ে যাচ্ছে। এতে দেশের বিড়ি শিল্পে নিয়োজিত প্রায় ২০ লাখ শ্রমিক বেকার হচ্ছে। আর খেটে খাওয়া  মানুষের কাছে সরকারের ভাবমুর্তী নষ্ট হচ্ছে। তাই আমাদের দাবি দেশের বিড়ি শিল্পর ওপর অর্থমন্ত্রীর এ করারোপ প্রত্যাহার করা হোক। নইলে আমরা কঠোর আন্দোলনে যেতে বাধ্য হব।

ফেডারেশনের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আমিন উদ্দিন বলেন, অর্থমন্ত্রী বিদেশী দালালদের  মন যোগাতে আমাদের পেটে লাথি মেরেছেন। আমরা আমাদের দাবি আদায়ে প্রয়োজনে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সামনে আমরণ অনশন করবো। আশা করি তার আগেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিড়ির ওপর কর কমাতে যথাযথ বিবেচনা করবেন।

তিনি অভিযোগ করে বলেন, অর্থমন্ত্রী কিন্তু তামাক তুলে দেয়ার কথা বলেননি। তিনি সিগারেট তুলে দেয়ার কথাও বলেননি। গরীব মানুষ ব্যবহার করে সেই বিড়ি শিল্প তুলে দেয়ার কথা বলেছেন তিনি। তিনি সরাসরি সিগারেটের পক্ষ নিয়েছেন। অথচ প্রধানমন্ত্রী গরীব মানুষ ব্যবহার করে বলে এই শিল্পকে সুরক্ষার তাগিদ দিয়েছেন।

এ ছাড়া প্রস্তাবিত বাজেটকে প্রত্যাখান করে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, গত ১৪ বছরে প্রতি এক হাজার বিড়িতে শুল্ক বেড়েছে ১২৬ দশমিক ৩৮  টাকা।। আর প্রস্তাবিত ২০১৭-১৮ অর্থবছরে প্রস্তাব করা হয়েছে ১৭২ দমমিক ৭২ টাকা।  ২০০৩-২০০৪ অর্থবছরে বিড়িতে হাজারে  শুল্ক ছিল ৩০ দশমিক ৯০ টাকা। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে করা করা  হয়েছে ১৯৭ দমমিক ২৮ টাকা।

 

Print Friendly, PDF & Email

Related Posts