বিডিমেট্রোনিউজ ডেস্ক ॥ আড়াই হাজার বছরের প্রাচীন সভ্যতার নিদর্শন উয়ারী বটেশ্বর ও কাপড়ের পাইকারি বাজারখ্যাত নরসিংদীর একমাত্র চিত্তবিনোদন কেন্দ্র ‘ড্রিম হলিডে পার্ক’। বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক পাশে নরসিংদী সদর উপজেলার পাঁচদোনা চৈতাবতে গড়ে উঠেছে দৃষ্টিনন্দন পার্কটি। গত পাঁচ বছর ধরেই নজর কাড়ছে বিনোদনপ্রিয় মানুষের। ছুটিতে আপনিও ঘুরে আসতে পারেন চমৎকার এই বিনোদন স্থানটি থেকে।
ড্রিম হলিডে পার্কটিকে সাজানো হয়েছে বর্ণিল সাজে। নতুন করে সংযোজন করা হয়েছে ক্যাবল কার, রোলার কোস্টার, ডেমুট্রেন। সঙ্গে রয়েছে সমুদ্রের ঢেউ ও ভূতের রাজ্য স্পট।
প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে বিন্যাসিত ড্রিম হলিডে পার্কে পাওয়া যাবে হিমালয়ের আস্বাদ। অন্যদিকে পার্ক জুড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে ২০টি জ্যান্ত ভূত! এগুলো কখনও ভয়, কখনও আনন্দে মাতিয়ে রাখে শিশু-কিশোরদের। রয়েছে ওয়েবপুল। যেখানে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে কান পাতলেই শোনা যাবে সমুদ্রের গর্জন। প্রকৃতির এক অপরূপ ছোঁয়ায় মনমাতানো পাহাড়ি ঝর্ণায় আপনি হারিয়ে যেতে পারেন।
প্রায় আড়াই হাজার শতাংশ জমির উপর প্রতিষ্ঠিত ২০১১ সালে গড়ে ওঠা পার্কটিতে ছোটদের জন্য রয়েছে বেশ কিছু রাইড। এ ছাড়াও রয়েছে অত্যাধুনিক সুইমিংপুল, এয়ার বাইসাইকেল, বাম্পারকার, সোয়ান র্বোড,ওয়াটার র্বোড, অত্যাধুনিক রোলার কোস্টার, ডেমুট্রেন, সুইং চেয়ার, স্পিডবোট, বাচ্চাদের অতিপ্রিয় নটিক্যাসেল, জাম্পিং হর্স, বসানো হয়েছে লাফার কিং সহ বিভিন্ন রাইড। পাশাপাশি তৈরি করা হয়েছে আইসপাহাড়।
আনন্দ উপভোগ করতে পার্কটিকে আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে নতুন আঙিকে প্রস্তুুত করা হয়েছে। পার্কের ভেতরে মোজাইক পাথর দিয়ে তৈরি করা হয়েছে পায়ে হাঁটার চমৎকার রাস্তা।
দর্শনাথীদের খাবারের চাহিদা মেটাতে এখানে রয়েছে অত্যাধুনিক চাইনিজ রেস্টুরেন্ট, বাংলা খাবারসহ চটপটি ফুচকা ও আইসক্রিম পার্লার। পাশাপাশি রয়েছে বিখ্যাত জামদানি হাউস। পাবেন মেয়েদের থ্রি-পিস, বেড শিট ও অন্যান্য জিনিসপত্র।
দর্শনার্থীদের বসার জন্য জায়গায় জায়গায় আধুনিকভাবে তৈরি করা হয়েছে পর্যাপ্ত খুপড়ি ঘর। বিনোদনের জন্য রয়েছে সঙ্গীতের নানা ধরনের উপকরণ। যে কেউ পুরো পরিবার নিয়ে নিশ্চিন্তে সময় কাটাতে পারেন এখানে। সকাল ১০ টা থেকে সন্ধ্যা ৭ টা পর্যন্ত প্রতিদিন খোলা থাকে এটি। পার্কে প্রবেশ করতে গুণতে হবে ২০০ টাকা।
পার্কে পিকনিক স্পট :
ড্রিম হলিডে পার্কে পিকনিক আয়োজন করতে চাইলে রয়েছে ‘মধুরিমা’ ও ‘মায়াবি’ নামের দুটি পিকনিক স্পট। শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ২ রুমের একটি বাংলোর ব্যবস্থা থাকছে পিকনিকের জন্য। এর পাশাপাশি রয়েছে দোতলা বাংলোর ব্যবস্থাও। পরিবার নিয়ে থাকার জন্য পার্কের নিজস্ব চারটি কটেজ রয়েছে। মূল্য পরিশোধ করে বিলাসবহুল কটেজে রাত্রিযাপন করতে পারবেন।
ছুটির দিনে পিকনিকের জন্য ৩০০ জনের বেশি হলে ভাড়া গুনতে হবে ৮০ হাজার টাকা। ৫০০ জনের বেশি হলে ভাড়া দিতে হবে এক লাখ ১০ হাজার টাকা। তবে কার্য দিবসে ভাড়া কিছুটা কম। অর্থাৎ ৩০০ জনের বেশি হলে ভাড়া দিতে হবে ৭৫ হাজার টাকা। আর ৫০০ জনের বেশি হলে ভাড়া দিতে হবে ৯০ হাজার টাকা। এ ছাড়া নরসিংদী শহরে একাধিক আবাসিক হোটেল রয়েছে। থাকতে পারেন সেখানেও।
পার্কের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শিল্পপতি বাবু প্রবীর কুমার সাহা বলেন, বিদেশি বানিজ্যিক পার্কের ডিজাইন ও পরিকল্পনা থেকেই এ পার্কটি নির্মাণ করা হয়েছে। এবারের ঈদ উপলক্ষেও বিভিন্ন পরিকল্পনা ও ডিজাইন সংগ্রহ করে শিশুদের জন্য নতুন নতুন রাইড সংযুক্ত করা হয়েছে।
খোলা-বন্ধের সময় সূচি: প্রতিদিন সকাল ১০ টা থেকে রাত ৭ টা পর্যন্ত খোলা থাকে। তবে সন্ধ্যা ৬ টা থেকে ৬ টা ৩০ মিনিটের পর টিকিট বিক্রি বন্ধ হয়ে যায়।
যে ভাবে যাবেন:
রাজধানী ঢাকার কমলাপুর, মহাখালী, সায়েদাবাদ ও গুলিস্তান থেকে বাসে করে যাওয়া যায়। ২০ মিনিট পরপর বাস পাবেন। আন্তঃনগর এগারসিন্দুর ও মহানগর গোধূলী ট্রেনেও যেতে পারেন। এ ছাড়া ঢাকা-চট্টগ্রামের যেকোনো লোকাল ট্রেনে যাওয়া যেতে পারে।
আন্ত:নগর ট্রেনে গেলে নরসিংদী রেলস্টেশনে নেমে সেখান থেকে বাস অথবা সিএনজিচালিত অটোরিকশায় যেতে হবে। আর লোকাল ট্রেনে গেলে নরসিংদী স্টেশন ছাড়া ঘোড়াশাল স্টেশনেও নামতে পারেন। সেখান থেকে বাসে যেতে হবে।
এ ছাড়া ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে চলাচলকারী কিশোরগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়ীয়া, সিলেট এর যে কোনো বাসে উঠলেও সরাসরি এ পার্কে পৌঁছানো যাবে। কিংবা কাঁচপুর অথবা টঙ্গী থেকে কালীগঞ্জ, ঘোড়াশাল হয়ে যাওয়া যাবে অনায়াসে।
ড্রিম হলিডে পার্কের ফোন যোগাযোগ : ৯৫৬৪০৪৬, ৯৫৭০১৪০-৪১, ৭৬৩০২২৫ মোবাইল : ০১৭১২-১৪৫৮৪৯, ০১৭২১-৪৯০৪২০।