বিডিমেট্রোনিউজ ডেস্ক ॥ রাজধানী ঢাকায় একটি ছাদ রেস্টুরেন্টে (রুফটপ রেস্টুরেন্ট) বিদেশি নাগরিকদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করেছে কর্তৃপক্ষ। এই নিষেধাজ্ঞার কথা জানিয়ে ভবনটির প্রবেশে মুখে নোটিশও দেয়া হয়েছে।
রেস্টুরেন্টে কর্তৃপক্ষ বলছে, হোলি আর্টিজান হামলার পর ভবন মালিকের চাপে তারা এই সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছেন। আর ভবন মালিক বলছেন, বিদেশিদের উপর নানা হামলার ঘটনার পর এখানেও কোনরকম অঘটন এড়াতে তিনি রেস্টুরেন্ট মালিকদের ওই অনুরোধ করেছেন।
উত্তরায় লেকের পাশে একটি পাঁচতলা ভবনের ছাদে লেক টেরেস নামের ওই রেস্টুরেন্টটি অবস্থিত। এখানে মূলত সামুদ্রিক মাছ এবং স্টেক পরিবেশন করা হয়।
রেস্টুরেন্টের নীচতলায় এবং প্রবেশ মুখে ইংরেজিতে টাঙানো নোটিশে বলা হয়েছে, ‘হোলি আর্টিজান হামলার প্রেক্ষাপট এবং ভবন মালিকের নোটিশের প্রেক্ষিতে, আমরা কোন বিদেশিকে আমাদের রেস্টুরেন্টে সেবা দিতে পারছি না। এজন্য আমরা সর্বান্ত:করণে লজ্জিত এবং ক্ষমা প্রার্থী।’
এই নোটিশের বিষয়ে রেস্টুরেন্ট ব্যবস্থাপক সোহেল রানা বলেন, হোলি আর্টিজান হামলার পর, ভবন মালিক আমাদের নিষেধ করেছে যেন এখানে বিদেশি নাগরিকদের অ্যালাউ না করা হয়। এজন্যই আমরা নোটিশটি দিয়েছি। এজন্য তারা নিজেরাও খুব লজ্জিত কিন্তু তাদের কিছু করার নেই বলে জানান।
এই রেস্টুরেন্টে প্রতিমাসে মোট গ্রাহকের মধ্যে ১৫% বিদেশি আসতেন বলে জানান তিনি। ভবনের মালিক ওয়ালিউল হাসনাত বলেন, ”গুলশানের হামলার পর সব আবাসিক এলাকা থেকে রেস্টুরেন্ট বা বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান সরিয়ে নেয়ার একটি আদেশ দিয়েছিল রাজউক। তখন আমি ওই রেস্টুরেন্টের লোকজনকে এখান থেকে সরে যেতে বললাম। কিন্তু তারা বললো এত তাড়াতাড়ি প্রতিষ্ঠিত ব্যবসা কিভাবে সরিয়ে নেবে। তখন তাদের বললাম, যতদিন তারা সরে যেতে না পারছে, ততদিন বিদেশিদের যেন এখানে অ্যালাউ (প্রবেশ) করা না হয়।”
হাসনাত বলেন, ”এটা যে লজ্জার বিষয়, তা আমিও উপলব্ধি করি। কিন্তু নিরাপত্তার কথা ভেবে আমি এটা করতে বাধ্য হয়েছি। একটা দুর্ঘটনা যদি ঘটে যায়, তখন আমি দায়ী হয়ে যাবো। এজন্য আমার নিজের দিক থেকে এই সতর্কতা নিতে বাধ্য হয়েছি। ”
রেস্টুরেন্ট কর্তৃপক্ষ বলেন , তারা এখন চেষ্টা করছেন, নোটিশটি প্রত্যাহারে ভবন মালিককে রাজি করানোর। ভবন মালিক হাসনাত বলেন, তারা চেষ্টা করছেন, এটিকে বাণিজ্যিক ভবন হিসাবে স্বীকৃতি আদায়ের। সেটা হলে হয়তো রেস্টুরেন্টটি এখানে তাদের মতো চলতে পারবে আর তারও আপত্তি থাকবে না।
ততদিন পর্যন্ত বিদেশিদের জন্য বন্ধই থাকছে লেক টেরেস।
বিবিসি