বরগুনায় পেট্রলের অবৈধ ব্যবসা রমরমা

ইফতেখার শাহীন, বরগুনা॥ বরগুনা সদর উপজেলার আনাচে কানাচে এবং পৌর শহরের প্রাণকেন্দ্রে গড়ে উঠেছে অসংখ্য অনুমোদনহীন জালানী দ্রব্য অবৈধ পেট্রলের দোকান। কিছু অসাধু ব্যবসায়ীরা দিনের পর দিন পেট্রলের এই অবৈধ রমরমা ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন বলে অভিযোগ লাইসেন্সধারী সঠিক পেট্রল ব্যবসায়ীদের ।

সূত্রে জানা যায়, বৈধভাবে একটি পেট্রলের দোকান চালাতে গেলে দরকার হয় জেলা প্রশাসকের নো-অবজেক্শন সনদ, বিস্ফোরক অধিদপ্তর থেকে সনদ এবং ট্রেড লাইসেন্স। উপরোক্ত কাগজ সংগ্রহ করে তবেইনা জ্বালানী দ্রব্য পেট্রল সংগ্রহ করা যাবে।

সরেজমিনে দেখা যায়, অধিকাংশ পেট্রল ব্যবসায়ীর নেই বৈধ কোন কাগজপত্র। তারা শুধু মাত্র ট্রেড অথবা একটি ফায়ার লাইসেন্স দিয়ে এই ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন। বরগুনা সদর উপজেলার বালিয়াতলী ইউনিয়নের পরীরখাল বাজারের জুনায়েদ এন্টারপ্রাইজ, প্রোপাইটার সাদ্দাম হোসেনের ষ্টেশনারী দোকানে রয়েছে ড্রাম ভর্তি পেট্রল। এছাড়াও তার দোকানে রয়েছে জ্বালানী গ্যাস ভর্তি সিলিন্ডার। বাজারের ওই সারিতে তার দোকানের লাগোয়া অনেক দোকানপাট রয়েছে যা হুমকী স্বরুপ। পেট্রল এবং জ্বালানী গ্যাসে যে কোন সময় ঘটে যেতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা।

এছাড়াও বরগুনা সদর উপজেলার বিভিন্ন পয়েন্টে যেমন, বরগুনা ষ্টেডিয়াম চত্বর, ইটবাড়িয়া, কদমতলা, চালিতাতলী, ফুলঝুরী, গৌরীচন্না, খাজুরতলা, বাশবুনিয়া এমনকি বরগুনা শহরের প্রাণকেন্দ্র থানা মসজিদ মার্কেট (ভাড়ানী খালের পূর্ব পাড়) এ রয়েছে অসংখ্য লাইসেন্সবিহীন অবৈধ পেট্রলের দোকান। মুদি মনোহারী, খাবার হোটেল, টিন, রড সিমেন্ট, কাপড়, ষ্টেশনারীসহ বিভিন্ন রকমের দোকানের সামনে টেবিলের উপর বিক্রির জন্য রয়েছে পানির ক্যান ভর্তি পেট্রল। যা আইনের সম্পূর্ন পরিপন্থি এবং বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম ও বিস্ফোরক আইনে দন্ডনীয় অপরাধ।

থানা মসজিদ মার্কেটে রয়েছে বাশার ষ্টোর। প্রো/ আবুল বাশার। দেখা যায়, এটা একটি মুদি মনোহারী দোকান। এই দোকানেই তিনি পেট্রল মজুদ রেখে শুধু মাত্র ফায়ার এবং ট্রেড লাইসেন্স দিয়ে পেট্রল বিক্রি করছেন। ওই সারিতেই রয়েছে ষ্টেশনারী দোকান ফেরদৌসী ষ্টোর। প্রো/ আবদুর রহমান। তার দোকানের পাশে রয়েছে একটি খাবার হোটেল। হোটেলের সামনেই দেখা যায়, চুলোয় আগুন জ্বলছে এবং আগুনের পাশেই টেবিলের উপর রয়েছে পেট্রল ভর্তি ক্যান। থানাপাড়ায় রয়েছে এফকিউ অটো। প্রো/ মোঃ শাহজাহান বিল্লাহ। তার রকমারি পার্টস এর দোকানের মধ্যেই তিনি বড় ড্রামে পেট্রল মজুদ রেখে দেদারছে ব্যবসা চালাচ্ছেন। লাইসেন্স আছে কিনা তার কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, একটি মাত্র ট্রেড লাইসেন্স আছে বাকী লাইসেন্সের জন্য কাগজপত্র জমা দিয়েছি, এখনও হাতে পাইনি। বাকী লাইসেন্স হাতে না পেয়ে যে পেট্রল বিক্রি করছেন এ অপরাধ তিনি স্বীকার করেন।

সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নজরদারি এবং কোন বাধ্যবাধকতা নেই বলে এরা সবাই দেদারছে এই অবৈধ ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন। লাইসেন্সবিহীন অবৈধভাবে পেট্রল বিক্রি করছেন, এজন্য যে দন্ডনীয় অপরাধ এসকল পেট্রল ব্যবসায়ীরা অকপটে তা স্বীকার করেন।

এ বিষয়ে বরগুনার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মোঃ নুরুজ্জামান জানান, এ সকল অবৈধ পেট্রলের দোকানগুলোর সুনির্দিষ্ট লিষ্ট তৈরি করে অবিলম্বে মোবাইল কোর্ট পরিচালনার মাধ্যমে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

Print Friendly, PDF & Email

Related Posts