বিডিমেট্রোনিউজ ॥ বনশ্রীর গৃহকর্মী লাইলীর গলায় ও মাথায় আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। তবে এটা হত্যা নাকি আত্মহত্যা তা নিশ্চিত হওয়া যাবে ময়নাতদন্তের চূড়ান্ত প্রতিবেদনের পর।একই সঙ্গে ভিসেরাও সংগ্রহ করা হয়েছে। শুক্রবার (৫ আগস্ট) বিকাল চারটার দিকে ঢাকা মেডিক্যালের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান ডাক্তার সোহেল মাহমুদ এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, ‘লাইলীর মৃতদেহের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। প্রাথমিকভাবে লাশের মাথায় ও গলায় আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। তাকে ধর্ষণ করা হয়েছিল কিনা তা নিশ্চিত হওয়ার জন্য মৃতদেহ থেকে আলামত সংগ্রহ করে পরীক্ষাগারে পাঠানো হয়েছে। প্রতিবেদনগুলো পাওয়ার পর আজকের রিপোর্টের সঙ্গে পর্যালোচনা করে বলা যাবে যে, এটি হত্যা নাকি আত্মহত্যা।’ তারপর চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।
ময়নাতদন্তের আগে মৃত লাইলীর সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করেন খিলগাঁও থানা উপ-পরিদর্শক (এসআই) মঞ্জুর রহমান। প্রতিবেদনে তিনি উল্লেখ করেন, মৃত লাইলীর গলায় ডান দিকে অর্ধ চন্দ্রাকৃতি দাগ আছে। এ ছাড়া শরীরের কোথায় দাগ দেখা যায়নি।
মৃত নারীর দেবর জামাল হোসেন জানান ময়নাতদন্তের পরে মৃত লাইলীর মরদেহ দেশের বাড়ি কুড়িগ্রামে নিয়ে যাবেন। সেখানেই দাফন করা হবে বলে পরিবার সূত্রে জানা যায়।
উল্লেখ্য, শুক্রবার (৪ আগস্ট) দুপুরে বনশ্রী জি ব্লকের ৪ নম্বর রোডের ১৪ নম্বর বাড়ি থেকে লাইলী (২৫) নামের এক গৃহকর্মীর ঝুলন্ত লাশ পাওয়া যায়। এ তথ্য এলাকায় ছড়িয়ে যাওয়ার পরে ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন স্থানীয়রা। এ ঘটনাকে হত্যাকাণ্ড দাবি করে গৃহকর্তার ফাঁসির দাবিতে আন্দোলনে নামেন তারা।
এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে শুক্রবার রাতে গৃহকর্মী লাইলীর (২৫) স্বামীর ভাই শহিদুল ইসলাম বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলার পর গৃহকর্তা মঈনুদ্দিন, গৃহকর্ত্রী শাহানা বেগম ও বাড়ির কেয়ারটেকার কামালকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
গৃহকর্তার দাবি, শুক্রবার সকালে বাড়ির কাজ করতে এসে দরজা লাগিয়ে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলে আত্মহত্যা করেছে লাইলী। কিন্তু এ দাবিকে নাকচ করেছেন ওই ফ্লাটের তৃতীয় তলায় আরেক গৃহকর্মী, যিনি নিজেকে লাইলীর স্বামীর ভাইয়ের স্ত্রী বলে পরিচয় দিয়েছেন। নুরুন্নাহার নামের এই গৃহকর্মী লাইলীর ঝুলন্ত লাশ দেখার পর প্রথম হত্যাকাণ্ড বলে সন্দেহ করেন। এ তথ্য ছড়িয়ে যাওয়ার পর এলাকা উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।
গৃহকর্তা মঈনুদ্দিন ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে এর আগেও এই বাসাতেই গৃহকর্মী নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।