বন্যাদুর্গত উত্তরাঞ্চলে ১১৭ কোটি টাকার পুনর্বাসন প্রকল্প

বিডিমেট্রোনিউজ ডেস্ক ॥ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, উত্তরাঞ্চলের বন্যাদুর্গত জনরগণের পুনর্বাসনে তাঁর সরকার ১১৭ কোটি টাকার পুনর্বাসন প্রকল্প শুরু করেছে।
এই কর্মসূচির আওতায় আগামী বোরো ফসল ঘরে তোলার আগ পর্যন্ত কৃষকরা নানা সুবিধা পাবেন। উত্তরবঙ্গের ছয় জেলার ৬ লাখ কৃষক আগামী ফসল তোলার আগে পর্যন্ত বোরো ফসলের ৫ কেজি করে বীজ, ২০ কেজি ডিএপি, ৫ কেজি করে এমওপি এবং প্রত্যেক কৃষককে ১ হাজার করে টাকা দেয়া হবে।

একইসঙ্গে সরকার কৃষকদের সহযোগিতার জন্য ৫৮ কোটি ৭৭ লাখ টাকার একটি প্রণোদনা প্রকল্পও গ্রহণ করেছে। যাতে একজন কৃষক ১০ থেকে ২০ কেজি ডিএপি সার এবং ৫ কেজি থেকে ১৫ কেজি এমওপি সার পাবেন। কাজেই কৃষকদের আর সার এবং বীজ নিয়ে ভোগান্তি পোহাতে হবে না।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, যে কৃষকরা ধান ব্যতীত অন্য ফসল উৎপাদন করতে চান এমন স্বল্প সংখ্যক কৃষকের মাঝে বিভিন্ন জাতের বীজ, ডাল এবং অন্যান্য শস্য ও দেয়া হবে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শনিবার সকালে গাইবান্ধার গেবিন্দগঞ্জ উপজেলা পরিষদ চত্বরে সাধারণ জনগণের মাঝে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণকালে একথা বলেন।

তিনি বলেন, ধানের চারা এই আগষ্ট মাসের ২৪ তারিখ থেকে দেয়া শুরু হবে এবং উত্তরবঙ্গের বন্যা দুর্গত এলাকায় তা বিতরণ চলবে, যাতে পানি নেমে যাবার সাথে সাথেই কৃষকেরা চাষবাস শুরু করতে পারেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই ধানের চারা বর্তমানে সরকার নিয়ন্ত্রিত দেশের সকল কৃষি গবেষণা এবং উন্নয়ন কেন্দ্রগুলোতে উৎপাদন করা হচ্ছে। প্রায় এক হাজার ভাসমান বীজতলা তৈরী করে এই চারা উৎপাদনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এক একজন কৃষক ১ কেজি করে গম এবং দুই কেজি যব বীজ, এক কেজি সরিষা বীজ, ১ কেজি বাদাম বীজ এবং বিভিন্ন রকমের ডাল চাষের জন্য দেয়া হবে। যাতে কৃষকদের যার যা পছন্দ তা তারা মূল ফসলের পরে চাষ করতে পারেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কোন জমি অনাবাদি পড়ে থাকবে না। একটা মানুষও না খেয়ে মারা যাবে না। আমরা সকলের জন্য খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছি।

অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী, দুর্যোগ ব্যাবস্থাপনা, পূণর্বাসন ও ত্রাণ মন্ত্রী মোফাজ্জ্বল হোসেন চৌধূরী মায়া বীর বিক্রম, খাদ্যমন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী এবং স্থানীয় সংসদ সদস্য আবুল কালাম বক্তৃতা করেন। পানি সম্পদ মন্ত্রী ব্যারিষ্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব:) তারিক আহমেদ সিদ্দিক, হুইপ মাহবুব আরা গিনি উপস্থিত ছিলেন।

পরে প্রধানমন্ত্রী, গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা কনফারেন্স হলে জেলা এবং উপজেলার উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে বক্তৃতা করেন। বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী বন্যার পানি নেমে যাবার সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন রোগের প্রাদুর্ভাব সম্পর্কে জেলা-উপজেলার সরকারি কর্মকর্তাদের সচেতন করেন।প্রয়োজনে রাস্তা কেটে হলেও বন্যার পানি বের করে দেয়ার আহবান জানান প্রধানমন্ত্রী এবং ঐ সমস্ত স্থানে পরে সেতু বা কালভার্ট নির্মাণ করে দেয়ার জন্য বলেন।

পানি উন্নয়ন বোর্ডকে নদী খনন অব্যাহত রাখার আহবান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, নদী খনন করে পুণরায় ভরে যাওয়া সব চ্যানেল উন্মুক্ত করে দিতে হবে। এ সময় তিনি বালু সংগ্রহের জন্য সবসময় একইস্থান ব্যবহার না করে ঘুরে ঘুরে সংগ্রহের আহবান জানান।

কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী, পানি সম্পদ মন্ত্রী ব্যারিষ্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, হুইপ মাহবুব আরা গিনি, মুখ্য সচিব ড. কামাল আব্দুল নাসের চৌধুরী, স্থানীয় সংসদ সদস্য এবং রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

Print Friendly, PDF & Email

Related Posts