মিরপুরের ‘জঙ্গি আস্তানায়’ সাত জনের খুলি

র‌্যাবের ধারণা, ওই সাতজন হলেন সন্দেহভাজন জেএমবি সদস্য আবদুল্লাহ, তার দুই স্ত্রী নাসরিন ও ফাতেমা, দুই ছেলে ওমর ও ওসামা, যাদের বয়স তিন থেকে নয় বছর এবং আবদুল্লাহর দুই কর্মচারী, যাদের নাম জানা যায়নি।

রাজধানীর মিরপুরে দারুস এলাকায় ‘জঙ্গি আস্তানা’য় সাতটি মাথার খুলি (স্কাল) পড়ে আছে বলে জানিয়েছেন র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‍্যাব) মহাপরিচালক (ডিজি) বেনজীর আহমেদ।

আজ বুধবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে সাংবাদিকদের এ বিষয়টি নিশ্চিত করেন র‍্যাব ডিজি।

বেনজীর আহমেদ বলেন, গতকাল মঙ্গলবার রাতে পৌনে ১০টার দিকে বাড়িটির পঞ্চমতলায় ভয়াবহ বিস্ফোরণে রাসায়নিক পদার্থ ব্যবহার করা হয়েছিল। তিনটি বিস্ফোরণের ফলে পঞ্চম তলায় আগুন ধরে যায়। এরপর সেই ফ্লোরের দু-তিন ফুট এলাকা গর্ত হয়ে যায়। সেটা দিয়ে রাসায়নিক পদার্থ চারতলায় পড়ে আগুন ধরে যায়। বিস্ফোরণের কারণে ভবনটির গ্লাস ফেটে চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। সকাল থেকেই ভবনটিতে ফায়ার সার্ভিস, বোমা নিষ্ক্রিয়কারী দল কাজ করেছে। পঞ্চম তলার ওই ফ্ল্যাটে ৫৫ থেকে ৬০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা এখনো আছে। তবে চতুর্থ তলায় পানি দিয়ে শীতল করার চেষ্টা করা হচ্ছে। পঞ্চম তলায় পানি ব্যবহার করা যাচ্ছে না। কারণ এতে আলামত নষ্ট হতে পারে।

ব্রিফিংয়ে বেনজীর জানান, জঙ্গি আবদুল্লাহ ২০০৫ সাল থেকে জেএমবির জঙ্গি তৎপরতার সঙ্গে সম্পৃক্ত। সংগঠনে তাঁর পদ ছিল আল আনসার। তাঁর কাজ ছিল বিভিন্ন জঙ্গিকে আশ্রয় দেওয়া, অর্থসহায়তা করা। বাসাটি জঙ্গি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা হতো। নিহত জঙ্গি নেতা সারওয়ার, তামিমসহ জঙ্গিরা এই বাসায় থাকত।

আজ সকালে পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) এ কে এম শহীদুল হক ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যান। তিনি অভিযানের দায়িত্বরত কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেন। তবে এ ব্যাপারে তিনি সাংবাদিকদের সঙ্গে কোনো কথা বলেননি।

টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার এলেঙ্গার মসন্দি এলাকার একটি বাড়ি থেকে গত সোমবার রাতে জঙ্গি সন্দেহে দুই ভাইকে গ্রেপ্তার করে র‍্যাব। তাদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতেই ‘ফলোআপ’ হিসেবে মিরপুরে এ অভিযান চালায় র‍্যাব। যে বাড়িটিতে অভিযান চালায় এর নম্বর ২/৩/বি। মালিক টিঅ্যান্ডটির কর্মকর্তা মোহাম্মদ আজাদ। বাড়িটির নাম ‘কমলপ্রভা’। স্ত্রী, এক ছেলে ও এক মেয়ে নিয়ে আজাদ বাড়ির দ্বিতীয় তলায় থাকেন।

গতকাল মঙ্গলবার দিনভর আবদুল্লাহকে আত্মসমর্পণের আহ্বান জানানো হয়। দুপুরে ‘জঙ্গি’ আবদুল্লাহর বোন মেহেরুন্নেসা বাড়ি থেকে বেরিয়ে এসে র‍্যাবের কাছে আত্মসমর্পণ করেন। তাঁকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করে র‍্যাব। এ সময় ওই বাড়ির ২৩টি ফ্ল্যাট থেকে ৬৫ বাসিন্দাকে সরিয়ে নেওয়া হয়।

র‍্যাব কর্মকর্তা মুফতি মাহমুদ সাংবাদিকদের জানান, ‘জঙ্গিরা আত্মসমর্পণ না করে নিজেরাই ওই ভবনে বোমা বিস্ফোরণ ঘটায়। এতে চার র‍্যাব সদস্য আহত হন।

Print Friendly, PDF & Email

Related Posts