এবার ডিসিসি কর্মকর্তাকে পেটাল পুলিশ

বিডি মেট্রোনিউজ ব্যাংককর্মীর পর এবার ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের এক পরিদর্শককে ‘মারধরের’ অভিযোগ উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধে। ঘটনার শিকার ডিএসসিসির পরিচ্ছন্নতা পরিদর্শক বিকাশ চন্দ্র দাশকে (৪০) ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিউরো সার্জারি ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়েছে।

শুক্রবার ভোরে যাত্রাবাড়ি থানার এসআই আরশাদ হোসেন আকাশসহ কয়েকজন পুলিশ সদস্য মীরহাজীরবাগ এলাকায় বিকাশকে মারধর করে বলে তার ভাই চন্দন দাসের অভিযোগ। তিনি বলেন, সকালে দয়াগঞ্জের বাসা থেকে  পরিচ্ছন্নতা কাজের তদারকি করতে মীরহাজীরবাগ এলাকায় যান বিকাশ।“এ সময় এসআই আকাশসহ কয়েকজন পুলিশ তাকে থামিয়ে মারধর করে। এতে বিকাশের মাথায় আঘাত লাগে।”

বিকাশকে ঢাকা মেডিকেলের ২০১ নম্বর ওয়ার্ডের ১১ নম্বর ‘বেডে’ রাখা হয়েছে। সিটি স্ক্যানে মাথায় কোনো সমস্যা ধরা পড়েনি। তবে তার পায়ে জখমের চিহ্ন রয়েছে বলে জানিয়েছেন দায়িত্বরত একজন চিকিৎসক।

পুরো ঘটনাকে ‘ভুল বোঝাবুঝি’ হিসেবে দেখানোর চেষ্টা করেন ওয়ারী জোনের জ্যেষ্ঠ সহকারী কমিশনার নুরুল আমিন। তিনি বলেন, সাধারণ পোশাকে থাকা পুলিশের দল মোটরসাইকেলআরোহী বিকাশকে থামার সংকেত দিয়েছিল। কিন্তু বিকাশ তাদের ‘ছিনতাইকারী ভেবে’ বাইক ঘুরিয়ে চলে যাওয়ার চেষ্টা করতে গিয়ে পড়ে যান। এ সময় তিনি আহত হন।

যাত্রাবাড়ির ওসি অবনী শংকর কর বলছেন, পুলিশের ওই দলটি গঠন করা হয়েছে ‘ছিনতাইকারী প্রতিরোধের’ জন্য। এ কারণে ভোরে তারা সেখানে সাধারণ পোশাকে দায়িত্ব পালন করছিলেন।“বিকাশ মোটর সাইকেল থেকে পড়ে গেলে এসআই আকাশসহ অন্যরা তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। বিকাশ নিজের পরিচয় দিলে আকাশ তাকে ‘স্যার’ সম্বোধন করেছেন, ‘সরি’ও বলেছেন।”

ওসি বলেন, খবর পেয়ে বিকাশের স্বজনরা ঘটনাস্থলে যান। পরে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সেখানে গেলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।“বিকাশকে আমি নিজে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে গেছি।”

পুলিশ কর্মকর্তারা মারধরের কথা স্বীকার না করলেও প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজন জানিয়েছেন, পুলিশের সংকেত পেয়ে বিকাশ মোটরসাইকেল থামিয়েছিলেন। এসআই আকাশ তখন বিকাশের মাথায় লাঠি দিয়ে আঘাত করেন।

ছয় দিন আগে মোহাম্মদপুর থানার এসআই মাসুদ শিকদারের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তা গোলাম রাব্বীকে মধ্যরাতে আটকে নির্যাতনের অভিযোগ ওঠে।

এসআই মাসুদ মোহাম্মদপুরের জেনেভাক্যাম্পের কাছে রাব্বীকে আটক করেন এবং থানায় না নিয়ে প্রায় আড়াই ঘণ্টা গাড়িতে রেখে ‘ইয়াবা ব্যবসায়ী’ বানানোর ভয় দেখিয়ে টাকা আদায়ের চেষ্টা করেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

পুলিশের গাড়িতে থাকার সময় একইভাবে পথচারীদের আটকে পুলিশ সদস্যদের অর্থ আদায় করতে দেখেছেন বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন রাব্বী। ওই ঘটনার পর এসআই মাসুদকে প্রত্যাহার করা হয়েছে; একটি তদন্ত কমিটিও হয়েছে। তবে ঢাকার পুলিশ কমিশনার মো. আছাদুজ্জামান মিয়া বলেছেন, কোনো পুলিশ সদস্যের ব্যক্তিগত অপরাধের দায় বাহিনী নেবে না।

Print Friendly, PDF & Email

Related Posts