বিডি মেট্রোনিউজ ॥ বলিউডের গুলশান কুমার হত্যা মামলার আসামি আবদুর রউফ ওরফে দাউদ মার্চেন্টকে ভারতে ফিরিয়ে দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল।
ভারতের কারাগারে বন্দি বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সালাহ উদ্দিন আহমেদের বদলে দাউদকে ফেরত দেওয়া হচ্ছে- এমন গুঞ্জনের মধ্যেই মন্ত্রীর এই বক্তব্য এলো। অবশ্য দাউদের বদলে বাংলাদেশ কাউকে ফেরত পাচ্ছে কি না- সে প্রসঙ্গটি কৌশলে এড়িয়ে গেছেন মন্ত্রী।
দাউদ মার্চেন্ট দুবাইয়ে থাকা ভারতীয় ‘মাফিয়া ডন’ দাউদ ইব্রাহিমের ঘনিষ্ঠ সহযোগী হিসাবে পরিচিত। অবৈধভাবে বাংলাদেশে ঢুকে ধরা পরার পর গত সাত বছর ধরে তিনি বাংলাদেশে।
২০০৯ সালে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় গ্রেপ্তারের পর ঢাকার গোয়েন্দা পুলিশকে দাউদ মার্চেন্ট জানায়, এনকাউন্টারের ভয়ে ভারত থেকে পালিয়ে এসে বাংলাদেশকে নিরাপদ আশ্রয় হিসাবে বেছে নিয়েছিলেন। ২০১৪ সালে বাংলাদেশের কাশিমপুরের ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে বের হওয়ার পর ফের আটক হন দাউদ মার্চেন্ট।
অবৈধভাবে বাংলাদেশে ঢুকে ধরা পরে পাঁচ বছর পর ২০১৪ সালের ১৯ নভেম্বর তিনি আদালত থেকে জামিন পান এবং সেই নথিপত্র কারাগারে পৌঁছায় ২৯ নভেম্বর। যাচাই-বাছাই শেষে কারাগার থেকে বের হওয়ার পরপরই ৪৫ বছর বয়সী দাউদ মার্চেন্টকে আটক করে ঢাকা গোয়েন্দা পুলিশ।
জানা যায়, মুম্বাইয়ের সঙ্গীত প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান টি-সিরিজের মালিক গুলশান কুমারকে ১৯৯৭ সালের ১২ অগাস্ট আন্ধেরি এলাকার একটি মন্দির থেকে বেরিয়ে আসার সময় গুলি চালিয়ে হত্যা করা হয়। এ হত্যা মামলায় সন্দেহভাজন ভাড়াটে খুনি দাউদ মার্চেন্টকে গ্রেপ্তারের পর ২০০২ সালে তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয় আদালত।
তবে এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেন দাউদ। কিন্তু ২০০৯ সালে ১৪ দিনের পারোলে মুক্তি পাওয়ার পর পালিয়ে যান তিনি। ওই বছরের ২৮ মে ভারত সীমান্তবর্তী ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে এক সহযোগীসহ তাকে গ্রেপ্তার করে বাংলাদেশের পুলিশ। পাসপোর্ট আইনে একটি মামলাও হয় তার বিরুদ্ধে।
সে সময় পুলিশ বলছিল, দাউদ অবৈধভাবে বাংলাদেশে ঢুকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় অবস্থান করছিলেন। ভারতের অপরাধ জগতের আলোচিত ডন দাউদ ইব্রাহিম বাংলাদেশে নিজের কর্মকাণ্ড বিস্তারের জন্য দাউদ মার্চেন্টকে এ দেশে পাঠান।
২০১১ সালের সেপ্টেম্বরে দাউদ মার্চেন্টকেও ফেরত চায় ভারত। ইউনাইটেড লিবারেশন ফ্রন্ট অব আসামের (উলফা) নেতা অনুপ চেটিয়া সহ গুলশান কুমার হত্যা মামলার আসামি দাউদ মার্চেন্টকেও ফেরত চায় ভারত।
আসামি পলাতক থাকায় গুলশান কুমার হত্যা মামলা এখন বোম্বে হাইকোর্টে ঝুলে আছে। দাউদ মার্চেন্টকে হস্তান্তরের বিষয়টি দ্রুততর করতে বাংলাদেশ সরকারকে অনুরোধ জানায় ভারত সরকার।
তখন প্রকাশিত এক খবরে বলা হয়, ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পি চিদাম্বরম গত জুলাই মাসে বাংলাদেশ সফরের সময় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুনের সঙ্গে দাউদের হস্তান্তরের ব্যাপারে আলোচনা করেন।