বিডিমেট্রোনিউজ ডেস্ক ॥ রাজধানীর পশ্চিম নাখালপাড়ার রুবি ভিলায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানে নিহত তিন । এই তিনজনই জেএমবির সদস্য বলে জানিয়েছে র্যাব।
এ বাহিনীর গণমাধ্যম শাখার পরিচালক মুফতি মাহমুদ খান শুক্রবার বিকালে অভিযান শেষ হওয়ার কথা জানিয়ে সাংবাদিকদের বলন, ওই বাড়ির অন্য সব বাসিন্দাই নিরাপদে আছেন। নিহত তিনজনের বয়স ২৫ থেকে ২৭ এর মধ্যে। তাদের নাম-পরিচয় এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে জানতে পেরেছি তারা জেএমবি সদস্য।
মুফতি মাহমুদ বলেন, জঙ্গিদের বিষয়ে তথ্য পাওয়ার জন্য ওই বাড়ির কেয়ারটেকার রুবেলকে তারা জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন। সে বলেছে, জাহিদ নামের এক যুবক গত ২৮ ডিসেম্বর এসে পাঁচ তলার একটি কক্ষ ভাড়া নিতে চায়। জাহিদ তাকে বলেছিল, সে একটি বেসরকারি কোম্পানিতে চাকরি করে। দুই ভাইকে নিয়ে ওই বাসায় সে থাকবে।
এরপর ৪ জানুয়ারি ‘জাহিদ’ পরিচয় দেওয়া সেই যুবক বাসায় ওঠেন। বাকি দুজন ওঠেন ৮ জানুয়ারি। পঞ্চম তলার ওই ফ্ল্যাটের একটি কক্ষে তারা তিনজন থাকতেন। বাকি দুটি কক্ষে আগে থেকেই আরও চারজন থাকতেন।
র্যাব কর্মকর্তা মুফতি মাহমুদ বলেন, ওই ঘরে জাহিদের ছবিসহ দুটি জাতীয় পরিচয়পত্র পাওয়া গেছে। তার একটিতে নামের জায়গায় জাহিদ লেখা থাকলেও অন্যটিতে লেখা রয়েছে সজীব। জাহিদ খুব ভোরে বাড়ি থেকে বের হয়ে অনেক রাতে ফিরত। অন্য দুজন কখন কি করত সে বিষয়ে কেউ কিছু বলতে পারেনি।
মুফতি মাহমুদ বলেন, ওই বাড়িতে আস্তানা গড়ে জঙ্গিরা গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় হামলাসহ নাশকতার পরিকল্পনা করলে বলে গোয়েন্দা তথ্য পাওয়ার পরই র্যাব সেখানে অভিযান চালায়।
তিনি জানান, পঞ্চম ও ষষ্ঠ তলার চারটি ফ্ল্যাটের মধ্যে তিনটিই মেস হিসেবে ভাড়া দেওয়া হয়েছিল। ওই তিন বাসায় ২১/২২ জন থাকত। আর পুরো ভবনে দশটি ফ্ল্যাটে ৬০ জনের বেশি মানুষের বসবাস।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে কয়েকশ গজ দূরে পুরনো এমপি হোস্টেলের পেছনে ওই বাড়ি বৃহস্পতিবার গভীর রাতে ঘিরে ফেলেন র্যাব সদস্যরা। ভোরে এলাকাবাসীর ঘুম ভাঙে তুমুল গোলাগুলির শব্দে।
পরে সকালে পঞ্চম তলার এক মেসে তিন তরুণের লাশ পাওয়ার কথা জানান র্যাবের মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ। সেই সঙ্গে সেখানে কয়েকটি ইম্প্রোভাইজড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস (আইইডি), বিস্ফোরক জেল ও পিস্তল পাওয়ার কথা জানান তিনি।
মুফতি মাহমুদ বলেন, একটি বিস্ফোরক রাখা ছিল গ্যাস বর্নারের ওপর। তাতে তাদের মনে হয়েছে, চুলার ওপর রেখে আগুন জ্বালিয়ে বড় ধরনের বিস্ফোরণ ঘটাতে চেয়েছিল জঙ্গিরা। কিন্তু অভিযানের শুরুতেই র্যাব ওই বাড়ির গ্যাস সংযোগ বন্ধ করে দেওয়ায় তা আর সম্ভব হয়নি।
জঙ্গিরা গ্যাস ছেড়ে দিয়ে ওইভাবে বিস্ফোরণ ঘটাতে পারলে পুরো ভবনের বাসিন্দাদের বড় ধরনের ক্ষতি হতে পারত বলে জানান তিনি।