তিনটি কবিতা ॥ এস এম মাসুদ রানা (রবি)

এই নগরে

 

আমি হেঁটে চলি একা
পিছনে পরে থাকে কত শত ঘটনা আর কাল প্রবাহ,
কখনও তোমার পাইনা দেখা
বুকের মধ্যে কেবল হাজার বছরের প্রাচীন আগ্নেয়গিরির দাহ।
মানুষদের নিঃস্ব করে
জলের দামে ভালবাসা হয়ে নিলাম,
শীতের পাতা ঝরার দিনে
মনে পড়ে জীবনে কি চেয়েছিলাম?
প্রেম এই নগরে হেরে যায়
যেখানে ইতিহাস বিজ্ঞান প্রযুক্তির কাছে,
তবুও প্রেম রয়ে যায়
জীবনানন্দের বনলতা সেনের কাছে,
চারিদিকে দেখি শুধু যুদ্ধের দামামা বাজে,
জানিনা এসব মানব কল্যাণের লাগে কোন কাজে?

জীবনকে যদি করি প্রেম দিয়ে শুদ্ধ ,
প্রয়োজন নেই আর দেশে দেশে যুদ্ধ।

 

মুক্তির সনদের নীল খাম

 

দেখেছি শুধু রক্ত, বুলেট, আগুন আর ভয়াল থাবা
মুক্তির মন্দিরের সোপান তলে,
আমরা পেয়েছি লাল সবুজের পতাকা
যে ইতিহাস লেখা অশ্রু জলে ।
জনতার কোলাহলের এই কারাগার,
পরাধীনতার ধূলিতে বিস্তৃত আঁধার,
লাখো শহীদের জীবন দিয়ে
এনেছি আমরা বিজয় ছিনিয়ে।

নির্জনে একা বসে ভাবি
আসলে পেয়েছি কি স্বাধীনতা আমি?
স্বাধীন দেশে নিরাপদ নই
স্বাধীনতা খুঁজি,স্বাধীনতা কই?
অন্নহীন মানুষ আর ছিন্নমূল দাস,
ক্ষুধার জালায় সকলের এই কারাবাস।
দূরে কোথাও বঙ্গবন্ধুর ডাক শুনি
“এবারের সংগ্রাম, মুক্তির সংগ্রাম”

দুয়ারে দাঁড়িয়ে আমি অপেক্ষায়ে থাকি
কখন আসবে মুক্তির সনদের নীল খাম।

 

নির্জন বিমিশ্র চাঁদ

 

তুমি এসে দেখে যাও বুড়িগঙ্গা নদীটির তীরে,
তোমার ছায়া দেখা যায়ে না দূষণের জলে।
এই শহরে কারা থাকে? দূষণ নিয়ে শরীরে-
থাকিবার সাধ নেই তবু থাকে মায়াবীর মতো জাদুবলে।

গভীর ঘুম থেকে গাড়ি ঘোড়ার শব্দ দূষণে জেগে উঠলাম আবার,
তাকিয়ে দেখলাম দূষণ পাপ অপরাধে ভোরে গেছে শহর আমার।
আমি অসহায় জীব -ভাষা জানা নেই প্রতিবাদ করার,
তাই ভেবেছি কোনোদিন জাগবো না আমি— কোনোদিন জাগবো না আর।

এই সব কিছুর সাক্ষী নির্জন বিমিশ্র চাঁদ,
আর শহরের নর-নারী,পশু-পাখি, দিন-রাত।

Print Friendly, PDF & Email

Related Posts