আঁখি জ্বলজ্বল সদা হাস্যজ্জ্বোল
তাম্বুরা বিলাসী মুখাবয়ব;
কাঁচাপাকা গোঁফ দাড়ি এক স্তুপ
খদ্দরের পাঞ্জাবীতে সুঢপ।
কাঁধে ঝোলা থলি তাঁর কথা বলি
সাহিত্যের নিরলস পথচারী।
তিনি আমার আপনার সবার
প্রিয় কবি আসাদ চৌধুরী।
যুদ্ধের ডামাডোলে মন্বন্তরে কালে
চন্দ্রদ্বীপের আকাশের চাঁদা;
স্বর্গ থেকে মর্ত্যে এলেন
বড়ো হিসসার শাহজাদা।
বাংলা সাহিত্যের বরপুত্র তিনি
উলানিয়ার করতলে মুক্তো।
ধান নদী খাল শষ্যের আল
তাঁকে গড়েছে পাকা-পোক্ত!
মেঘনা, কালাবদর, কীর্তনখোলা,
বু্ড়িগঙ্গা, ধলেশ্বরীর জলে;
মন খুলে সাঁতার কেটেছেন
তিতাস, কালনীর দু’কুলে!
বিউটি বোর্ডিংয়ে আড্ডায় মেতেছেন,
মাতিয়েছেন বাংলা একাডেমি।
টক শোতে টিভি মাতিয়েছেন
মনোগ্রাহী আবৃত্তির কপালে চুমি!
যুগপৎ তিনি দৈশিক ও বৈশ্বিক
ষাটের দশকের কবি।
মায়া মমতার তুলির আঁচড়ে
প্রানবন্ত নানান ছবি!
সর্বপ্লাবী স্বপ্নদ্রষ্টা তিনি
কবিতায় আঁকেন ছবি।
দুঃস্বপ্নে মরা আধমরাকে জাগান
স্বপ্ন দেখান কবি।
সহজ সরল বেশ প্রাঞ্জল
তাঁর কবিতার গাঁথুনি।
কান পেতে শুনি লুমুম্বার গান
ধীরেনের করুণ কাহিনী।
অলস দুপুরে আয়েশি মেজাজে
রসসিক্ত রসের ফোয়ারা!
কে আর দিবে চনমনে বাহার
তবক দেওয়া পান ছাড়া।
অন্টারিও হ্রদের জলে মিশে
চলে গেলেন আশ্বিনের শেষে।
বাংলা কাঁদলো শিউলী ঝরলো
হাসির মুখটা উঠলো ভেসে।
অপাঙ্গে জল করে ছলছল
স্মৃতিগুলো মনের মুকুরে।
কবিতা রইলো হাসিটাও রইলো
তাম্বুরালাল মুখটা অন্তরে।