চাঁদপুরের হরিণা ফেরিঘাট এখন…

অমরেশ দত্ত জয়: চাঁদপুরের হরিণা ফেরিঘাটে এখন আর গাড়ির চাপ নেই। এতে করে এ রুটে সরকারের রাজস্ব আদায় একেবারেই কমে গেছে। অথচ এই ঘাটের দীর্ঘ যানজট লাঘবের জন্যই আনা হয়েছিলো একসঙ্গে অনেক গাড়ি পারাপারে ক্ষমতাসম্পন্ন রো রো ফেরি।

হরিণা ফেরিঘাটে গিয়ে দেখা যায়, লোকসমাগম কমায় আগের চেয়ে কমেছে ঘাটের দোকানপাট। পার্কিং ইয়ার্ডে নেই গাড়ি। অথচ কিছুদিন আগেও ঘণ্টার পর ঘণ্টা এই ফেরিঘাটে গাড়ির সিরিয়াল লেগে থাকতো।

দৃশ্যপট বদলেছে বিআইডব্লিউটিসি’র গাড়ির লোড মাপার স্কেলেও। পুরানো স্কেলটি কাজ না করায় অনেকটা অনুমান করে নেওয়া হচ্ছে গাড়ির স্কেলচার্জ। এতে করে শুভঙ্করের ফাঁকি হচ্ছে কিনা তাও এখন ক্ষতিয়ে দেখার দাবি উঠেছে।

ফেরি কাকলীর মাষ্টার মো. আজিজ ও লস্কর সেলিম মুন্সি জানান, এখানে ভাষা সৈনিক ডা. গোলাম মাওলা নামের যে রো রো ফেরি আছে। এই একটি ফেরিতেই অনেক গাড়ি পার হতে পারে। তাই ৮/৯ টি ফেরি হরিণা ফেরিঘাটের জন্য হলেও সিফ্টিং ভিত্তিতে ৩/৪ টি ফেরি গাড়ি পারাপার করছে। এতে রাজস্ব আদায় কিছুটা কমেছে।

ফেরিঘাটের ভাড়া আদায়কারী জাহিদ হোসেন জানান, এ বছরের জুলাই মাস পর্যন্ত প্রতিদিন ফেরিতে পার হওয়া যানবাহন থেকে ভাড়া আদায় হয়েছে প্রায় ৬ থেকে শুরু করে ৮ লাখ টাকা। কিন্তু আগস্ট মাস থেকে সেই ভাড়া অর্ধেকেরও নীচে নেমে এখন আদায় হচ্ছে ৩ থেকে সাড়ে ৩ লাখ টাকা। যাতে করে ইজারাদার ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ লোকসানে রয়েছে।

কথা হয় ফেরিঘাটের কুলি মুন্না, কুদ্দুস ও শিপন খানের সঙ্গে। তারা জানান, আগে প্রতিদিন তাদের প্রত্যেকের আয় ছিল ৭/৮শ থেকে ১২শ টাকা। এখন সেখানে ৩-৪শ টাকা আয় করতেও কষ্ট হয়। এভাবে চলতে থাকলে এ পেশা বদলের সম্ভাবনা রয়েছে।

এসব বিষয়ে বিআইডব্লিউটিসি চাঁদপুরের হরিণা ফেরিঘাটের ম্যানেজার ফয়সাল বলেন, গাড়ির ওজন মাপার স্কেলটি বেশ কিছুদিন ত্রুটির কারণে বন্ধ। তবে এটি পুরাতন হওয়ায় দ্রুত নতুন স্কেল আনার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তাছাড়া রো রো ফেরি একত্রে অনেক গাড়ি পরিবহনে সক্ষম হলেও অপেক্ষমান গাড়ির সংখ্যা কম। শুধু রাজস্ব আদায়ের উদ্দেশেই রো রো ফেরি এ ঘাটে আনা হয়নি বরং চালকদের অপেক্ষার ভোগান্তি কমাতেও এটি আনা হয়েছে। সেক্ষেত্রে পরিকল্পনা অনুযায়ী রো রো ফেরি এঘাটে আনার বিষয়টি অনেকটাই সফল উদ্যোগ। তবে এ রুটে চলাচলকারী গাড়ি এখন অনেকটাই কমে গেছে।

Print Friendly, PDF & Email

Related Posts