মেট্রো নিউজ : আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের (আইসিটি) প্রসিকিউটর ব্যরিস্টার তুরিন আফরোজ বলেছেন, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল (আইএ) ধৃষ্টতা ছাড়িয়ে গেছে। কেননা, তারা মুক্তিযোদ্ধাদের বিচার চেয়েছে। শুক্রবার জাতীয় প্রেসক্লাবে কনফারেন্স রুমে মুক্তিযুদ্ধ ও যুদ্ধাপরাধ বিচারের বিরুদ্ধে আইএ-এর প্রচারণার বিরুদ্ধে সেক্টর কমান্ডার্স ফোরাম-মুক্তিযুদ্ধ’৭১ আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
তুরিন আফরোজ বলেন, আইএ যখন মানবাধিকারের কথা বলে, তখন তারা কেবল যুদ্ধাপরাধীদের মানুষ মনে করে। ৩০ লাখ শহীদ আর ধর্ষণের শিকার ৫ লাখ নারী, তাদের তারা মানুষ বলে মনে করে না। যদি মনে করতো তবে কেন সেসব বিষয়ে কোনো বিবৃতি নেই। তাদের জন্য তো কোনো জোরালো বক্তব্যও দেখতে পাইনা।
তিনি বলেন, অ্যামনেস্টি তাদের ধৃষ্টতা ছাড়িয়ে গেছে। তারা মুক্তিযোদ্ধাদের বিচার চেয়েছে। যারা আত্ম নিয়ন্ত্রণের অধিকার প্রতিষ্ঠায় জীবন প্রাণ বাজি রেখেছেন। এটি একটি স্বীকৃত অধিকার। এজন্য তাদের অপরাধ কি, তা কিন্তু বোধগম নয়। কাজেই তারা বিভ্রান্তিমূলক বক্তব্য দিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে প্রভাবান্বিত করার চেষ্টা করছে। সেটি একটি জঘন্য প্রয়াস।
আইএ-এর একপেশে ও একচোখা মানবাধিকার চর্চার প্রতিবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, তারপরও যদি তারা মনে করেন, মানবাধিকার লঙ্ঘন হচ্ছে-তবে আদালত খোলা রয়েছে, আইন খোলা রয়েছে। স্বাধীন বিচার ব্যবস্থার মাধ্যমে মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার করছি তার আর প্রমাণ দেওয়ার প্রয়োজন নেই। আন্তর্জাতিক মহল আজকে স্বীকার করে এ বিচারের মাধ্যমে বাংলাদেশ নির্দশন স্থাপন করেছে।
সংবাদ সম্মেলনে আইএ-এর সেক্রেটারি জেনারেলকে তাদের দেওয়া বিবৃতি প্রত্যাহারের দাবিতে একটি চিঠি দেওয়া হয়েছে বলে জানান আয়োজক সংগঠনের সেক্রেটারি জেনারেল হারুণ হাবীব। তিনি বলেন, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল স্বাধীন সার্বভৌম দেশের বিচার ব্যবস্থার উপর হস্তক্ষেপ করেছে। কেননা, তারা মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারাধীন বিষয়ের উপর বিবৃতি দিয়েছে।
আইএ’র এ সেক্রেটারি জেনারেল সলীল শেঠীর কাছে লেখা ওই চিঠিতে বলা হয়েছে-অ্যামনেস্টি বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের ইতিহাসের প্রতি শ্রদ্ধাশীল নয়। যেখানে ৩০ লাখ মানুষ প্রাণ দিয়েছেন এবং ৫ লাখ নারী ধর্ষণের শিকার হয়েছেন। পশ্চিমা বিশ্বের দেখানো পথেই মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার করেছে। কেননা, তারাও নুরেমবার্গ ট্রায়াল ও টোকিও ট্রায়াল করেছে। তাই আইএ এর বিবৃতি প্রত্যাহার অথবা সংশোধন করার দাবিও জানানো হয়েছে চিঠিতে।
এ সময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ফোরামের ভাইস চেয়ারম্যান সেক্টর কমান্ডার লে. কর্নেল আবু ওসমান চৌধুরী,সিনিয়র সহ সভাপতি লে.জেনারেল এম হারুন-অর রশীদ বীর প্রতীক, সহ সভাপতি আনোয়ার উল আলম শহীদ, সাংগঠনিক সম্পাদক মেজর জেনারেল এ.কে মোহাম্মদ আলী শিকদার, নির্বাহী সদস্য (জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি) মুহাম্মদ শফিকুর রহমান, সদস্য ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজ (প্রসিকিউটর, আইসিটি), যুব বিষয়ক সম্পাদক, মাকসুম সৌরভ।