ঠাকুরগাঁওয়ের পাইকারি বাজারে সুস্বাদু আম্রপালি ও সূর্যপুরী পাকা আম বিক্রি হচ্ছে শুধুমাত্র ৮ টাকা কেজি দরে। এতে করে বিপাকে পড়েছেন স্থানীয় আম ব্যবসায়ীরা।
জানা গেছে, গতবছর যেখানে জনপ্রিয় সূর্যপুরী আম প্রতি মণ বিক্রি হয়েছে ১৬০০ থেকে ১৭০০ টাকা পর্যন্ত। এ বছর ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা মণ দরে আম নেওয়ার মতো ক্রেতাও পাচ্ছেন না এই জেলার আম ব্যবসায়ীরা। ফলে বিপুল লোকসানের সম্মুখীন হতে হচ্ছে ব্যবসায়ীদের।
এই জেলার আমের বৃহত্তম পাইকারি বাজার রোড যুবসংসদ মাঠ। প্রতিবছর এই বাজার থেকেই আমের যোগান যায় রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায়। তবে এবছর বিপাকে পড়েছেন আম ব্যবসায়ীরা। আম বিক্রি করতে না পেরে কমদামে আমের চালান ছেড়ে দিয়েও মিলছে না রেহাই। সবশেষে পচে গিয়ে নষ্ট হচ্ছে মণকে মণ আম। তাই শুধুমাত্র ৮ থেকে ১০ টাকা কেজি দর পেলেই পাকা আম বিক্রি করে দিচ্ছেন তারা।
আমের উৎপাদন বেশি হলেও কম ক্রেতা সমাগম হওয়ায় বাজারের দরপতন বলে মনে করছে কৃষি বিভাগ। ঠাকুরগাঁও কৃষি অধিদপ্তরের তথ্যমতে, ঠাকুরগাঁও জেলায় এই মৌসুমে প্রায় ৪ হাজার ৭শ হেক্টর জমিতে আমের চাষ হয়েছে। যা থেকে ১৪ টন আম উৎপাদনের লক্ষমাত্রা ধরা হয়। তবে এই লক্ষমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে বলে মনে করছে কৃষি বিভাগ।
আম ব্যবসায়ীরা বলছেন, বাজারে প্রতিদিন পর্যাপ্ত আম আমদানি হলেও তেমন ক্রেতার সমাগম নেই। এক দুইদিন অবিক্রিত থাকলেই নরম হয়ে পেকে যাচ্ছে আমগুলো। পাকা আম বাইরের ক্রেতারা আর নিতে চাননা, তাই কোনো মতে ৭ থেকে ৮ টাকা কেজি দরে বিক্রি করতে হচ্ছে।
জেলার রোড বাজারে আশা আম ব্যবসায়ী রফিকুল বলেন, সকালে ২০ ক্রেট আম নিয়ে এসেছি। দুপুর পর্যন্ত একটাও বিক্রি করতে পারিনি। আজ আর বড় পাটি পাওয়া যাবে না। কাল সকালে বিক্রি করতে না পারলে এই আমগুলো নষ্ট হয়ে যাবে।
তবে পাইকারি বাজারে দাম কম হলেও খুচরা বাজারে এর সুফল মিলছে না বলে অভিযোগ সাধারণ ক্রেতাদের। খুচরা বাজারে নিয়মিত ৩০ থেকে ৩৫ টাকা কেজি দরেই বিক্রি হচ্ছে সূর্যপুরী, আম্রপালিসহ স্থানীয় বিভিন্ন জাতের আম।
ঠাকুরগাঁও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক সিরাজুল ইসলাম জানান, ঠাকুরগাঁওয়ে এবছর আমের গাছগুলোতে প্রচুর মুকুল এসেছিলো। বড় কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ না আসায় আমের ব্যপক উৎপাদন হয়েছে। তাই এবার আমের বাজার দরটা কম। এছাড়াও ঢাকার বড় বড় আমের বাজারগুলোতে প্রান্তিক চাষিরা সহজে নিজেরা আম পাঠাতে পারলে হয়তো তারা কিছুটা ভালো দাম পেতো।