অবশেষে ৩৫০ সিসির মোটরসাইকেলের অনুমতি

দীর্ঘদিনের অপেক্ষার পর মোটরবাইক উৎসাহীদের জন্য সুখবর এসেছে। সরকার অবশেষে সড়কে বড় আকারের মোটরসাইকেল চলার অনুমতি দিয়েছে। এখন ঊর্ধ্বে ৩৫০ সিসি পর্যন্ত ইঞ্জিনযুক্ত বাইক চলতে পারবে দেশের সড়কগুলোতে।

তবে আগামি বছরের জুলাই মাসের আগে রয়েল এনফিল্ডের মতো ব্র্যান্ডগুলো দেশে আসছে না।

গত ৭ সেপ্টেম্বর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বৈঠকে এ ধরনের মোটরসাইকেল উৎপাদন ও বিতরণের অনুমোদন দেওয়া হয়। যার ফলে অবসান ঘটে মোটরসাইকেল নির্মাতা ও সরকারের মধ্যে কয়েক বছর ধরে চলতে থাকা আলোচনার।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, ‘আমরা ৩৫০ সিসি মোটরসাইকেল উৎপাদন ও বিতরণের অনুমতি দেব। এখন থেকে এসব উচ্চ ইঞ্জিন সক্ষমতাযুক্ত মোটরসাইকেল বৈধভাবে রাস্তায় চলাচল করতে পারবে।’

বর্তমানে ১৬৫ সিসির বেশি ইঞ্জিনযুক্ত মোটরসাইকেল স্থানীয় বাজারের জন্য তৈরি বা আমদানি করা যায় না। তবে মোটরসাইকেল শিল্প উন্নয়ন নীতিমালা ২০১৮ অনুযায়ী নির্মাতারা ৫০০ সিসি পর্যন্ত ইঞ্জিনযুক্ত মোটরসাইকেল রপ্তানি করতে পারেন।

বাংলাদেশ ট্রেড ও ট্যারিফ কমিশন সিসিসীমাকে ৩৫০ এ উন্নীত করার সুপারিশ করে।

সরকার এ মুহূর্তে ঊর্ধ্বে ১৬৫ সিসি পর্যন্ত ইঞ্জিনযুক্ত মোটরসাইকেল সড়কে চলার অনুমতি দেয়।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরাও উচ্চ ইঞ্জিন সক্ষমতাসম্পন্ন বাইক পাবেন, যাতে অপরাধীরা তাদের থেকে পালিয়ে যেতে না পারেন।’

বাইকগুলো বাংলাদেশের সড়কের উপযোগী হবে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘বাইকের ইঞ্জিন সক্ষমতার সঙ্গে এর গতিবেগের মধ্যে কোনো সম্পর্ক নেই।’

বৈঠকে নিরাপত্তা সেবা বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্পোরেশনের (বিআরটিসি) চেয়ারম্যান, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার, পুলিশ সদর দপ্তরের প্রতিনিধিরা ও ইফাদ গ্রুপের চেয়ারম্যান উপস্থিত ছিলেন।

ইফাদ গ্রুপ ২০২১ সালে রয়্যাল এনফিল্ডের সঙ্গে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের পর থেকে এই পরিবর্তনের দাবি জানিয়ে আসছিল।

রয়েল এনফিল্ড বাইকের সবচেয়ে কম সক্ষমতার ইঞ্জিনের মান ৩৪৬ সিসি।

ইফাদ গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান তাসকিন আহমেদ বলেন, ‘তারা ২০২৪ সালের জুলাই থেকে রয়্যাল এনফিল্ড বুলেট, মিটিওর, হান্টার ও ক্লাসিক নামে ৪টি মডেল বাংলাদেশের বাজারে বাণিজ্যিক উৎপাদন ও বিতরণ শুরু করতে পারবেন বলে আশা করছেন।’

তিনি জানান, রয়্যাল এনফিল্ড এখন পর্যন্ত উৎপাদনের জন্য ১৫০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছে এবং তা ২৫০ কোটি টাকায় উন্নীত হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

তাসকিন বলেন, বাণিজ্যিক উৎপাদনে যাওয়ার পথে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমতিই একমাত্র বাধা ছিল। শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকেও অনুমতি পাওয়া গেছে বলে জানান তিনি।

৩ নির্মাতা সরকারকে চিঠি লিখে রাস্তায় উচ্চ সক্ষমতার ইঞ্জিনযুক্ত বাইক চলাচলের অনুমতি দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছিল।

সুজুকি বাইক নির্মাতা র‍্যানকন মোটরবাইকস লিমিটেড ও রানার অটোমোবাইলস জানায়, তারা উচ্চ সিসির বাইক চলাচলের ওপর আরোপিত বিধিনিষেধের প্রত্যাহার চায়।

গত ৫ ডিসেম্বর কাওয়াসাকি বাংলাদেশে তাদের ব্যবসার সম্প্রসারণের জন্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কাছে সিসিসীমা ২৫০ সিসিতে উন্নীত করার আবেদন জানায়।

এই অনুমোদন এমন সময় এলো, যখন সড়কে অননুমোদিত পরিবহণের সংখ্যা বড় আকারে বেড়েছে, বিশেষত মোটরসাইকেল ও থ্রি হুইলারের ক্ষেত্রে। যার ফলে গত কয়েক বছরে দুর্ঘটনা ও হতাহতের সংখ্যা অনেক বেড়েছে।

তৌহিদ/ডি

Print Friendly, PDF & Email

Related Posts