রাজধানী ঢাকায় কয়েকঘণ্টার বৃষ্টিতে বিভিন্ন সড়কে পানি জমে দুর্ভোগে পড়েছেন নগরবাসী। সাপ্তাহিক ছুটির দিন হওয়ার দুর্ভোগ কম হলেও পরীক্ষার্থী ও বিভিন্ন কাজে বেরুনো মানুষেরা জলাবদ্ধতায় পড়েন বিড়ম্বনায়। আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, সকাল ৬টা থেকে ৯ টা পর্যন্ত এই তিন ঘণ্টা বা ১৮০ মিনিটে মোট ৬০ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে ঢাকায়।
শুক্রবার (১২ জুলাই) ভোর থেকে শুরু হওয়া মুষলধারার বৃষ্টিতে রাজধানীর গ্রিন রোড, মিরপুর, ধানমন্ডি, বনানী, মোহাম্মদপুর, মালিবাগ-মগবাজার, বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা, বাংলামোটর, বাড্ডা, আজিমপুর, শান্তিনগর এলাকার সড়কে কোমর পানি জমে গেছে। এর মধ্যে ধানমন্ডি ২৭, গ্রিন রোড, মিরপুর ও মগবাজার এলাকার প্রধান সড়কসহ প্রায় সব অলিগলিতে হাঁটু সমান পানি। এতে একদিকে যেমন দুর্ভোগে পড়েছেন পথচারী, অন্যদিকে প্রাইভেটকার ও সিএনজিচালিত অটোরিকশার ইঞ্জিনে পানি ঢুকে রাস্তার মাঝে আটকে থাকতে দেখা গেছে।
এদিকে দেশের ২০ জেলার ওপর দিয়ে সর্বোচ্চ ৬০ কিলোমিটার বেগে ঝড়সহ বজ্রবৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। শুক্রবার (১২ জুলাই) দুপুর ১টা পর্যন্ত দেশের অভ্যন্তরীণ নদীবন্দরগুলোর জন্য দেওয়া এক সতর্কবার্তায় এ আশঙ্কার কথা জানানো হয়েছে।
একইসঙ্গে বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে বলে জানানো হয়েছে। এসব এলাকার নদীবন্দরগুলোকে ১ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। সন্ধ্যা পর্যন্ত দেশের সব বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেইসঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও ভারি থেকে অতি ভারি বর্ষণ হতে পারে। বৃষ্টিপাতের প্রবণতা কয়েক দিন অব্যাহত থাকতে পারে বলেও জানায় আবহাওয়া অফিস।
এদিকে আজ সাপ্তাহিক সরকারি ছুটির দিন হলেও বেসরকারি চাকরিজীবী কিংবা খেটে খাওয়া মানুষ যারা জীবিকার টানে ঘরের বাইরে বের হয়েছেন, তারা পড়েছেন সবচেয়ে দুর্ভোগে। তবে সব ছাপিয়ে বেশি দুর্ভোগে পড়তে হয়েছে ১৮তম শিক্ষক নিবন্ধনের লিখিত পরীক্ষায় অংশ নেওয়া প্রার্থীদের। সকালের বৃষ্টিতে যানবাহন স্বল্পতায় তাদের যেমন বিপাকে পড়তে হয়েছে। আবার পরীক্ষা শেষে বের হয়ে পড়তে হচ্ছে জলাবদ্ধতার মধ্যে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, সারা দেশে আজ আরও বৃষ্টি হতে পারে। আগামীকাল শনিবার থেকে বৃষ্টি আবার কমে আসতে পারে।
গতকাল বৃহস্পতিবার দেশের সবচেয়ে বেশি বৃষ্টি হয় কক্সবাজারে। ৩০৯ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে সৈকত শহরে। কক্সবাজারে ভারি বৃষ্টির কারণে পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটেছে। এতে নারী ও শিশু মিলিয়ে চারজনের মৃত্যু হয়েছে।
এছাড়া চট্টগ্রামের সন্দ্বীপে ২১৯ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। একইসাথে চট্টগ্রাম ও পার্বত্য চট্টগ্রাম এলাকায় পাহাড় ধসের সতর্কতা জারি করেছে। এ ছাড়া সিলেটসহ উত্তরবঙ্গে নতুন করে বন্যার আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে।