বিশেষ প্রতিনিধি : মানিকগঞ্জে সাবেক জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট গোলাম মহিউদ্দিনের ইশারায় মুছে ফেলা হলো মানিকগঞ্জের জাবরা শহীদ স্মরণিকা বালিকা বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা সমাজসেবক আলহাজ্ব ডা. আক্তার উদ্দিনের নাম। এ ন্যাক্কারজনক ঘটনার সাথে মমিন খান নামে একজন মুক্তিযোদ্ধা জড়িত বলে শিক্ষার্থীদের অভিযোগ।
সূত্র জানায়, ১৯৭১ সালে যুদ্ধ বিধ্বস্ত বাংলাদেশে ক্ষতিগ্রস্ত হয় দেশের অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। ঐ সময় সমাজসেবক আলহাজ্ব ডা. আক্তার উদ্দিন ও মুক্তিযোদ্ধা মনসুর আলমের যৌথ প্রচেষ্টায় জাবরা শহীদ স্মরণিকা উচ্চ বালিকা বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হয়। স্কুলটি দীর্ঘ ৫০ বছর ধরে চলেছিলো ভালভাবেই। ২০২৩ সালের প্রথম ভাগে মনসুর আলমের ভাই মুক্তিযোদ্ধা মমিন খান স্কুলের সভাপতি হয়েই ষড়যন্ত্রের জাল বুনেন বলে অভিযোগ।
অভিযোগকারীরা জানায়, স্কুলের প্রতিষ্ঠাতার নাম থেকে আলহাজ্ব আক্তার উদ্দিনকে মুছে ফেলতে প্রথমে স্কুলে রক্ষিত সকল নথিপত্র পুড়িয়ে ফেলা হয়। ভেঙ্গে ফেলা হয় স্কুলের প্রধান শিক্ষকের কক্ষ থেকে আক্তার উদ্দিনের ছবিও। স্কুলের ফটকে দুই প্রতিষ্ঠাতার মধ্যে নিজের ভাইয়ের নাম রেখে মুছে দেয়া হয় আক্তার উদ্দিনের নাম। এসব কার্যকলাপে ছাত্রীদের মধ্যে চরম অসন্তোষ ও ক্ষোভ দেখা যায়। দেখা যায় এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিদের মধ্যেও। তারা ধিক্কার জানায়। আক্তার উদ্দিনের পরিবারের পক্ষ থেকে জোরালো প্রতিবাদ জানানো হয়। মমিন খানকেও জানানো হয় স্কুলের প্রতিষ্ঠাতার পরিবার থেকে। কে, কারা কি কারণে মুছে দিল আক্তার উদ্দিনের নাম জানতে চাইলে মমিন খান উত্তেজিত হয়ে বলেন, আমার যা ইচ্ছে তাই করবো। তোমার আব্বা ছিল পাকিস্তান সেনাবাহিনীর পক্ষের শক্তি। এই কারণে নাম বাদ দেয়া হয়েছে।
পরিবারের পক্ষ থেকে শরনাপন্ন হয় জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট গোলাম মহিউদ্দিনের কাছে। তিনিও বলেন, রাজাকারের নাম শহীদ স্মরণিকা স্কুলে শোভা পায় না। এতদিন যে ছিল এটাই তোমাদের ভাগ্য। এখানে উল্লেখ্য যে, মমিন খান ও গোলাম মহিউদ্দিন দুজনই ছিলেন আওয়ামী লীগ রাজনীতির সাথে জড়িত। যার জন্য অন্যায়ের পক্ষেই অবস্থান নেন গোলাম মহিউদ্দিন। বর্তমান প্রেক্ষাপটে আওয়ামী লীগের শেখ হাসিনা সরকারের পতন হয়েছে।
এলাকাবাসীর প্রাণের দাবি স্কুলটিতে প্রতিষ্ঠাতাকালীন সভাপতি আলহাজ্ব আক্তার উদ্দিন নাম যেন অনতিবিলম্বে মূল জায়গায় পূর্বের মতো প্রতিষ্ঠিত করা হয়। এ ব্যাপারে তারা বর্তমান সরকারের দায়িত্বশীলদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।