বিডি মেট্রোনিউজ ।। মহান বিজয়ের ৪৪ বছর পূর্তিতে যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা, রাজনীতিক, সামরিক-বেসামরিক কর্মকর্তা, বিদেশি কূটনীতিক, ব্যবসায়ী প্রতিনিধি, সাংবাদিকসহ সমাজের নানা পেশার মানুষের পদচারণায় মুখর ছিল বঙ্গভবন। বাংলাদেশের অভ্যূদয়ের বার্ষিকীতে বুধবার বরাবরের মতো সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ, যা পরিণত হয় মিলন মেলায়।
বরেণ্য শিল্পীদের দেশাত্মবোধক ও লোকগান, শিশুশিল্পী আর সশস্ত্র বাহিনীর বাদক দলের সংগীতের মূর্চ্ছনা এই আয়োজনের স্বাতন্ত্র এনে দেয়। রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অনুষ্ঠানে সবার সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন। বিকেল পৌনে ৪টায় স্ত্রী রাশিদা খানমকে সঙ্গে নিয়ে অনুষ্ঠানস্থল বঙ্গভবনের মাঠে আসেন রাষ্ট্রপতি। এর কিছুক্ষণ আগে অনুষ্ঠানস্থলে আসেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
রাষ্ট্রপতি ও তার স্ত্রী মঞ্চে আসার সঙ্গে সঙ্গে শুরু হয় জাতীয় সংগীত। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কুশল বিনিময়ের পর রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা, বীরশ্রেষ্ঠদের পরিবারের সদস্যসহ আমন্ত্রিত অতিথিদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। রাষ্ট্রপতি এবং প্রধানমন্ত্রী যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের শারীরিক অবস্থার খোঁজ-খবর নেন এবং তাদের সার্বিক সহায়তার আশ্বাস দেন। তারা ভারত, শ্রীলংকা ও মালদ্বীপের ন্যাশনাল ক্যাডেট কোরের সদস্যদের সঙ্গেও কুশল বিনিময় করেন।
অনুষ্ঠান মাঠের ভিভিআইপি এনক্লোজারে বিজয় দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী কেক কাটেন। কেক কাটার পর তারা মন্ত্রিপরিষদের সদস্য, বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত, বিদেশি অতিথি, সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি, সংসদ সদস্য, তিন বাহিনীর প্রধানসহ সমারিক-বেসামরিক কর্মকর্তা, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি ও আমন্ত্রিত অতিথিদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।
বঙ্গভবনের এই অনুষ্ঠানে ছিলেন জাতীয় সংসদের স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী, প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা, প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদ। মন্ত্রীদের মধ্যে ছিলেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, বিমানমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন, নৌমন্ত্রী শাজাহান খান, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, গণপূর্ত মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, ভূমিমন্ত্রী শামসুর রহমান শরীফ, পানি সম্পদ মন্ত্রী আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, প্রধানমন্ত্রীর তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সোবাহান চৌধুরী, ভূমি প্রতিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী, যুব ও ক্রীড়া উপমন্ত্রী আরিফ খান জয় প্রমুখ।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী রকিবউদ্দিন আহমদ, সরকারি কর্ম কমিশনের চেয়ারম্যান ইকরাম আহমেদও অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
সিপিবি সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম, কৃষক-শ্রমিক-জনতা লীগের সভাপতি কাদের সিদ্দিকী, প্রবীণ আইনজীবী ড. কামাল হোসেন, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আনিসুল হক, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ফরাস উদ্দিন বিজয় দিবসের সংবর্ধনায় যোগ দেন।
কূটনীতিকদের মধ্যে ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত মার্শা বার্নিকাট, মিশরের রাষ্ট্রদূত ও ডিপ্লোম্যাটিক কোরের ডিন মাহমুদ ইজ্জত, রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত আলেকজান্ডার এ নিকোলেভ এবং ভারতের বিদায়ী রাষ্ট্রদূত পঙ্কজ শরণ। এছাড়া কাতার, সৌদি আরব, ইরান, ডেনমার্কসহ বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকরা অনুষ্ঠানে আসেন।
শিল্পী রফিকুল আলম, শাকিলা জাফর, কিশোর দাস, সেলিনা আক্তার চুমকি, ফকির আলমগীর অনুষ্ঠানে গান গেয়ে শোনান। এছাড়া শিশু একাডেমির শিশু শিল্পী এবং ঢাকা সাংষ্কৃতিক দলের শিল্পীরা সংগীত পরিবেশন করেন।