বিডি মেট্রোনিউজ || বাংলা একাডেমির ৩৮তম বার্ষিক সাধারণ সভা শনিবার বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত হয়। সভা শুরু হয় সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘সুরের ধারা’র শিল্পীদের সমবেত কণ্ঠে জাতীয় সংগীত পরিবেশন এবং পবিত্র ধর্মগ্রন্থ থেকে পাঠের মধ্য দিয়ে ।
এরপর দেশের বিভিন্ন ক্ষেত্রের প্রয়াত গুণী ব্যক্তিত্বদের স্মরণে শোকপ্রস্তাব পাঠ করা হয় এবং তাঁদের স্মৃতির প্রতি সম্মান জানিয়ে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। সভায় বাংলা একাডেমি পরিচালিত চারটি পুরস্কার এবং দেশের বিভিন্ন ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ৭ জন বিশিষ্ট ব্যক্তিকে বাংলা একাডেমি সম্মানসূচক ফেলোশিপ ২০১৫ প্রদান করা হয়। সাধারণ সভায় সভাপতিত্ব করেন বাংলা একাডেমির সভাপতি ইমেরিটাস অধ্যাপক আনিসুজ্জামান।
বাংলা কবিতায় বিশেষ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ কবি মোহাম্মদ রফিক-কে মযহারুল ইসলাম কবিতাপুরস্কার ২০১৫, বাংলা কবিতায় বিশেষ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ কবি কায়সুল হক-কে সা’দত আলী আখন্দ সাহিত্য পুরস্কার ২০১৫, বিজ্ঞানসাহিত্যে অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ অধ্যাপক অজয় রায়কে মেহের কবীর বিজ্ঞানসাহিত্য পুরস্কার ২০১৪ এবং বিবর্তনের পথে ইতিহাসের বাঁকে গ্রন্থের জন্য বিজ্ঞানলেখক আসিফকে হালীমা-শরফুদ্দীন বিজ্ঞান-লেখক পুরস্কার ১৪২০-২১ প্রদান করা হয়।
কবি মোহাম্মদ রফিক ও অধ্যাপক অজয় রায়কে তাঁদের প্রাপ্য পুরস্কার মূল্য হিসেবে একলক্ষ টাকা, কায়সুল হককে পঞ্চাশ হাজার টাকা এবং আসিফকে ত্রিশ হাজার টাকার চেক প্রদান করা হয়।
বাংলা একাডেমি ফেলোশিপ ২০১৫ প্রাপ্তরা হচ্ছেন : স্যার ফজলে হাসান আবেদ, ড. মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন, সাংবাদিক আবেদ খান, অধ্যাপক অনুপম সেন, মহফুজা আনাম, শিল্পী পাপিয়া সারোয়ার এবং অধ্যাপক স্বপন আদনান।
মাহফুজ আনাম বিদেশে অবস্থান করায় তার পক্ষে ভ্রাতৃবধূ ফেরদৌসী আনাম এবং পাপিয়া সারোয়ার বিদেশে অবস্থান করায় তার পক্ষে স্বামী সারোয়ার এ আলম ফেলোশিপ সম্মাননা গ্রহণ করেন। পুরস্কার এবং ফেলোশিপপ্রাপ্তদের হাতে পুরস্কারের অর্থমূল্য, সম্মাননাপত্র, সম্মাননা-স্মারক ও ফুলেল শুভেচ্ছা তুলে দেন বাংলা একাডেমির সভাপতি অধ্যাপক আনিসুজ্জামান এবং মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খান।
সভায় সারাদেশ থেকে সাধারণ সভায় সারাদেশ থেকে বাংলা একাডেমির ফেলো, জীবনসদস্য এবং সদস্যসহ প্রায় দেড় হাজার বিশিষ্টজন অংশগ্রহণ করেন। সভায় ২৬ ডিসেম্বর ২০১৪ তারিখে অনুষ্ঠিত ৩৭তম বার্ষিক সাধারণ সভার কার্যবিবরণী সারাদেশ দেশ থেকে আগত একাডেমির ফেলো, জীবনসদস্য ও সদস্যদের সম্মতিক্রমে অনুমোদন ঘোষণা করেন বার্ষিক সাধারণ সভা ২০১৫ এবং বাংলা একাডেমির সভাপতি অধ্যাপক আনিসুজ্জামান।
বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খান ২০১৪-২০১৫ সালের বার্ষিক প্রতিবেদন উপস্থাপন করে বলেন, ‘আমরা ঐতিহ্যের বিস্তার ঘটিয়ে আধুনিকতার চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করে বুদ্ধিবৃত্তিক চর্চাকেন্দ্র হিসেবে বাংলা একাডেমিকে এক নতুন অবস্থানে উন্নীত করার প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছি। ইতিমধ্যে একাডেমির গৃহীত গবেষণা ও উন্নয়ন কার্যক্রম দেশবিদেশের বিদ্বৎসমাজের মনোযোগ আকর্ষণ করেছে।’
তিনি বলেন, ‘বাংলা একাডেমির সার্বিক অগ্রযাত্রায় আমরা যেমন সরকারের সহায়তা পেয়ে আসছি তেমনি একাডেমির সদস্য এবং শুভার্থীদের আন্তরিক সমর্থন আমাদের ভবিষ্যৎ পথচলায় সহায়ক হবে।’
একাডেমির সচিব মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন ২০১৫-২০১৬ সালের বাজেট উপস্থাপন করেন।
এরপর একাডেমির সদস্যবৃন্দ বার্ষিক প্রতিবেদন ও বাজেট সম্পর্কে সাধারণ আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন। একাডেমির মহাপরিচালক সদস্যদের উত্থাপিত বিভিন্ন প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে বক্তব্য প্রদান করেন।
সভাপতির ভাষণে ইমেরিটাস অধ্যাপক আনিসুজ্জামান বলেন, ‘এবারের বার্ষিক সাধারণ সভায় সারাদেশ থেকে একাডেমির সদস্যরা অংশ নিয়েছেন। তাঁদের উত্থাপিত প্রস্তাব নিয়ে সভায় আলোচনা হয়েছে। সবার মিলিত প্রচেষ্টায় বাংলা একাডেমি সামনের দিকে এগিয়ে যাবে এটাই আমাদের প্রত্যাশা।’
সাধারণ সভার কার্যক্রম সঞ্চালনা করেন বাংলা একাডেমির পরিচালক শাহিদা খাতুন।
একাডেমির উপপরিচালক ড. মোঃ শাহাদাৎ হোসেন প্রেরিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।