বিডি মেট্রোনিউজ ডেস্ক || কেন্দ্র দখল, এজেন্টদের বের করে দেওয়াসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ তুলে চট্টগ্রামের তিন পৌরসভায় বিএনপির তিনজন এবং বরগুনায় আওয়ামী লীগের প্রার্থীসহ মোট ২৩ মেয়র পদপ্রার্থী ভোট থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন। বুধবার সকাল ৮টায় ভোট শুরুর পর থেকে তাদের ভোট বর্জনের ঘোষণা আসে।
সকাল থেকে বিভিন্ন পৌরসভায় কেন্দ্র দখল করে ব্যালটে সিল মেরে বাক্স ভরার অভিযোগ করেছেন প্রার্থীরা। চট্টগ্রামে সংঘর্ষে নিহত হয়েছেন একজন।
চট্টগ্রাম : চট্টগ্রামের সন্দ্বীপের পৌরসভার বিএনপি প্রার্থী আজমত উল্লাহ বাহাদুর, রাউজানের আবদুল্লাহ আল হাসান ও রাঙ্গুনিয়ার মো. হেলাল উদ্দিন খান ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থীর বিরুদ্ধে কেন্দ্র দখল ও এজেন্টদের বের করে দেওয়া অভিযোগ করে নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেন।
বরগুনা : আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষের পর প্রশাসনের বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ তুলে বরগুনা পৌরসভায় আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী মো. কামরুল আহসান মহারাজ নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন।
সকালে ভোট শুরুর দেড় ঘণ্টার মধ্যে বরগুনা পৌর এলাকার গগন মেমোরিয়াল মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে আওয়ামী লীগের মেয়রপ্রার্থীর পক্ষে সিল মারার সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে নির্বাচনী কর্মকর্তাসহ অন্তত ১০ জন আহত হন।
জামালপুর : আওয়ামী লীগ প্রার্থীর লোকেরা কেন্দ্রে ভোটারদের ঢুকতে না দিয়ে জাল ভোট দিচ্ছে অভিযোগ তুলে জামালপুর পৌরসভায় জাতীয় পার্টির খন্দকার হাফিজুর রহমান বাদশা ও দেওয়ানগঞ্জ পৌরসভায় আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী নুরুন্নবী অপু নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন।
লক্ষ্মীপুর : পৌরসভায় কারচুপি ও এজেন্টদের মারধরের অভিযোগ এনে লক্ষ্মীপুরের রায়পুর পৌরসভায় নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন বিএনপি প্রার্থী এবিএম জিলানি। ধানের শীষের এজেন্টদের ভোটকেন্দ্র থেকে বের করে দিয়ে অবাধে ব্যালট পেপারে সিল মারা এবং ভোটোরদের ভোট দিতে বাধা দেওয়া হয় অভিযোগ করেন তিনি।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া : কেন্দ্র থেকে এজেন্টদের বের করে দেওয়া ও আগে থেকে ব্যালটে সিল মেরে রাখা হচ্ছে অভিযোগ তুলে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া পৌরসভায় ভোট শুরুর চার ঘণ্টার মধ্যে বিএনপির প্রার্থী মো. মন্তাজ মিয়া, স্বতন্ত্র প্রার্থী সৈয়দ মশিউর রমান বাবুল ও সোহেল ভূইয়া নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেন।
টাঙ্গাইল : ক্ষমতাসীন দলের কর্মীরা প্রকাশে ভোট দিতে বাধ্যকরা, এজেন্টদের বের করে দেওয়া, কেন্দ্র দখল এবং দলীয় সমর্থকদের মারধর করার অভিযোগ এনে টাঙ্গাইলের মধুপুর পৌরসভায় বিএনপির প্রার্থী শহীদুল ইসলাম সরকার শহীদ ও ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী হারুন অর রশিদ নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন।
সিরাজগঞ্জ : আওয়ামী লীগের প্রার্থী হালিমুল হক মিরুর লোকজন কেন্দ্র নিয়ন্ত্রণে নিয়ে এজেন্টদের বের করে দিয়ে নৌকায় ভোট দিতে বাধ্য করছে অভিযোগ তুলে সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী ভিপি রহিম নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিয়েছে।
ভোলা : নির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগ তুলে ভোলা পৌরসভায় ইসলামি শাসনতন্ত্র আন্দোলনের মেয়র প্রার্থী আতাউর রহমান মোমতাজি নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন। নির্বাচন বর্জনের বিষয়টি লিখিতভাবে কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছেন বলেও জানান তিনি।
ঢাকা : ঢাকার ধামরাই পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী মেয়র প্রার্থী আব্দুস সাত্তার নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন, কোনো চাপে নয়, ব্যক্তিগত কারনেই নির্বাচন বর্জন করছেন।
নরসিংদী : ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থীর কর্মী সমর্থকদের বিরুদ্ধে বাড়িতে হামলা ও কেন্দ্র থেকে এজেন্টদের বের করে দেওয়ার অভিযোগ তুলে নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন নরসিংদী পৌরসভায় আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী এস এম কাইয়ুম।
পাবনা : প্রভাব বিস্তার করে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর লোকজন কেন্দ্র দখল করে জাল ভোট দিচ্ছে এ অভিযোগে নির্বাচন বর্জন করেছেন পাবনা ঈশ্বরদী পৌরসভায় বিএনপির প্রার্থী মোকলেসুর রহমান বাবলু।
জয়পুরহাট : ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থীর বিরুদ্ধে ভোটারদের কেন্দ্রে যেতে বাধা ও ভয়ভীতি দেখানোর অভিযোগ তুলে জয়পুরহাটের কালাই পৌরসভায় বিএনপির প্রার্থী সাজ্জাদুর রহমান সোহেল ও বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থী আনিসুর রহমান তালুকদার নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন।
কিশোরগঞ্জ : আওয়ামী লীগ প্রার্থীর বিরুদ্ধে কেন্দ্রদখল, ভোট কারচুপি ও কর্মীদের উপর হামলার অভিযোগ এনে কিশোরগঞ্জের ভৈরব পৌরসভায় বিএনপির মেয়র প্রার্থী মো. শাহিন এবং বাজিতপুর পৌরসভায় আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী শওকত আকবর নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন।
নড়াইল : আওয়ামী লীগ প্রার্থীর সমর্থকদের বিরুদ্ধে ভোট কারচুপির অভিযোগ করে নড়াইল পৌরসভায় দুই স্বতন্ত্র প্রার্থী ভোট বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন। আওয়ামী লীগ থেকে সদ্যবহিষ্কৃত স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. সোহরাব হোসেন বিশ্বাস ও সর্দার আলমগীর হোসেন আলম নির্বাচন বর্জনের এ ঘোষণা দেন।