বিডি মেট্রোনিউজ || গণজাগরণ মঞ্চের কর্মী ও ব্লগার আহমেদ রাজীব হায়দার হত্যা মামলার রায়ে নর্থ-সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্র পলাতক রেদোয়ানুল আজাদ রানা ও ফয়সাল বিন নাঈম দীপের ফাঁসির রায় দিয়েছে আদালত। এ ছাড়া একজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের প্রধান মুফতি মো. জসীমউদ্দিন রাহমানীসহ পাঁচজনের বিভিন্ন মেয়াদে সাজার আদেশ হয়েছে।
বৃহস্পতিবার ঢাকার ৩ নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক সাঈদ আহম্মেদ তিন বছর আগের এ মামলায় রায় ঘোষণা করেন। ওই দুজনকে মৃত্যুদণ্ডের পাশাপাশি ১০ হাজার টাকা জরিমানার আদেশও দেওয়া হয়েছে। এ রায়ের মধ্যে দিয়ে দেশে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ব্লগার ও লেখক-প্রকাশকসহ মুক্তমতের মানুষের ওপর হামলা-হত্যার ঘটনায় প্রথম রায় এলো।
ব্লগার রাজীব হত্যা মামলার আট আসামির মধ্যে জসীমউদ্দিন রাহমানী ছাড়া বাকিরা সবাই নর্থ-সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্র। এদের মধ্যে মাকসুদুল হাসান অনিককে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের পাশাপাশি ১০ হাজার টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে আরও এক বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন বিচারক।
বাকি পাঁচজনের মধ্যে এহসান রেজা রুম্মান, নাঈম ইরাদ ও নাফিজ ইমতিয়াজকে ১০ বছরের কারাদণ্ডসহ পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে ৬ মাস বিনাশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছে আদালত। মুফতি মো. জসীমউদ্দিন রাহমানীকে ৫ বছরের কারাদণ্ডসহ দুই হাজার টাকা জরিমানা; অনাদায়ে আরও দুমাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
আর সাদমান ইয়াছির মাহমুদকে ৩ বছরের কারাদণ্ডসহ দুই হাজার টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে আরও ৩ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন বিচারক। তিন বছর আগে দায়ের হওয়া এ মামলার যুক্তিতর্ক শুনানি শেষে গত সোমবার বিচারক রায়ের দিন ঠিক করে দেন।
২০১৩ সালে শাহবাগ আন্দোলন শুরুর দশম দিনে ১৫ ফেব্রুয়ারি রাতে রাজধানীর পল্লবীতে নিজের বাসার সামনে কুপিয়ে হত্যা করা হয় রাজীবকে। এঘটনায় রাজীবের বাবা ডা. নাজিম উদ্দিনের করা মামলার তদন্তে ধর্মীয় উগ্রবাদীরা এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে বলে উঠে আসে। মামলার তদন্ত শেষে গত বছরের ২৮ জানুয়ারি জসীমউদ্দিন রাহমানীসহ ওই আটজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেন গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) পরিদর্শক নিবারণ চন্দ্র বর্মণ। আর এবছরের ১৮ মার্চ তাদের সবার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরু করে আদালত।
মামলার অভিযুক্ত আটজনের মধ্যে প্রধান আসামি রেদোয়ানুল আজাদ রানা ছাড়া সবাই কারাগারে আছেন।