বিডি মেট্রোনিউজ || ৫ জানুয়ারিকে ঘিরে আবার কি উত্তপ্ত হতে চলেছে ঢাকা। কারণ ওই একই দিনে পাল্টাপাল্টি কর্মসূচির উদ্যোগ নিয়েছে বিএনপি ও আওয়ামীলীগ।
৫ জানুয়ারির নির্বাচনের দ্বিতীয় বছরপূর্তির দিনে ঢাকায় জনসভা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি, যাতে দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া বক্তব্য রাখবেন। মঙ্গলবার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এই জনসভা করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে চিঠি দেওয়া হয়েছে জানিয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আশা প্রকাশ করেছেন, তাদের এই কর্মসূচিতে সরকার কোনো বাধা দেবে না।
২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির দশম সংসদ নির্বাচন বর্জনকারী বিএনপি পরের বছর দিনটিতে ‘গণতন্ত্র হত্যা দিবস’ পালনের কর্মসূচিতে বাধা পেয়ে লাগাতার অবরোধ ডেকেছিল।
তিন মাসের অবরোধে নাশকতায় শতাধিক মানুষের মৃত্যু হয়, পোড়ানো হয় বহু গাড়ি। আন্দোলনে সরকার হঠাতে ব্যর্থ হওয়ার পর এপ্রিলে সিটি করপোরেশন নির্বাচনে অংশ নিয়েছিল বিএনপি। এরপর বছরের শেষে দলীয় প্রতীকে পৌর নির্বাচনেও অংশ নেয় তারা। পৌর নির্বাচনে ভরাডুবির পর ভোট জালিয়াতির অভিযোগ করলেও কোনো কর্মসূচি দেয়নি বিএনপি। এরপর ৫ জানুয়ারিই প্রথম কর্মসূচি নিয়ে আসছে দলটি।
শনিবার নয়া পল্টনে দলীয় কার্যালয়ে এক সভার পর ফখরুল এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “২০১৪ সালের প্রহসনের নির্বাচনের দিনকে আমরা গণতন্ত্র হত্যা দিবস হিসেবে চিহ্নিত করেছিলাম। এই দিবসটিকে স্মরণ করতে এবং গণতন্ত্র ফিরিয়ে পাওয়ার আন্দোলনের অংশ হিসেবে আমরা আগামী ৫ জানুয়ারি ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে একটি শান্তিপূর্ণ জনসভা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।”
এই জনসভা করতে কর্তৃপক্ষের কাছে চিঠি দিয়েছেন জানিয়ে তিনি বলেন, “আমরা আশা করছি, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ব্যবহার করার জন্য অনুমতি দেবেন। ওই দিন সারাদেশে বিএনপির জেলা কার্যালয়গুলোতেও আলোচনা সভা করার সিদ্ধান্ত হয়েছে নয়া পল্টনের এই যৌথসভায়।
সভায় ১৯ জানুয়ারি দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ৮০তম জন্মবার্ষিকী পালনের কর্মসূচিও চূড়ান্ত হয়েছে। জিয়ার জন্মদিনে বিএনপির কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে- ১৯ জানুয়ারি ভোরে ঢাকাসহ সারাদেশের দলীয় কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন, সকাল ১০টায় শেরে বাংলা নগরে কবরে শ্রদ্ধা নিবেদন এবং আলোচনা সভা।
৫ জানুয়ারি কর্মসূচি থাকছে আওয়ামী লীগেরও : দশম সংসদ নির্বাচনের বছর পূর্তির দিন ৫ জানুয়ারি কর্মসূচি থাকছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগেরও। শনিবার আওয়ামী লীগের এক সংবাদ সম্মেলনে একথা জানিয়েছেন দলের প্রচার সম্পাদক হাছান মাহমুদ।
এই দিনটি ‘গণতন্ত্র রক্ষার দিন’ হিসেবে পালনে গত বছরও কর্মসূচি ছিল আওয়ামী লীগের। এদিন ‘গণতন্ত্র হত্যা দিবস’ হিসেবে পালনে বিএনপি ২০১৫ সালে কর্মসূচি দিলে দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়।
এরপর কর্মসূচিতে বাধা পেয়ে খালেদা জিয়া লাগাতার অবরোধ ডাকেন। তিন মাসের ওই কর্মসূচিতে নাশকতায় শতাধিক মানুষ মারা যায়। ২০১৫ সালের ৫ জানুয়ারি দুই পক্ষের পাল্টপাল্টি কর্মসূচির উত্তেজনায় বিভিন্ন স্থানে পুলিশের এমন ব্যারিকেড প্রায় অচল হয়ে পড়েছিল ঢাকা।
ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকরা কর্মসূচির বিষয়ে প্রশ্ন করেন হাছান মাহমুদকে। তিনি বলেন, “আমাদেরও কর্মসূচি থাকবে। তা পরে জানিয়ে দেওয়া হবে।” পৌরসভা নির্বাচন নিয়ে বিএনপির বক্তব্যের প্রতিবাদ জানাতে এই সংবাদ ডাকা হয়েছিল।