বিডিমেট্রোনিউজ ডেস্ক ॥ অন্যের স্ত্রী নিয়ে পালিয়েছেন খুলনা সিটি কর্পোরেশনে জাতীয় পার্টির (জাপা) মেয়র প্রার্থী হিসেবে পরিচিত এস এম মুশফিকুর রহমান। মুশফিকুর রহমান একটি হত্যা মামলারও পলাতক আসামি। দৈনিক পত্রিকায় বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে তাকে পলাতক আসামি হিসেবে ঘোষণা দিয়েছেন আদালত। ২২ বছর আগে আদালত তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত। ১৯৯৫ সালের ২৫ এপ্রিল খুলনা নগর জাপার সভাপতি শেখ আবুল কাশেম হত্যা মামলায় তিনি চার্জশীটভুক্ত আসামি ।
খুলনার সোনাডাঙ্গা থানার অফিসার্স ইনচার্জ মমতাজুল হক জানান, মুশফিকুর রহমানের নামে তার থানায় বরিশাল আদালতের গ্রেপ্তারির পরোয়ানার একটি কপি এসেছে। তাকে পুলিশ খুঁজছে। তবে, খোঁজ নিয়ে জানা গেছে মুশফিক এখন ঢাকায় অবস্থান করছেন।
জানা গেছে, বরিশালের চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে গত ৮ অক্টোবর স্বামী গোলাম সরোয়ার বাপ্পী বাদী হয়ে তার স্ত্রী হুমায়রা আহমেদ জিনিয়াকে ভাগিয়ে নেওয়ার অভিযোগে মামলা দায়ের করেন।আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে গত ১৬ নভেম্বর তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। এরপর থেকেই মুশফিক আত্মগোপনে রয়েছেন।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, আসামি মুশফিক বাদীর স্ত্রী জিনিয়ার পূর্বপরিচিত। এ জন্য মুশফিক প্রায় তাদের বাসায় যাতায়াত করতো। এ সুযোগে মুশফিক তার স্ত্রীর সাথে অনৈতিক সম্পর্ক গড়ে তোলে। তারই ধারাবাহিকতায় গত ১৭ আগস্ট বিকেল ৩টায় তার স্ত্রী বাদীর নিজ বাড়ি থেকে শ্বশুর বাড়ি যাওয়ার কথা বলে মুশফিকের হাত ধরে অজানায় পাড়ি জমায়। পরে বাদী তার স্ত্রীকে অনেক স্থানে খোঁজাখুজি করেও তার সন্ধান পায়নি। এ ঘটনায় স্বামী বাপ্পী বাদী হয়ে বরিশাল চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা দায়ের করেন। আদালত আসামীর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। মুশফিকুর রহমান (সজল) খুলনা মহানগরীর সোনাডাঙ্গা থানার আবাসিক এলাকার ৩নং রোডের ৩১৫নং বাড়ির বাসিন্দা মৃতঃ আতিয়ার রহমানের ছেলে।
স্বামী বাপ্পী বলেন, ‘মুশফিক এখন তাকে মামলা প্রত্যাহারের জন্য হুমকি দিচ্ছে। এ জন্য তিনি নিরাপত্তাহীনতায় ভূগছেন।’
বাপ্পী বরিশাল জেলা সদরের দপ্তর খানা রোডের বাসিন্দা মৃতঃ বিমল কুমার রায়ের ছেলে। তিনি জিনিয়ার প্রেমে পড়ে ধর্মান্তরিত হয়ে বিয়ে করেছিলেন।
এ ছাড়াও বাপ্পী গত ৫ নভেম্বর খুলনার পুলিশ কমিশনারের কাছে মুশফিকুর রহমানের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আবেদন করেন। ওই আবেদনে উল্লেখ করা হয়, গত ২৯ আগস্ট মুশফিক ও তার লোকজন বাপ্পীকে মারধর করে হত্যার চেষ্টা করে।
এ ব্যাপারে খুলনা মহানগর জাপার যুগ্ম আহবায়ক সৈয়দ খায়রুল ইসলাম বলেন, ‘মুশফিকুর রহমান প্রায় ৪/৫ মাস খুলনায় অনুপস্থিত। তার সাথে কোন যোগাযোগ নেই। তবে মানুষের মুখে শুনেছেন, মুশফিকের নামে মামলা রয়েছে। এ জন্য তিনি খুলনায় আসছেন না।’
গণমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, এ বছরের ২৮ জানুয়ারী জাতীয় পার্টিতে যোগদান করে মুশফিকুর রহমান। তিনি জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। বনানীস্থ কার্যালয়ে যোগদান অনুষ্ঠানে খুলনা সিটি কর্পোরেশনের আগামী নির্বাচনে জাতীয় পার্টির মেয়র প্রার্থী হিসেবে মুশফিকুর রহমানের নাম ঘোষণা করেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। ১৪ মার্চ জাপা চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ খুলনায় এসে মুশফিকুর রহমানকে মেয়র প্রার্থী হিসেবে পরিচয়ও করিয়ে দেন।