ঢাকায় ট্রাভেল ব্যাগে মিলল নিখোঁজ ছাত্রীর লাশ

বিডিমেট্রোনিউজ ডেস্ক ॥ কলেজে যাওয়ার কথা বলে গত শনিবার সকালে মিরপুরে মামার বাসা থেকে বের হয়েছিল আঁখি আক্তার। আঠারো বছরের এই মেয়েটি রাজধানীর পল্লবী মহিলা ডিগ্রি কলেজের উচ্চ মাধ্যমিক প্রথম বর্ষের ছাত্রী। কিন্তু এর পর সে আর বাসায় ফেরেনি। খোঁজাখুঁজির ওই রাতে মিরপুর থানায় সাধারণ ডায়েরিও করা হয়। তবে শেষ পর্যন্ত আঁখির লাশ মিলল বিমানবন্দর রেলস্টেশনে একটি ট্রাভেল ব্যাগের ভেতর।

শনিবার গভীর রাতে পুলিশ অজ্ঞাতপরিচয়ে উদ্ধার করে ব্যাগভর্তি লাশটি। গতকাল রোববার সন্ধ্যায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে লাশটি শনাক্ত করেন তার স্বজনরা।

রেল পুলিশ জানায়, আঁখিকে হত্যা করা হয়েছে শ্বাসরোধে। এর আগে ধর্ষণের শিকার হতে পারে সে, ধারণা করা হচ্ছে এটাও। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাব্বির নামে আঁখির এক বন্ধুকে আটক করা হয়েছে। সে উত্তরা রাজউক কলেজের ছাত্র।

স্বজনরা জানান, আঁখির বাবা ও মা দু’জনই মরিশাস প্রবাসী। তাদের বাড়ি মাদারীপুর জেলার কালকিনির আণ্ডারচরে। তবে মেয়েটি তার মামা রোকন খানের মিরপুর ১২ নম্বর সেকশনের ই-ব্লকের ৩৩ নম্বর রোডের ভাড়া বাসায় থেকে পড়ালেখা করত।

আঁখির মামা রোকন খান বলেন, শনিবার বেলা ১১টার দিকে তার ভাগ্নি কলেজে যাওয়ার কথা বলে বাসা থেকে বের হয়। সন্ধ্যা পর্যন্ত বাসায় না ফেরায় তার মোবাইল ফোনে কল দেওয়া হয়। দুটি মোবাইল ফোনই বন্ধ পাওয়া যায়। এরপর তার কলেজ, পরিচিত বন্ধু-বান্ধবী ও স্বজনদের বাসায় খোঁজ নেওয়া হয়। কোথায়ও না পেয়ে তিনি থানায় জিডি করেন।

রোকন জানান, তারা গতকাল হাসপাতালে খুঁজতে গিয়ে ভাগ্নির মরদেহের সন্ধান পান। মর্গে গিয়ে মরদেহ পড়ে থাকতে দেখেন তারা। তাদের সঙ্গে আঁখির বন্ধু সাব্বিরও ছিল। কিন্তু তাকে সন্দেহ হওয়ায় পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে।

আঁখির অপর এক মামা নুরুল ইসলাম খান বলেন, তারা জানতে পেরেছেন সাব্বিরের সঙ্গে আঁখির প্রেমের সম্পর্ক ছিল। শনিবার রাতেই সাব্বির মরিশাসে ফোন দিয়ে আঁখির নিখোঁজের বিষয়ে তার মাকে জানায়। তার আচরণ ছিল সন্দেহজনক। এ জন্যই তাকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি সাকিব নামে তার এক বন্ধুকেও সন্দেহ করছেন তারা।

ঢাকা রেলওয়ে থানার উপপরিদর্শক আনিসুর রহমান জানান, আঁখির লাশভর্তি কালো রঙের ট্রাভেল ব্যাগটি বিমানবন্দর রেলস্টেশনের শ্রমিক লীগের কার্যালয়ের পাশে পড়ে ছিল। রাত আড়াইটার দিকে ওই ব্যাগটি দেখে লোকজনের সন্দেহ হয়। পুলিশ সেটি খুললে লাশ দেখতে পায় এক তরুণীর। গতকাল সকালে অজ্ঞাতপরিচয় হিসেবে তার মরদেহ ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠানো হয়। সন্ধ্যার দিকে স্বজনরা পরিচয় শনাক্ত করেন।

পুলিশের এক কর্মকর্তা বলেন, আঁখির মুখমণ্ডলে রক্ত ছিল। ধর্ষণের প্রাথমিক আলামতও মিলেছে। এ থেকে ধারণা করা হচ্ছে, ধর্ষণে বাধা দিলে দুর্বৃত্তরা তাকে হত্যা করে। পরে লাশটি ব্যাগে ভরে রেলস্টেশনে তা গুমের চেষ্টা করে। ওই ঘটনায় তার বন্ধু সাব্বির নামের এক যুবককে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

Print Friendly, PDF & Email

Related Posts