প্রেমঘটিত বিরোধে রাজধানীর শাখারীবাজারে কলেজ ছাত্র খুন

বিডিমেট্রোনিউজ ডেস্ক ॥ প্রেমঘটিত বিরোধের জেরে রাজধানীর শাখারীবাজারে খুন হয়েছে নিউ পল্টন লাইন স্কুল অ্যান্ড কলেজের ছাত্র রওনক। সোমবার ঢাকা ও এর আশপাশের এলাকা থেকে রওনক হত্যায় জড়িত পাঁচজনকে গ্রেপ্তারের পর তাদের দেওয়া তথ্যের বরাত দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে পুলিশ।

গ্রেপ্তারকৃতরা হচ্ছে- রিয়াজ আলম ওরফে ফারহান, মো. ফাহিম আহম্মেদ ওরফে আব্রো, মো. ইয়াসিন আলী, মো. আল আমিন ওরফে ফারবী খাঁন, মোছা. লিজা আক্তার ওরফে মাইসা আলম। তাদেরকে গ্রেপ্তারকালে রওনক হত্যায় ব্যবহৃত একটি ছুরি উদ্ধার করেছে পুলিশ।

তবে এ ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারীকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। মামলার তদন্তের স্বার্থে তার নামও প্রকাশ করা হয়নি।

Picture2
কলেজছাত্র রওনক হোসেন

মঙ্গলবার দুপুরে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে লালবাগ বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) ইব্রাহিম খান বলেন, মাইসা নামের এক মেয়ের সঙ্গে রওনকের প্রেম ছিল। রওনক ওই সম্পর্ক ছিন্ন করে তুহু নামে অন্য এক মেয়ের সঙ্গে প্রেমে জড়ায়। তুহুকে অন্য এক ছেলে (রওনক হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী) পছন্দ করত। এ নিয়ে রওনক ও ওই ছেলের মধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একাধিকবার কথা কাটাকাটি ও হত্যার হুমকি দেওয়ার ঘটনা ঘটে। তুহুর কথিত প্রেমিক প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য হোলি উৎসবের দিনকে বেছে নেয়। যেহেতু রওনকের সঙ্গে মাইসার আগে সম্পর্ক ছিল, সেজন্য মাইসাকে ব্যবহার করে ওই ছেলে রওনককে হোলি উৎসবে আনে।

ইব্রাহিম খান বলেন, গত পয়লা মে ওই ছেলে (তুহুর কথিত প্রেমিক) তার বন্ধুদের নিয়ে ঘটনার আধা ঘণ্টা আগে লক্ষ্মীবাজারের কেএফসির সামনে হত্যার পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনা অনুযায়ী তারা তিন/চারটি ছুরি সংগ্রহ করে।  রওনক ও তার বন্ধুরা শনি মন্দিরের সামনে এলে পরিকল্পনা অনুযায়ী ওই ছেলে ডেকে নিয়ে যায়। এক পর্যায়ে তারা ইচ্ছাকৃতভাবে বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়ে।  এ সময় ১৫/২০ জন রওনককে এলোপাথারি চড়-থাপ্পড় মারতে থাকে। এর মধ্যে কয়েকজন ‍ছুরি দিয়ে আঘাত করে।

তিনি আরো বলেন, গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে ফারহান নিজেই ছুরিকাঘাত করেছে বলে স্বীকার করেছে। মূল পরিকল্পনাকারীসহ জড়িত অন্যদেরও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। তবে এই ঘটনার সঙ্গে রওনকের বর্তমান প্রেমিকা তুহুর কোনো সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়নি। মূলত এই মেয়েকে নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে এ হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। কিন্তু ওই দিন মেয়েটির সঙ্গে তাদের কারো যোগাযোগ হয়নি এবং কথোপকথনের কোনো রেকর্ড পাওয়া যায়নি। সে ঢাকার বাইরে ছিল।

পারিবারিক নজরদারির অভাবে এ ধরনের ঘটনা ঘটছে, জানিয়ে ইব্রাহিম খান বলেন, এ বিষয়ে পারিবারিক নজরদারি আরো বাড়াতে হবে।

বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার দিকে শাখারীবাজারে দুর্বৃত্তরা রওনককে ছুরিকাঘাত করে বলে তার বন্ধুরা দাবি করেন। এরপর তারা তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

এ বছর নিউ পল্টন লাইন স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার কথা ছিল রওনকের। হত্যার ঘটনায় কোতোয়ালী থানায় একটি মামলা দায়ের করেন রওনকের বাবা।

Print Friendly, PDF & Email

Related Posts