মাস্তানি করতে গিয়ে গণধোলাই খেয়ে থানায় এসে মামলা

সিরাজদিখান (মুন্সীগঞ্জ) প্রতিনিধি : সিরাজদিখান উপজেলায় অন্যের জমিতে জোরপূর্বক আলু রাখাকে কেন্দ্র করে বচসার জের ধরে মাস্তানি করতে গিয়ে ৩জন এলাকাবাসীর গণপিটুনির স্বীকার হয়েছে। এ ঘটনায় উল্টো মাস্তানদের পক্ষেই থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।

গত ১২ মার্চ  দুপুর অনুমান সাড়ে ১২ টার দিকে উপজেলার বালুরচর ইউনিয়নের চর বয়রাগাদী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এতে ওই এলাকার মোঃ বাদশা মিয়া (৬০),মোঃ নাসির হোসেন (৪০) মোঃ রিপন হোসেন (২৯) নামে ৩ জন আহত হয়। আহত অবস্থায় তাদের সিরাজদিখান উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়। এ ঘটনায় মোঃ বাদশা মিয়া বাদী হয়ে সিরাজদিখান থানায় মোঃ আবু বক্কর ছিদ্দিক, দুদু মিয়া, মোঃ নুর হোসেন, কুদু মিয়াসহ অজ্ঞাতনামা ৫/৬জনকে আসামী করে লিখিত অভিযোগ করেন।

সরেজমিনে ঘটনাকালে উপস্থিত দাদন শেখসহ এলাকার একাধিক লোকজনের সাথে আলাপ করে জানা গেছে, আবু বক্কর ছিদ্দিক তার জমির আলু উত্তোলন করে জমির পাশে রেখে বস্তায় ভরছিল। পাশের জমির মালিক আঃ গফুর এর ভাই মোঃ বাদশা মিয়া তাকে আলু রেখে বস্তায় ভরতে বাধা দেয়। একপর্যায়ে তাদের মধ্যে কথাকাটাকাটি ও হাতাহাতি হয়। উপস্থিত লোকজন বিষয়টি মিমাংসা করে দেয়।

বাদশা মিয়া বাড়ীতে গিয়ে তার দুই ছেলে নাসির ও রিপনকে মোবাইল ফোনে বিষয়টি জানায়। নাসির  ও রিপন দেশীয় অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে আবু বক্কর ছিদ্দিককে মারতে গেলে উপস্থিত এলাকার লোকজন বাধা দেয়। তাদের দুজনকে থামানোর চেষ্টা করলে নাসির ও রিপন এলাকার লোকজনদের উপরও হামলা চালায়। পরে এলাকার লোকজন ক্ষিপ্ত হয়ে তাদের গণপিটুনি দেয়। তাদের অস্ত্র-সস্ত্র ও মোটর সাইকেল রেখে এলাকার গণ্যামান্য ব্যক্তিবর্গের জিম্মায় দেয়। বিষয়টি বালুচর ইউপি চেয়ারম্যান ও  স্থানীয় ৯ নং ইউপি সদস্যকে জানানো হলে ইউপি সদস্য মোটর সাইকেলটি আহতদের পরিবারের কাছে বুঝিয়ে দেন।

পরদিন গণপিটুনিতে আহত বাদশা মিয়ার অভিযোগের প্রেক্ষিতে সিরাজদিখান থানায় একটি নিয়মিত মামলা রুজু করা হয়।

মামলার এজাহারে দেখা যায়, পূর্ব শত্রুতার জের ধরে এ ঘটনা ঘটেছে বলে মামলা দায়ের করেন মোঃ বাদশা মিয়া। অথচ ওই এলাকার ঘটনাস্থলে উপস্থিত লোকজন ও স্থানীয় ইউপি সদস্য বলছেন আলু রাখা নিয়েই ঘটনার সূত্রপাত হয়েছে।

এব্যাপারে মামলার বাদী মোঃ বাদশা মিয়ার ছোট ছেলে মোঃ জসিম এর সাথে মুঠোফোনে কথা বললে তিনি জানা, মারামারির ঘটনা আলু রাখাকেই কেন্দ্র করে ঘটেছে। তিনি আরো জানান, আবু বক্কর ছিদ্দিক পূর্ব পরিকল্পিতভাবে আমার বাবা এবং ভাইদের পিটিয়েছে। আবু বক্কর ছিদ্দিকের আলু ক্ষেতে  কাজ করা ৩০/৪০জন কামলারাও আমার বাবা এবং ভাইদের পিটিয়েছে। আমাদের একটি মোটর সাইকেল তারা রেখে দিয়েছিল সেটা বাদশা মেম্বার ফিরিয়ে দিয়ে গেছে।

বালুচর ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ড এর ইউপি সদস্য বাদশা মিয়া জানান, ঘটনাটি শুনেছি। যারা মোটর সাইকেলটি মারামারির সময়  জিম্মায় রেখেছিল তাদের কাছ থেকে বাদশা মিয়ার কাছে ফেরৎ দিয়েছি। এ নিয়ে আমরা এলাকার মিমাংসার চেষ্টা করছি।

সিরাজদিখান থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মোঃ হেলাল উদ্দিন জানান, অভিযোগের প্রেক্ষিতে মামলা হয়েছে। তদন্ত চলছে। তদন্ত করে ঘটনার সাথে জড়িতদের আইনের আওতায় আনা হবে।

 

Print Friendly, PDF & Email

Related Posts