পরকীয়ার বলি বাবু সোনা, ৬ দিন পর মিলল মৃতদেহ

বিডিমেট্রোনিউজ ডেস্ক ॥ রংপুরের বিশেষ আদালতের পিপি, পেশাজীবী সংগঠনের নেতা রথীশ চন্দ্র ভৌমিক বাবু সোনা নিখোঁজ থাকার পর ৬ দিনের মাথায় তার লাশ উদ্ধার করা হয়। তার স্ত্রী দিপা ভৌমিক র‌্যাব-১৩ এর কাছে তাকে হত্যার কথা স্বীকার করে এবং লাশের সন্ধান জানায়।
র‌্যাব ও পুলিশ বাবু সোনার বাসার অদূরে স্ত্রীর পরকীয়া প্রেমিক কামরুল মাস্টার এর তাজহাট মোল্লাপাড়ার এলাকায় নির্মাণাধীন বাড়ির মেঝে খুঁড়ে মঙ্গলবার রাত ১১টায় লাশ উদ্ধার করে। এ ঘটনায় ৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে র‌্যাব মহাপরিচালক বেনজির আহম্মেদ বুধবার দুপুরে র‌্যাব-১৩ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের প্রেসব্রিফিংকালে বলেন।
photo-
পরকীয়া প্রেমিক কামরুল মাস্টার
এর আগে মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকে পুলিশ সোকয়েল, সেপটিক ট্যাংক এবং বাড়ির পিছনে ডোবায় তল্লাশি চালিয়ে লাশের সন্ধান না পেলে র‌্যাব-১৩ ঘটনাটি তদন্ত শুরুর এক পর্যায়ে বাবু সোনার স্ত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে র‌্যাবের কাছে বাবু সোনাকে হত্যার ঘটনা বর্ণনা করে এবং লাশের সঠিক অবস্থান জানায়।
জানা গেছে, স্ত্রী দিপা ভৌমিকের হত্যাকাণ্ডের বর্ণনামতে পারিবারিক কলহ, অহেতুক সন্দেহের কারণে স্বামীর সঙ্গে তিক্ততা সৃষ্টি হয়। এ সকল কারণে দিপা তার পরকীয়া প্রেমিক কামরুল মাস্টারের সাথে প্রায় ২ মাস আগে থেকেই হত্যার পরিকল্পনা করে। গত ২৯ মার্চ রাত আনুমানিক ১০ টায় খাবারের সাথে ১০টি ঘুমের বড়ি গুড়া করে খাওয়ানো হলে বাবু সোনা অচেতন হয়ে পড়ে। অচেতন অবস্থায় গলায় ওড়না পেঁচিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়। হত্যার পর মৃতদেহ শয়ন কক্ষেই রাখা হয়। পরে ভোর ৫টার দিকে কামরুল মাস্টার ঐ বাড়ি থেকে বেড়িয়ে যায় এবং ৯টার দিকে ভ্যান নিয়ে আসে। লাশগুম করার উদ্দেশ্যে স্ত্রী দীপা প্রেমিকের সহয়তায় একটি আলমারিতে লাশ ভরে এবং আলমারিটি পরিবর্তনের বাহানায় লাশ ভর্তি আলমারি নিয়ে মোল্লাপাড়ার নির্মাণাধীন বাসভনের ঘরের মেঝেতে লাশ পুঁতে রাখে। ওই আলমারি বহনের কাজে তিন জন নিয়োজিত ছিল যাদের ঠিক করেছিল কামরুল।
৩ মার্চ রাত ১১টায় লাশ উদ্ধারের সময় শরীর আংশিক গলে যায়। তাকে শনাক্তের জন্য ছোটভাই সাংবাদিক সুশান্ত ভৌমিককে নিয়ে গেলে তিনি বাবু সোনার লাশ শনাক্ত করেন।
অপরদিকে, লাশ লুকানোর সাথে জড়িত থাকায় তাজহাট এলাকার সবুজ ইসলাম (১৭) ও রফিকুল সরকারকে (১৭) র‌্যাব গ্রেফতার করেছে। গ্রেফতারকৃতারা জানায়, কামরুল মাস্টার তাদের শিক্ষক হওয়ায় তার আদেশ পালন করেছে। এদিকে এর আগে বাবু সোনার স্ত্রী স্নিগ্ধা ভৌমিক তার প্রেমিক কামরুল মাস্টার, মেয়ে অরিত্রি ভৌমিক, তার প্রেমিক মো. মিলনকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। রথীশের স্ত্রী দীপাকেও সেখানে নিয়ে গিয়েছিল র‌্যাব।
দীপাকে গ্রেপ্তারের কথা জানিয়ে মেজর রাব্বী সাংবাদিকদের বলেন, ‘তার দেওয়া তথ্যেই লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।’ রংপুর জেলা পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান ও জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবদুল মালেকও লাশ উদ্ধারের সময় উপস্থিত ছিলেন। পরে লাশের ময়নাতদন্ত শেষে লাশ পরিবারের হাতে দেয়া হয় এবং বিকেল ৫টায় দক্ষিণগঞ্জ শ্মসানে তার শেষকৃত্য সম্পন্ন করা হয়।
Print Friendly

Related Posts