শিক্ষক সমিতির দ্বন্দ্বে এসএসসি পরীক্ষায় ১০৪ শিক্ষার্থীর ভোগান্তি

আরিফুল ইসলাম, টাঙ্গাইল প্রতিনিধি: টাঙ্গাইলের বাসাইলে মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির দ্বন্দ্বে এসএসসি পরীক্ষায় মিরিকপুর গঙ্গাঁচরণ তপশিলী উচ্চ বিদ্যালয়ের ১০৪জন পরীক্ষার্থীর চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। এরা কাশিল ইউনিয়নের বাথুলীসাদী লাইলী বেগম উচ্চ বিদ্যালয়ে নতুন কেন্দ্রে এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতি সম্প্রতি দুই ভাগে বিভক্ত হয়েছে। এর ফলে তাদের মধ্যে চরম দ্বন্দ্বের সৃষ্টি হয়েছে। আর এই দ্বন্দ্ব এখন প্রকাশ্য রুপ নিয়েছে। সোমবার থেকে এসএসসি পরীক্ষা শুরু হয়েছে। প্রতি বছর মিরিকপুর গঙ্গাঁচরণ তপশিলী উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বাসাইল শহরের কেন্দ্রে পরীক্ষা দিয়ে আসছিল। কিন্তু শিক্ষক সমিতির দ্বন্দ্বের কারণে এ বছর বাসাইল শহরের কেন্দ্র বাদ দিয়ে তারা নতুন কেন্দ্র হওয়া শহর থেকে প্রায় ৬ কিলোমিটার দূরে কাশিল ইউনিয়নের বাথুলীসাদী লাইলী বেগম উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে নিয়ে পরীক্ষা দেওয়াচ্ছেন। এ বিদ্যালয়ের পরীক্ষার্থীরা আশপাশের এলাকা থেকে প্রায় ১১ কিলোমিটার দূরের কেন্দ্রে গিয়ে পরীক্ষা দেওয়ায় চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে তাদের। মিরিকপুর গঙ্গাচরণ তপশিলী উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বাসাইল শহরের কেন্দ্রে পরীক্ষা দিলে অনেক শিক্ষার্থীর ৩ থেকে ৪ কিলোমিটার দূরত্ব ছিল। কিন্তু তারা এবছর ১০ থেকে ১১ কিলোমিটার রাস্তা অতিক্রম করে ওই কেন্দ্রে পরীক্ষা দিচ্ছে। এঘটনায় অভিভাবকরা চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তারা দ্রুত ওই বিদ্যালয়ের পরীক্ষার্থীদের বাসাইল শহরের কেন্দ্রে আনার জোর বাদি জানান।
মিরিকপুর গঙ্গাঁচরণ তপশিলী উচ্চ বিদ্যালয়ের পরীক্ষার্থী পাপিয়া আক্তার জানায়, ‘প্রতি বছর এই বিদ্যালয়ের পরীক্ষার্থীরা বাসাইল শহরের কেন্দ্রে পরীক্ষা দিয়েছে। কিন্তু এবছর শিক্ষকদের কারণে অনেক দূরের কেন্দ্রে পরীক্ষা নেওয়া হচ্ছে। এর ফলে বাড়ি থেকে প্রায় দুই ঘণ্টা আগে বের হতে হয়।’
পরীক্ষার্থী তাসলিমা আক্তার জানায়, ‘বাসাইল ছেড়ে দূরের কেন্দ্রে পরীক্ষা নেওয়ায় চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। আগামী বছর যারা পরীক্ষা দিবে তাদের যেন বাসাইলের কেন্দ্রে রাখা হয়।’
মিরিকপুর গঙ্গাঁচরণ তপশিলী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির একাংশের সাধারণ সম্পাদক হায়দার আলী খান বলেন, ‘প্রতি বছর আমাদের বিদ্যালয়ের পরীক্ষার্থীদের বাসাইল হাজী মালিক মাজেদা খাতুন উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে পরীক্ষা নেওয়া হয়। আমি সরকারি গোবিন্দ উচ্চ বিদ্যালয় অথবা বাসাইল পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে আমার বিদ্যালয়ের পরীক্ষার্থীদের রাখার জন্য অনুরোধ করা হয়। কিন্তু সংশ্লিষ্টরা তা কখনও করেন না। তাই এবার নতুন কেন্দ্র হওয়া বাথুলীসাদী লাইলী বেগম উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে নেওয়া হয়েছে।’
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শামছুন নাহার স্বপ্না বলেন, ‘সকল বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের প্রত্যয়নের প্রেক্ষিতে নতুন কেন্দ্রটি করা হয়েছে। আর মিরিকপুর গঙ্গাচরণ তপশিলী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তাদের বিদ্যালয়ের পরীক্ষার্থীদের ওই নতুন কেন্দ্রে পরীক্ষা নেওয়ার জন্য আবেদন করেন।’
 তিনি আরও বলেন, ‘এ বছর কেন্দ্র পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় আগামী বছর যাতায়াতের সুবিধার্থে ওই বিদ্যালয়ের পরীক্ষার্থীদের বাসাইল কেন্দ্রে রাখা হবে।’
Print Friendly

Related Posts