মো. রাসেল হোসেন, ধামরাই: ঢাকার ধামরাইয়ের শত বছরের ঐতিহ্যবাহী তামা-কাসা শিল্প আধুনিক সভ্যতার জগতে এসে এখন প্রায় বিলুপ্তির পথে। এক সময়ে ধামরাইয়ে শতাধিক তামা-কাসার পণ্য তৈরীর কারখানা থাকলেও বর্তমানে সেই সংখ্যা নেমে দাঁড়িয়েছে ৪ থেকে ৫- এ।
বিলুপ্তির পথে থাকা ধামরাইয়ের এই শিল্পটির ঐতিহ্য বর্তমান প্রজন্মের কাছে পৌঁছে দিতে মুজিব শতবর্ষ উদযাপন উপলক্ষে ধামরাই পৌর কর্তৃপক্ষ এক ব্যতিক্রম ধর্মী উদ্দ্যোগ নিয়েছে। পৌর কর্তৃপক্ষ মুজিব শতবর্ষ উদযাপনকে স্বরণীয় করে রাখার পাশাপাশি ধামরাইয়ের ঐতিহ্যবাহী শিল্পটিকে রক্ষায় পৌর চত্বরে ১ টন ওজনের তামা দিয়ে তৈরী বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য উন্মোচন করেছে।
মঙ্গলবার দুপুরে ধামরাই পৌর সভা চত্বরে তামা দিয়ে তৈরী বঙ্গবন্ধুর এই ভাস্কর্যটি উন্মোচন করেন স্থানীয় সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ বেনজীর আহমদ। ভাস্কর্যটি উন্মোচনের সময় পৌর কর্তৃপক্ষের পাশাপাশি পৌরবাসী উপস্থিত ছিলেন।
তামা দিয়ে বঙ্গবন্ধুর এই বিশাল ভাস্কর্য উন্মোচনের উদ্দ্যেশ্য সম্পর্কে ভাস্কর্য উন্মোচন অনুষ্ঠানের সভাপতি ধামরাই পৌর সভার মেয়র আলহাজ গোলাম কবির বলেন, ধামরাইয়ের তামা-কাসা শিল্পটি শত বছরের ঐতিহ্যবাহী। তবে আধুনিক সভ্যতার যুগে এসে এই ঐতিহ্যবাহী তামা-কাসা শিল্পটি এখন প্রায় বিলুপ্তির পথে। নতুন প্রজন্মের অনেকেই আজ ধামরাইয়ের এই ঐতিহ্যবাহী শিল্পটিকে ভূলে গেছে।
তাই বঙ্গবন্ধুর জন্মশত বার্ষিকী উপলক্ষে দিবসটি স্বরণীয় করে রাখার পাশাপাশি নতুন প্রজন্মের কাছে ধামরাইয়ের ঐতিহ্যবাহী তামা-কাসা শিল্পটিকে নতুন করে পরিচয় করিয়ে দেয়াসহ এই শিল্পটিকে রক্ষায় তামা দিয়ে তৈরী ভাস্কর্যটি উন্মোচন করা হয়েছে।
এসময় পৌর মেয়র আরও বলেন, প্রায় দেড় মাসের অক্লান্ত পরিশ্রম দিয়ে ধামরাইয়ের তামা-কাসা শিল্পের কারিগরেরা ১ টন ওজনের এই ভাস্কর্যটি তৈরী করেছেন। ভাস্কর্যটি তৈরীতে প্রায় ৮ থেকে ৯ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। যা, পৌর সভার তহবিল থেকে বহন করা হয়েছে বলেও জানান পৌর মেয়র।
এদিকে, পৌর কর্তৃপক্ষের এমন ব্যতিক্রমধর্মী উদ্দ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন পৌরবাসী। তারা বলছেন, উন্মোচিত এই ভাস্কর্যটির ফলে পৌর সভায় বা পৌর চত্বরে যারাই আসবেন তারাই বঙ্গবন্ধুর আত্মত্যাগের ইতিহাস শ্রদ্ধাভরে স্বরণ করবে।
ভাস্কর্য উন্মোচনের পরে পৌর চত্ত্বরে উপস্থিত সকলে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে এবং সম্প্রতি সারা বিশ্বে ছড়য়ে পড়া করোনা ভাইরাস থেকে দেশকে রক্ষার জন্য দোয়া প্রার্থনা করেন। দোআ শেষে বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন উপলক্ষে একটি সুবিশাল কেক কাটা হয়।