বিডিমেট্রোনিউজ ডেস্ক ॥ কোয়ারেন্টাইন অভিজ্ঞতা নিয়ে কলম ধরলেন অভিনেত্রী জ্যোতিকা জ্যোতি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেয়া তার স্ট্যাটাস-
এমন একটা অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে সময় পার করছে পুরো পৃথিবী যা আমাদের জীবনে প্রথম! শুধু আমাদের কেন বেঁচে থাকা আমাদের পূর্ব প্রজন্মও এরকম সময় দেখেনি।এক অদৃশ্য শক্তি অসহায়, অসুস্থ, মৃত করে দিচ্ছে পৃথিবীর মানুষকে।দুরত্ব যতই হোক সারা পৃথিবীর সবাই যেন এক পরিবার হয়ে উঠেছে যাদের একই রকম উদ্বেগ, উৎকন্ঠা, ভয়! কেউ জানিনা কী হতে যাচ্ছে!
আপাতত একটা সমাধান সবার জানা আর তা হলো ঘরবন্দী থাকা। আমিও সবার মতো সেই চেস্টাই করছি। হোম কোয়ারেন্টাইনে আছি। নিজের ঘর, পরিবার, বন্ধু এবং নিজেকে সময় দিচ্ছি। সেই সঙ্গে বেশ কিছু কাজও করছি। কারণ আমি এত ওয়ার্কোহলিক কাজ ছাড়া ভীষন ডিপ্রেশনে চলে যাই। তাই আমি কখনও ফ্রি থাকিনা, কাজ তৈরি করে ফেলি। তো এই বন্দীদশা কাজে লাগানোর জন্য আমি বই পড়ছি, লিখছি, ঘরবাড়ি পরিষ্কার করছি, নেটে সময় কাটাচ্ছি। কিছুটা শরীরচর্চা করতে শুরু করেছি। বারান্দায় দাঁড়িয়ে দিনের একেকটা মুহুর্তের প্রকৃতি দেখছি আর মায়ের সঙ্গে অনেক গল্প করছি।
কিছু স্ক্রিপ্টের কাজ করছি যেগুলো খুব ইনফরমেটিভ। তার জন্য প্রচুর ঘাটাঘাটি করতে হচ্ছে, পড়তে হচ্ছে। স্যোশ্যাল প্লাটফর্মগুলিতে মাঝে মাঝেই লিখি মানুষকে আরও সচেতন করার জন্য যারা আমাদের ফ্যান, ফলোয়ার আছে।
আমি যে এলাকায় থাকি সেটা লক ডাউন। ফলে এর ভেতর আটকে পড়া কুকুরগুলো খুব ডাকতে থাকে। কখনও সন্ধ্যার পর এদের খাবার দিতে বের হই। করোনা পরবর্তী সময়টার ভাবনাও সময় নিচ্ছে । আমাদের ইন্ডাস্ট্রি, অর্থনীতি কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে কে জানে। এসব নিয়ে আপসেট হচ্ছি মাঝে মাঝে। তবে ব্যাপারটা এখন মেনে নিয়ে ব্যস্ততা তৈরী করে ব্যস্ত থাকার চেষ্টা করছি। তবে এই সময়টার ভালো দিকগুলো বেছে নিচ্ছি আমি।
যেমন অনেক অনেক বছর পর বাড়িতে সময় কাটাচ্ছি, বেশ ভালো লাগছে আমার। কাজের ব্যস্ততায় যাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারিনা তাঁদের সঙ্গে কথা বলছি, মানুষের ফোন রেসপন্স করছি, ইনবক্স দেখছি। টেলিভিশনে নিউজ দেখে একটা বড় সময় কাটছে। টেনশন ডিপ্রেশন দুরে রাখার আপ্রাণ চেস্টা করছি।
তবে ঘুম, জেগে থাকা এসব উল্টোপাল্টা হচ্ছে। একটা মানসিক চাপ তো থেকেই যায়! কখনও কখনও মনে উকি দেয় তাহলে কি সবাই মৃত্যুর জন্য অপেক্ষা করছি? আবার পরক্ষণেই মনে হয় করোনা শেষে আরও মানবিক, আরও শান্তিপূর্ণ , আরও সুন্দর একটা পৃথিবীতে আমরা সবাই একসাথে হাসবো। সবাই নিরাপদে থাকুক, ভালো থাকুক।