জাহিদুল হক চন্দন, মানিকগঞ্জ: ঢাকা আরিচা মহাসড়কের মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলার গোলড়া বাসষ্ট্যান্ডে রয়েছে বৃহত্তর পাইকারি সবজি বাজার। প্রতিদিন সকাল ও বিকেলে ক্রেতা-বিক্রোতার সমাহার থাকে ওই সবজি বাজারে। বিক্রি হয় কয়েক লক্ষ টাকার সবজি।
রাজধানী ও এর আশেপাশের বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রতিদিন ভিড় জমান ক্রেতারা। স্থানীয় কৃষকেরা ভ্যানে করে নিয়ে আসেন তাদের সবজি। যাতায়াত ব্যবস্থা ভালো থাকায় এখানে সবজির চাহিদাও বেশ। তবে করোনা সংক্রমণ এড়াতে সামজিক দূরত্ব নেই পাইকারি ওই সবজি বাজারে।
সোমবার সকালে সরেজমিনে ক্রেতা-বিক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড় দেখা যায় পাইকারি ওই সবজি বাজারে। ভ্যানে করে বাহারি রকমের সবজি নিয়ে বিক্রির জন্য অপেক্ষার প্রহর গুনছেন কৃষকেরা। আর পছন্দ অনুযায়ী বাজারদর ঠিক করে সবজি ক্রয় করছেন ক্রেতাারা।
সবজি বাজারের ইজারাদার মো. লিয়াকত আলীর দেওয়া তথ্যমতে, করোনার হটস্পট রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা, গাজিপুরের মৌচাক, কোনাবাড়ি, আশুলিয়া, বাইপাইল এবং সাভার এলাকা থেকে আগমন হয় ক্রেতাদের। সকাল ও বিকেলে জমজমাট থাকে সবজির পাইকারি বাজার। তবে অনেক বলার পরেও ক্রেতা-বিক্রেতারা সামাজিক দূরত্ব মানছে না বলে দাবি করেন তিনি।
মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার কৃষ্ণপুর এলাকার কৃষক আওলাদ হোসেন বলেন, সারা বছর সবজি চাষাবাদ করেন তিনি। চলতি মৌসুমে তিন বিঘা জমিতে শসা ও করলার আবাদ করেছেন তিনি। ফলনও ভালো। বাজারে চাহিদাও বাড়ছে সবজির।
সবজি বিক্রির জন্য আশেপাশে কোন পাইকারি বাজার নেই। যে কারণে বাধ্য হয়েই মহাসড়ক হয়ে ভ্যানে করে গোলড়া বাজারে নিয়মিতভাবে সবজি নিয়ে যেতে হয়। এছাড়া অল্প জায়গার মধ্যে অনেক সবজির আমদানি হওয়ায় সামাজিক নিরাপদ মেনে চলার কোন উপায় নেই বলেও জানান তিনি।
সাটুরিয়া উপজেলার মহিষালোহা এলাকার কৃষক আমজাদ মিয়া জানান, সবজি চাষে খ্যাত সাটুরিয়া উপজেলা। সব মৌসুমেই এখানে প্রচুর পরিমাণে সবজির আবাদ হয়। তবে সরকারিভাবে সবজি বিক্রির জন্য উপজেলায় কোন হাট/বাজার নেই। যে কারণে গোলড়া বাজারে যাওয়া ছাড়া বিকল্প কোন মাধ্যম নেই বলে জানান তিনি।
সাটুরিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা খলিলুর রহমান বলেন, চলতি মৌসুমে উপজেলায় ৩০৫ হেক্টর জমিতে সবজির আবাদ হয়েছে। ফলনও ভালো। তবে সবজি বিক্রির জন্য নির্ধারিত কোন হাট/বাজার না থাকায় লোকসানে সবজি চাষিরা। উপজেলা কৃষি অফিস থেকে নিরাপদ সবজি কর্ণার নামে একটি সবজি বাজারের আয়োজন করার প্রক্রিয়া চলছে বলেও জানান তিনি।
সাটুরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আশরাফুল আলম বলেন, সবজি বাজারের জায়গা অল্প হওয়ায় সেখানে সামাজিক দুরুত্ব মানার সুযোগ কম রয়েছে। তবে বাজারে আগত পাইকারদের জন্য বাজার সংলগ্ন জায়গায় একটি গোসল খানা নির্মাণের প্রক্রিয়া অব্যাহত রয়েছে বলে জানান তিনি।