মতলব উত্তরে তুচ্ছ ঘটনায় রক্তাক্ত ৩

জাকির হোসেন বাদশা, মতলব (চাঁদপুর) : চাঁদপুরের মতলব উত্তরে সরকারি খালে ইউনিয়ন পরিষদ কর্তৃক নির্মিত ঘাটলা পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা নিয়ে তর্কের ঘটনায় ৩ জনকে মেরে রক্তাক্ত করে দিয়েছে মমিন সিকদার নামে এক প্রবাসী। গত ৩ মে উপজেলার বড় কিনাচক গ্রামে ঘটনাটি ঘটে। ঘটনার পরে আহতদের উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। এ ঘটনায় ওই গ্রামের ওয়াজকুরুনী বাদী হয়ে একই গ্রামের মমিন সিকাদার (৩৫), আমিন সিকাদার (৩২), মমিনের স্ত্রী বিভা আক্তার (২৭) ও আমিনের স্ত্রী সেলিনা আক্তার (২৪) কে বিবাদী করে থানায় মামলা দায়ের করেন।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ঘটনার দুই দিন আগে ওয়াজকুরুনী সরকারি ওই ঘটনায় গোসল করতে যান। গিয়ে ঘাটলায় ব্যাপক পরিমাণ ময়লা আর্বজনা দেখে আশপাশের লোকজনকে অবহিত করেন এবং যে নোংরা করবে তাকেই পরিস্কার করতে হবে বলে জানান। এ কথা শুনে ঘাটলার নিকটবর্তী বাড়ির বাচ্চু সিকদারের ছেলে মমিন সিকদার (৩৫) ওয়াজকুরুনীর উপর ক্ষিপ্ত হলে তর্ক বির্তক হয়। এর দুই দিন পরে ওয়াজকুরুনীর ছেলে সাব্বির (১৭) গোসল করতে গেলে মমিন ও আমিন তাকে অতর্কিত ভাবে ব্যাপক মারধর করেন।

এ ঘটনার সময় এগিয়ে গেলে একই গ্রামের রাজা খানের ছেলে জনি (২১), মজিদ মোল্লার ছেলে ফিরোজ (৩২) এগিয়ে গেলে তাদেরকেও মেরে রক্তাক্ত জখম করে মমিন ও তার ভাই আমিন সিকদার। সাব্বির ও জনির মাথায় মারাত্মক জখম ও রক্তপাত হয় এবং ফিরোজকে আঘাত করে তার বাম হাতের দুইটি হাড় ভেঙ্গে ফেলে।

আহত ফিরোজ বলেন, তারা অন্যায়ভাবে আমাদেরকে বেধরক মারধর করেছে। আমরা ওখানে মারপিট করার উদ্দেশ্যে যাইনি। ঘটনার খবর পেয়ে গিয়েছি। কিন্তু মমিন ও আমিন তারা দুই ভাই মিলে আমাদেরকে প্রাণে মেরে ফেলতে চেয়েছিল। আমরা মামলা করে আইনের আশ্রয় নেওয়ায় আমাদেরকে বাহিরাগত সন্ত্রাসী বাহিনী এনে মেরে ফেলবে ও বাড়ি ঘর ভাংচুর করতে বলে বিভিন্নভাবে হুমকি দিচ্ছে। আমরা এখন প্রাণের ভয়ে আছি।

আহত সাব্বির ও জনি বক্তব্য একই। তারা বলেন, এটা সরকারি ঘাটলা। সকলেই ব্যবহার করবে। কিন্তু কে বা কাহারা নোংরা করেছে তা নিয়ে ওয়াজকুরুনী কথা বলায় মমিন ও আমিন আমাদের উপর হামলা দিয়েছে। আমরা এখন প্রাণের ভয়ে আছি। তারা বিভিন্নভাবে হুমকি দিচ্ছে।

এদিকে ঘটনার পর থেকে মমিন ও আমিন দুই ভাই পলাতক রয়েছে। তবে তাদের প্রতিবেশী ও ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী একাধিক লোকজন জানান, তাদেরকে অন্যায়ভাবে মারধর করেছে। সরকারি ঘাটলা সবাই ব্যবহার করবে। আমার যে নোংরা করতে সে ই পরিস্কার করবে। তা নিয়ে যদি কেউ কথা বললে মার খেতে হয়, তাহলে আমরা কিভাবে গ্রামে বসবাস করবো।

স্থানীয় ইউপি সদস্য জসিম উদ্দিন বলেন, ঘটনাটি একটি মর্মান্তিক ও দুঃখজনক। যেহেতু মামলা হয়েছে তাই আইনগত ভাবে বিষয়টি শেষ হবে। তবে আমরা চেষ্টা করবো সামাজিকভাবে সুষ্ঠু সমাধান করা যায় কি না।

এদিকে মামলার হওয়ার পর এসআই হাবিব ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এ ব্যাপারে মতলব উত্তর থানার ওসি মো. নাসির উদ্দিন মৃধা বলেন, এ ঘটনায় মামলা হয়েছে। আসামী গ্রেফতার করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Print Friendly

Related Posts