বিডিমেট্রোনিউজ ডেস্ক ॥ সুপার সাইক্লোন আম্ফানের আঘাতে ক্ষতবিক্ষত হয়েছে খুলনার উপকূলীয় এলাকা। বিধ্বস্ত হয়েছে বিপুল সংখ্যক ঘরবাড়ি। বিশেষ করে কয়রা ও বটিয়াঘাটায় বাঁধ ভেঙ্গে বিস্তীর্ণ এলাকা বিলীন হয়ে গেছে। আম্ফান চলে গেলেও উপকূলে রেখে গেছে তার ‘ক্ষতচিহ্ন’।
এদিকে, ভারী বর্ষণ ও জোয়ারের পানি বেড়ে বাঁধ ভেঙে তলিয়ে গেছে বিভিন্ন এলাকার মাছের ঘের ও ফসলি জমি। এছাড়া হাজার হাজার গাছ উপড়ে পড়েছে। সড়কে গাছ পড়ে থাকায় যোগাযোগ ব্যবস্থা বন্ধ হয়ে গেছে।
অপরদিকে, খুলনার ৮১৪টি সাইক্লোন সেন্টারে আশ্রয় নেয়া ২ লাখ ৭ হাজার মানুষ বৃহস্পতিবার (২১ মে) সকাল থেকে নিজ নিজ আবাসে ফিরতে শুরু করেছেন।
খুলনা জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা আজিজুল হক জোয়ার্দ্দার জানান, খুলনায় ২ লাখ ৭ হাজার মানুষ ৮১৪টি সাইক্লোন সেন্টারে আশ্রয় নেন। ঘূর্ণিঝড়ে এখন পর্যন্ত কোনো মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়নি। অনেক ঘর-বাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। ভেঙেছে বেড়িবাঁধ। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের মাধ্যমে তথ্য পাওয়ার পর ক্ষয়ক্ষতির সঠিক পরিমাণ জানা যাবে।
বুধবার (২০ মে) সন্ধ্যায় প্রবল গতিতে খুলনাঞ্চলের উপকূলীয় এলাকায় আঘাত হানে আম্ফান। রাতভর চলে ঝড়ের তাণ্ডব। ঝড়ের তাণ্ডবে বুধবার সন্ধ্যা থেকে খুলনায় বিদ্যুৎ বিছিন্ন রয়েছে প্রায় সব এলাকায়। নগরীর বিভিণ্নস্থানে তার ছিড়ে ইন্টারনেট সংযোগও বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। তবে, বৃহস্পতিবার সকাল থেকে কিছু কিছু এলাকায় বিদ্যুৎ আসতে শুরু করে।
বাতাস ও পানির তোড়ে খুলনার কয়রা উপজেলার ১১টি জায়গায় বাঁধ ভেঙে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করেছে। এতে কয়রা সদর, উত্তর বেদকাশি, দক্ষিণ বেদকাশি, মহারাজপুর ইউনিয়ন প্লাবিত হয়েছে। প্রচুর পরিমাণে গাছ পালা, কাঁচা ঘর-বাড়ি, রাস্তা ও ফসলের ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে।
খুলনার কয়রা উপজেলার দক্ষিণ বেদকাশি এলাকার মো. আবু সাঈদ খান জানান, কয়রায় ৮টি পয়েন্ট দিয়ে বাঁধ ভেঙে পানি লোকালয়ে প্রবেশ করেছে। পয়েন্টগুলো হচ্ছে- দক্ষিণ বেদকাশি ইউনিয়নের আংটিহারা এলাকার নিরাঞ্জন ও মাজিদ গাজীর বাড়ি সামনে, ছোট আংটিহারা এলাকার বাকের গাজীর বাড়ির সামনে, গোলখালী গ্রামের তসলিম মোল্লার বাড়ির সামনে, চরামুখা খেয়াঘাট এলাকা, উত্তর বেদকাশি ইউনিয়নের গাজী পাড়া ও কাশির হাট খোলা এবং কয়রা সদর ইউনিয়নের হরিণখোলা এলাকা। এতে অনেকের বসত বাড়িতে পানি উঠেছে। কয়রার দক্ষিণ বেদকাশি ইউনিয়নের আংটিহারা স্লুইচ গেটের পূর্ব ও পশ্চিম পাশে এক কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ভেঙে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করেছে।
আশ্রয় কেন্দ্র থেকে বাড়ি ফেরা কয়রার রিয়াসাত আলী সানা, আব্দুল জলিল মোড়ল, আব্দুল হামিদ সরদার ও শারমিন বেগম জানালেন, ঝড়ে তাদের ঘর-বাড়ি ও গাছ-পালার ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। তবে, গরু-ছাগলের কোন ক্ষতি হয়নি।
অপরদিকে, বটিয়াঘাটার সুরখালী ইউনিয়নের বারোভূইয়া গ্রাম আম্ফানের আঘাতে প্লাবিত হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার সকাল থেকে বাঁধ নির্মাণের কাজ শুরু করেছেন এলাকাবাসী।