বিডিমেট্রোনিউজ ডেস্ক ॥ অন্তত ১০ হাজার ২০০ কোটি টাকা আত্মসাৎ করে বিদেশে পালিয়ে যাওয়া প্রশান্ত কুমার হালদার ওরফে পিকে হালদারের বান্ধবী অবন্তিকা বড়ালের ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
আজ বুধবার তাকে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ কে এম ইমরুল কায়েশের আদালতে হাজির করে দুদক। এ সময় মানি লন্ডারিং আইনে করা মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য তাকে তিন দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করে দুদক। শুনানি শেষে বিচারক তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এর আগে আজ বেলা ১২টার দিকে ধানমন্ডি এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। বিষয়টি নিশ্চিত করেন দুদকের পরিচালক (জনসংযোগ) প্রণব কুমার ভট্টাচার্য।
দুদক সূত্রে জানা গেছে, পিকে হালদারের সঙ্গে যোগসাজশে অসৎ উদ্দেশে অবৈধ ব্যবসা ও কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে জ্ঞাতআয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন ও মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগ অনুসন্ধানে করতে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাকে দুদকে আসতে বলা হয়।
এর আগে বাংলাদেশের পলাতক আসামি প্রশান্ত কুমার হালদারের বিরুদ্ধে গত শুক্রবার রেড নোটিশ জারি করে ইন্টারপোল। বাংলাদেশ পুলিশের ন্যাশনাল সেন্ট্রাল ব্যুরো (এনসিবি) অর্থাৎ ইন্টারপোলের ঢাকা শাখার অনুরোধে ইন্টারপোল এ রেড নোটিশ জারি করা হয়।
বাংলাদেশ পুলিশের ইন্টারপোল শাখা যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস ও সপোর্টিং এলিমেন্টস সহকারে ইন্টারপোল সদর দপ্তরে আবেদনটি পাঠায়। ইন্টারপোলের একটি বিশেষ কমিটি আবেদন ও এর সাথে সংযুক্ত ডকুমেন্টস ও কাগজপত্র পর্যালোচনা করে আবেদনটি অনুমোদন করে।
ইন্টারপোলের কেন্দ্রিয় ওয়েবসাইটে প্রকাশের পাশাপাশি সারাবিশ্বে বিভিন্ন দেশে ইন্টারপোলের শাখায়ও পাঠানো হয়েছে এ রেড নোটিশ। এটি আগামী পাঁচ বছরের জন্য জারি থাকবে। তবে প্রয়োজনে আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে মেয়াদ নবায়ন যোগ্য বলে জানা যায়।
রেড নোটিশে পলাতক আসামি প্রশান্ত কুমার হালদারের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন দায়ের করা দুর্নীতি দমন আইন, ২০০৪ এর ২১(১) ধারা এবং মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর ৪(২) ও ৪(৩) ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে।
চারটি নন-ব্যাংকিং আর্থিক প্রতিষ্ঠান (এনবিএফআই) থেকে প্রশান্ত কুমার হালদার ওরফে পিকে হালদার এবং তার সহযোগীদের আত্মসাৎ করা অর্থের পরিমাণ সবাইকে অবাক করে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট।
সম্প্রতি গণমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী তার আত্মসাৎকৃত অর্থের পরিমাণ আড়াই হাজার কোটি বা সাড়ে তিন হাজার কোটি। কিন্তু, তার সত্যিকারের আত্মসাৎকৃত অর্থের পরিমাণ আরও অনেক বেশি।
তদন্ত কর্মকর্তারা বলছেন, এখন পর্যন্ত তারা জানতে পেরেছেন যে পিকে হালদার অন্তত ১০ হাজার ২০০ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন।
তদন্ত কর্মকর্তারা জানান, পিকে হালদার ও তার সহযোগীদের মালিকানাধীন ৩০টি প্রতিষ্ঠান ব্যবহার করে এনবিএফআইয়ের কাছ থেকে ১০ হাজার ২০০ কোটি টাকা ঋণ নিয়ে আত্মসাৎ করে এবং এই অর্থ কানাডা, সিঙ্গাপুর ও ভারতে পাচার করে।