বিডিমেট্রোনিউজ ডেস্ক ॥ শিশুশিল্পী ছোট্ট দীঘি এখন পরিণত। উচ্চ মাধ্যমিক দ্বিতীয় বর্ষে পড়ছেন। গেল বছরই নায়িকা হিসেবে চলচ্চিত্রে কাজ শুরু করেছেন। টুঙ্গিপাড়ার মিয়াঁভাই এবং তুমি আছো তুমি নামে দুটি সিনেমা ইতোমধ্যে করে ফেলেছেন। আরও কয়েকটি সিনেমা তার হাতে।
এরমধ্যে শুটিংয়ে থাকা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বায়োপিক ‘বঙ্গবন্ধু’-তে পেয়েছেন কাজের সুযোগ। অভিনয় করছেন বঙ্গবন্ধুর স্ত্রী বেগম ফজিলাতুন্নেসা রেনুর চরিত্রে।
চলমান ‘বঙ্গবন্ধু’র শুটিংয়ে অংশ নিতেই গেল মাসে মুম্বাই গিয়েছিলেন দীঘি। দশ দিন ছিলেন সেখানে। প্রথম লটে তার অংশের শুটিং শেষ করে সম্প্রতি মুম্বাই থেকে দেশে ফিরেছেন এই অভিনেত্রী। ফিরেছেন নতুন অভিজ্ঞতা নিয়ে।
তিনি জানান, দশদিন মুম্বাই থাকলেও শুটিং করেছেন সাতদিন। তিনি বলেন, শুটিংয়ের আগে অনেকভাবে ব্রিফিং দেয়া হতো। বিভিন্নভাবে বিফ্রিং দেয়ার পর যেভাবে উপস্থাপন করলে ভালো লাগবে সেভাবেই কাজ করতাম। দীঘি বলেন, মুম্বাইয়ে শুটিং সিস্টেম বাংলাদেশের থেকে একেবারে আলাদা। খুব বড় পরিসরে আয়োজন, তারা কাজের প্রতি অনেক সিরিয়াস। যেমন তারা শুটিংয়ে ফান করেন, তেমনি সিরিয়াস হয়ে বেস্ট কাজ না আসা পর্যন্ত চেষ্টা করে যান। যে কোনোভাবেই বেস্ট কাজ আদায় করেন।
শুটিংয়ের অভিজ্ঞতা নিয়ে দীঘি বলেন, মুম্বাই ফিল্ম সিটির দাদা সাহেব ফালকে স্টুডিওতে আমাদের শুটিং হয়েছে। পরিচালক শ্যাম বেনেগাল স্যারকে আমি খুব ভয় পাই। কখন বকা খাব বারবার এই চিন্তা হচ্ছিল। আমি ভীষণ নার্ভাস ছিলাম। কিন্তু আমার সঙ্গে মিশে উনি নার্ভাসনেস কমিয়ে দেন। আমাকে এমনভাবে ব্রিফ্রিং দেয়া হতো কথা মতো ক্যামেরার সামনে গিয়ে অভিনয় করলে কখন যে এক্সপ্রেশনের মাধ্যমে প্রকৃত অভিনয় চলে এসেছে নিজেও বুঝিনি। তাদের ব্রিফিংটা সত্যি অন্যরকম। আমি কোনোদিনই ভুলবো না।
তিনি আরো বলেন, শ্যাম বেনেগাল স্যারের সঙ্গে দয়াল নেহালিনী এবং অতুল তিওয়ারী স্যার এই তিনজন ব্রিফ্রিং দিতেন। এত চমৎকার বিফ্রিং আগে কখনো কোথাও পাইনি। ওটা শুনলেই হালকা অনুভব হতো। মনে হতো, এবার আমি পারবো।
মার্চের শেষ সপ্তাহের দিকে আবার শুটিংয়ে মুম্বাইতে অংশ নেয়ার কথা জানালেন ‘চাচ্চু’, ‘এক টাকার বউ’ খ্যাত শিশু শিল্পী দীঘি। তিনি বলেন, শুটিংয়ের অভিজ্ঞতা কখনো ভুলবো না। ওখানে চঞ্চল আঙ্কেল (চঞ্চল চৌধুরী), আরিফিন শুভ ভাইয়া ছাড়া আমাকে দীঘি নামে কেউ ডাকেনি। ইন্ডিয়ান সবাই আমাকে প্রার্থনা নামে ডাকতেন। সাড়ে পাঁচটা থেকে ছয়টার মধ্যে উঠে শুটিংয়ে যেতাম। সন্ধ্যার আগে আমাদের শুটিং শেষ হত। চঞ্চল অ্যাঙ্কেল, শুভ ভাইয়া এবং সংগীতা আন্টির সঙ্গেই সেটে আমার বেশি কাজ হয়েছে।
দেড় মাসে হাতে সময় আছে দীঘির। কিছু কাজ হাতে জমে আছে তার। সেগুলো ধরবেন। সবশেষে দীঘি বলেন, বঙ্গবন্ধুর বায়োপিকের জন্য বাঘা বাঘা শিল্পীরাও অডিশন দিয়েছেন। কিন্তু সুযোগ পেয়েছেন কয়েকজন। আমি যখন অডিশন দেই তখনও সিনেমায় কামব্যাক করিনি। আমার যোগ্যতা বিচার করেই কর্তৃপক্ষ নির্বাচন করেছেন। এটা অনেক বড় প্রাপ্তি মনে করি।
দীঘি বলেন, এই সিনেমা দিয়ে তারকা হতে পারবো না, তবে ইতিহাসের পাতায় আমার নাম থাকবে। জানিনা আমি অভিনয় দিয়ে কতটুকু সমৃদ্ধি করতে পারবো, তবে আমার নামটা ইতিহাসের পাতায় লেখা থাকবে। তাই আমার আর কোনো আক্ষেপ নেই।