জ.ই বু্লবুল: ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার কৃষ্ণনগর ইউনিয়নের গৌরনগর গ্রামে সোমবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) দিবাগত রাতে মিলন সরকার (৮০) নামে এক প্রবীণ গ্রাম্য সর্দারকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছে।
গ্রামের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে আধিপত্যের জের ধরে প্রতিপক্ষের বিক্ষুব্ধ লোকজন ওই সর্দারের দুই চোখ উপড়ে ফেলে, জিহ্বা কেটে মধ্যযুগীয় কায়দায় তাকে নৃশংসভাবে খুন করে। এ ঘটনার পর পুরো এলাকায় আবারও দুই গোষ্ঠীর মধ্যে বড় ধরনের সংঘর্ষের আশংকায় পরিস্থিতি চরম উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে।
তবে যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবেলায় একজন ইন্সপেক্টরের (তদন্ত) নেতৃত্বে একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে অবস্থান করছে বলে জানিয়েছেন নবীনগর সার্কেলের দায়িত্বে থাকা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মকবুল হোসেন।
পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে আরো জানা যায়, গৌরনগর গ্রামে দীর্ঘদিন ধরে আজইরা বাড়ি ও সরকার বাড়ি নামের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে গ্রাম্য আধিপত্য নিয়ে বছরের পর বছর ধরে বিরোধ ও বারবার সংঘর্ষ চলছিল। গ্রাম্য দলাদলি নিয়ে এই দুই গোষ্ঠীর মধ্যে মারামারির ঘটনায় এ পর্যন্ত একাধিক খুনের ঘটনাও ঘটে। এর মধ্যে গত দুই বছরেই চারটি খুনের ঘটনা ঘটে।
এলাকাবাসী জানান, ঘটনার দিন সোমবার রাতে গৌরনগর গ্রামে অনুষ্ঠিত একটি ওয়াজ মাহফিলে আজইরা বাড়ির সানাউল্লাহ নামের এক যুবক যোগ দিতে গেলে সরকার বাড়ির কয়েকজন তাকে একা পেয়ে বেধড়ক মারধর করে। এ সংবাদ পেয়ে আজইরা বাড়ির লোকজন উত্তেজিত হয়ে সরকার বাড়ির লোকজনের ওপর সশস্ত্র হামলা চালায়। এসময় রাত আনুমানিক ১০টার দিকে নিজের জীবন বাঁচাতে সরকার বাড়ির প্রবীণ সর্দার মিলন সরকার পাশের গ্রামে (শ্বশুর বাড়ি) পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে তাকে পথিমধ্যে একা পেয়ে তার ওপর নৃশংস হামলা চালায় বিক্ষুব্ধ আজইরা বাড়ির লোকজন। এসময় মধ্যযুগীয় কায়দায় মিলন সর্দারের দুটি চোখ উপড়ে ফেলে তাকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এ খুনের ঘটনা গ্রামে প্রচার হলে রাতেই পুরো এলাকা চরম উত্তপ্ত হয়ে উঠে।
খবর পেয়ে নবীনগর থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) রুহুল আমীন একদল পুলিশ নিয়ে ঘটনাস্থলে অবস্থান করছেন।
জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মকবুল হোসেন রাতেই জানান, মাহফিলে যাওয়ার পথে এক যুবকের ওপর হামলাকে কেন্দ্র করে গ্রামের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে আধিপত্যের লড়াইয়ের এই সংঘর্ষে একজন সর্দার নৃশংসভাবে নিহত হন। বর্তমানে ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন আছে। পরিস্থিতি এখন পুলিশের নিয়ন্ত্রণে। খুনের ঘটনায় যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত কোন মামলা বা কেউ গ্রেফতার হয়নি।