সফল অভিনেতা হবার স্বপ্ন দেখেন অজিত দাস

আহমেদ সাব্বির রোমিও : অজিত দাস একজন সফল অভিনেতা হবার স্বপ্নটাকে পুষে রেখেছিলেন মনের মাঝে সেই ছোটবেলা থেকেই। স্কুল ও কলেজ জীবনে পেয়েছেন অসংখ্য পুরস্কার। এর মাঝে উল্লেখযোগ্য ছিলো জাতীয় শিশু পুরস্কার প্রতিযোগিতা, জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহ প্রতিযোগিতা। উপজেলা থেকে জাতীয় পর্যায়ে তার স্বীকৃতিস্বরূপ পেয়েছেন অসংখ্য প্রশংসাপত্র এবং মেডেল।

অভিনেতা অজিত দাস বলেন, আমার শৈশব কৈশোর কেটেছে সিলেটের হবিগঞ্জে তখন থেকেই বিভিন্ন প্রোগ্রামে কবিতা আবৃত্তি, বিতর্ক প্রতিযোগিতা, শিশু থিয়েটার, মঞ্চ নাটক করতাম। নবম শ্রেণীতে উঠার পর আমার জীবনটা একটু বদলে যায় একরকম ধ্বংসই হয়ে গিয়েছিলো আমার শৈল্পিক চিন্তা-চেতনা। পারিবারিকভাবে কেউ চাইত না আমি সংস্কৃতিক অঙ্গনের সঙ্গে জড়িত থাকি। মোটামুটি এলাকার একটা সম্ভ্রান্ত এবং শিক্ষিত পরিবারের সন্তান ছিলাম। পড়ালেখাতেও একরকম ভালোই ছিলাম। যে কারণে পরিবার এবং স্কুল শিক্ষকরা আমাকে এসব কিছু বাদ দিয়ে পড়ালেখায় বেশী মনোনিবেশ করতে বলেন কিন্তুু আমার মনতো পরে রয়েছে নাটক থিয়েটার এইসব নিয়ে। এক পর্যায়ে পড়ালেখা বাদ দিয়ে বাসা থেকে পালিয়ে যাত্রাপালা শুরু করি। যা কখনোই আমার পরিবার মেনে নিতে পারেনি। কারণ আমাকে নিয়ে আমার মা- বাবার অনেক আশা ছিলো। আমি এই সব বাদ দিয়ে শিক্ষিত মানুষ হয়ে সরকারি চাকরি করি। তারপর হঠাৎ জোর করেই আমার মেজো ভাই আমাকে যাত্রাপালার দল থেকে বলতে গেলে এক ধরনের টেনেহিঁচড়ে আমাকে বাসায় নিয়ে আসে।

পরবর্তীতে এলাকার কাদিরগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ে জোর করে আবারো ভর্তি করানো হলো অজিত দাসকে। এসএসসি ও এইচএসসিতে ভাল রেজাল্ট করলেন। তারপরে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্ভুক্ত বৃন্দাবন সরকারী কলেজে বাংলায় অনার্সে পড়াশুনা করেন অভিনয় পাগল এই মানুষটি। আর মাঝে মাঝে সুযোগ পেলেই বিভিন্ন প্রোগ্রামে কবিতা আবৃত্তি, অভিনয়ে অংশ নেন। অল্পদিনের মধ্যেই মফস্বল শহরে বেশ একটা পরিচিত লাভ করেন তিনি। এক সময় কবিতা-গল্পও লিখতেন। তার লেখা কবিতা-গল্প স্থানীয় ও জাতীয় বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় ছাপা হতে শুরু করলো। আস্তে আস্তে পরিবারের মন-মানসিকতা পাল্টাতে লাগলো। এরপর থেকে পরিবারের সম্মতিতেই মঞ্চে এবং টেলিভিশনে অভিনয় শুরু করেন তিনি। এরই মধ্যে একটা সরকারি চাকরিও পেয়ে যান। শুরু হয় কর্ম জীবন।

অজিত দাস বলেন, পেশাগত জীবনে কর্মব্যস্ততার কারণে বলতে গেলে আমার শিল্পচর্চা একদম থেমেই গিয়েছিলো। প্রায় দীর্ঘ ২০ বছর পর আবার নাটকে অভিনয় করার শখ জাগলো, অবসর সময় বা ছুটির দিনগুলিকে স্যুটিং এর জন্য বাছাই করে নেই।

এরই মধ্যে চিত্রনায়িকা নাসরীনের সাথে জুটি বেঁধে “ভাইয়ের প্রতিদান” নামে একটা স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রে করেন তিনি ৷ তারপর নাটক “বিজয়ের পতাকা” “জীবনের বাস্তবতা” তে অভিনয়। মিউজিক্যাল ফ্লিম করেছেন বেশ কয়েকটি। সর্বশেষ আলী আজাদ রচিত বাস্তবমুখী একটি গল্প অবলম্বনে এই প্রজন্মের তরুণ পরিচালক আকতারুল আলম তিনুর পরিচালনায়- “চাঁদের আলো” নামে একটা টেলিফিল্মে জনপ্রিয় অভিনেত্রী লারা লোটাস সাথে জুটি বেঁধে কাজ করেন।

অজিত দাস বলেন, অভিনয়টা আমার স্বপ্ন, পেশাগত দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি আমি অভিনয়টাকেও চালিয়ে নিয়ে যেতে চাই। অবসর গ্রহণ শেষে পুরোমাত্রায় অভিনয় নিয়ে যুদ্ধ করবো। আমি চাই একজন সফলঅভিনেতা হতে।

Print Friendly, PDF & Email

Related Posts