খান মাইনউদ্দিন, বরিশাল : মাহিন্দ্রা গাড়ি থেকে যাত্রী নামানোর ঘটনার সূত্র ধরে বাসের চাকার হাওয়া ছেড়ে দেওয়ার প্রতিবাদে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ৮টি রুটে বাস ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে শ্রমিকরা।
মঙ্গলবার (২৩ মার্চ) সকাল থেকেই বরিশাল-ঝালকাঠি-পিরোজপুর জেলার সবগুলো রুটে বাস চলাচল বন্ধ করে দেয়। বরিশাল বাস মালিক সমিতির সভাপতি ইমান আলী কালু জানান, সড়কে থ্রি-হুইলার চলাচলে নিষেধাজ্ঞা থাকলেও বরিশাল থেকে ঝালকাঠি রুটে কিছু দুস্কৃতিকারী থ্রি-হুইলার মাহিন্দ্রা চলাচল অব্যাহত রেখেছে। গতকাল ঝালকাঠি বাস মালিক সমিতি থ্রি-হুইলারে চেক বসালে বরিশাল রূপাতলীর বাসিন্দা সুমন মোল্লা নামে একজনের একটি মাহিন্দ্রা থেকে যাত্রী নামিয়ে রাখে বলে শুনেছি। সেই সূত্র ধরে রূপাতলী বাসস্ট্যান্ডে আজ (মঙ্গলবার) সকালে ঝালকাঠি রুটের সবগুলো বাসের চাকার হাওয়া ছেড়ে দেয়, শ্রমিকদের মারধর করে সুমন মোল্লা। এর প্রতিবাদে ঝালকাঠি মালিক সমিতি বাস চলাচল বন্ধ করে দেয়। আমরা রূপাতলী বাস মালিক সমিতি তাদের কর্মসূচির সাথে একাত্মতা পোষণ করেছি।
রূপাতলী বাস-মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক কাওছার হোসেন শিপন বলেন, সুমন মোল্লার অরাজকতার কারনে এই ঘটনা ঘটেছে। এই হামলাকারীকে আইনের আওতায় না আনা পর্যন্ত ও সড়ক থেকে থ্রি-হুইলার চলাচল বন্ধ না করা পর্যন্ত আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাবো।
তবে অভিযুক্ত সুমন মোল্লা বলেন, বাস মালিক সমিতির লোকজনদের আমরা কেউ মারধর বা হামলা চালাইনি। বরংছ তারাই আমাদের মাহিন্দ্রা শ্রমিকদের মারধর করেছে, গাড়ি আটকে রেখেছে। এই ক্ষোভে মাহিন্দ্রা শ্রমিকরা রূপাতলী বাসস্ট্যান্ডে ঝালকাঠির একটি বাসের চাকার হাওয়া ছেড়ে দেয়।
ঝালকাঠি বাস মালিক সমিতির লোকজনের মারধরের শিকার মাহিন্দ্রা চালক নজরুল ইসলাম বলেন, ঝালকাঠি রুটের সর্বশেষ বাস বিকেল সাড়ে ছয়টায় রূপাতলী থেকে ছেড়ে যায়। আমি রূপাতলী থেকে সন্ধ্যা সাতটায় একজন রোগী নিয়ে রাজাপুর উপজেলার মিরের হাট নামক স্থানের দিকে রওয়ানা হই। সাড়ে সাতটার দিকে ষাটপাকিয়া স্থানে ঝালকাঠি বাস মালিক সমিতির লোকজন মাহিন্দ্রা থামিয়ে যাত্রী নামিয়ে দেয়। এসময়ে তারা আমাকে লাঠি দিয়ে পিটিয়ে মারধর করেন।
নজরুল বলেন, শুধু আমি না এমন আরো অনেকের সাথে অত্যাচার চালায় বাস মালিক সমিতি। আমরা ক্ষিপ্ত হয়ে বাসস্ট্যান্ডে ঢুকে ঝালকাঠি রুটের একটি বাসের একটি চাকার হাওয়া ছেড়ে দিয়েছি। এর বেশি কিছু করিনি।
এ বিষয়ে ঝালকাঠি বাস মালিক সমিতির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন আহমেদ বলেন, মহাসড়কে বাস চলাচলে শ্রমিকদের নিরাপত্তা না দেওয়া পর্যন্ত বাস চলাচল বন্ধ থাকবে। রূপাতলীতে আজ বাস শ্রমিকদের মারধর করা হয়েছে, গাড়ির হাওয়া ছেড়ে দেওয়া হয়েছে; ব্যাটারি খুলে নিয়ে গেছে দুর্বৃত্তরা। এর প্রতিবাদে শ্রমিকরা আন্দোলনের ডাক দিয়েছে।
নাসির উদ্দিন বলেন, পশ্চিমাঞ্চলীয় ৮টি রুটে বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে।