জ.ই বু্লবুল: চিত্রনায়ক আলমগীর ব্রাম্মণবাড়ীয়ার নবীনগরের সন্তান। জন্মভূমির প্রতি সবারই আছে আলাদা টান। সেই টান থেকেই তিনি এবার নিজ জন্মভূমি নবীনগরে শ্রীরামপুর ইউনিয়নের গোপালপুর গ্রামে মসজিদ গড়লেন।
সোমবার (২৬ এপ্রিল) সেই মসজিদেই ইফতারের পর বিশেষ দোয়া মোনাজাত করেন এলাকাবাসী।
তার মৃ্ত্যুর গুজব ছড়াচ্ছে কারা। মুঠোফোনে কথা হয় মহানায়কের সঙ্গে, তিনি বলেন আল্লাহর দয়ায় এখন পর্যন্ত ভালো বোধ করছি। এসময় দেশবাসীর নিকট খাস করে দোয়া চেয়েছেন তিনি।
বাবা কলিম উদ্দিন আহম্মেদ ওরফে দুদু মিয়া ছিলেন প্রথম শ্রেণির ঠিকাদার । যুবক অবস্থায় পড়াশোনা শেষ করে ঢাকায় স্থায়ী হয়েছিলেন তিনি। পরে বিয়ে করে পরিবার নিয়ে ঢাকাতেই বসবাস শুরু করেন দুদু মিয়া। জাইটের গোষ্ঠীর ছেলে দুদু মিয়ার ঘরে ১৯৫০ সালে ৩ এপ্রিল জন্মগ্রহণ করেন মহিউদ্দিন আহমেদ আলমগীর। তিনিই আজকের চিত্রনায়ক আলমগীর।
নবীনগরের গোপালপুরের সন্তান নায়ক আলমগীরকে কোনোদিন দেখেননি তার এলাকার নতুন প্রজন্মের কেউ। তারা শুধু সিনেমা-টিভিতেই দেখেছেন নায়ক আলমগীরকে। মুরুব্বীদের মুখে শুনেছেন আলমগীরের পরিবারের ইতিকথা।
আলমগীরের জায়গার পাশের বাড়ির রাবিয়া খাতুন নামের এক বৃদ্ধা বলেন, নায়ক আলমগীররা তিন ভাই ও দুই বোন। বড় এক বোনের পরই আলমগীর। ভাইদের মধ্যে আলমগীরই বেঁচে আছেন, বাকি দুই ভাই মারা গেছেন।
তিনি আরও বলেন, নায়ক আলমগীরের চাচা-চাচাতো ভাইয়েরা ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা। মুক্তিযুদ্ধের সময় রাজাকারেরা তাদের ৮ চালা বিশাল ঘরে আগুন জ্বালিয়ে দেয়। সেই ঘরটি আর পুণর্নির্মাণ করেননি কেউ৷ পড়ে রয়েছে একেবারে খালি জায়গা।
ওই ঘটনার পর আলমগীরের পরিবারের সদস্যরা রাজধানীতে চলে যান। দীর্ঘদিন আগে তিনি এসেছিলেন গ্রামের বাড়ি দেখতে। তখন তিনি পৈতৃক ৯০ শতাংশ কোনি জমি বিক্রয় করে স্থানীয় বাজারে মসজিদ নির্মাণ করে দিয়ে গেছেন।
সম্পর্কে আলমগীরের ভাতিজা খায়েশ মিয়া বলেন, আলমগীর কাকা প্রতিবছর ঈদে এলাকার বাড়ি বাড়ি অর্থ সহায়তা পাঠান। এখানেতো তাদের খালি জায়গা ছাড়া কিছুই নেই। তাদের পরিবারটি ছিল খাঁটি মুক্তিযোদ্ধার পরিবার। মুক্তিযুদ্ধের সময় রাজাকাররা তাদের বাড়ি আগুনে পুড়িয়ে দিয়েছিল। এরপর তারা ঢাকায় স্থায়ী হয়ে যান। সর্বশেষ তিনি যখন এসেছিলেন, স্থানীয় বাজারের একটি মসজিদ তৈরি করে গেছেন।
গোপালপুর বাজারের মসজিদ কমিটির সাধারণ সম্পাদক সৈয়দুজ্জামান বলেন, ২০০২ সালে নায়ক আলমগীর নিজস্ব অর্থায়নে বাজারের মসজিদটি দুইতলা করে গেছেন। তিনি এলাকায় না আসলেও কিছুদিন আগে ৫০ হাজার টাকা সহায়তা পাঠিয়েছেন। এলাকাবাসীর খোঁজ খবর নেন। গ্রামের কেউ ফোন দিলে তিনি কথা বলেন।