নলছিটিতে বাবার বিরুদ্ধে ছেলে, স্বামীর বিরুদ্ধে স্ত্রী প্রার্থী!

খান মাইনউদ্দিন, বরিশাল: বাবার বিরুদ্ধে ছেলের লড়াই, আবার স্বামীর বিরুদ্ধে লড়ছেন স্ত্রী। একই ইউনিয়নে এই চার প্রার্থী চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। আগামী ২১ জুন ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার দপদপিয়া ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ভোটযুদ্ধে দেখা যাবে তাদের।

এই ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন ৭ জন। ইভিএম মেশিন ব্যবহারের মাধ্যমে এ ইউনিয়নে ভোট গ্রহণ হবে। নলছিটি উপজেলার মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ইউনিয়ন এটি। তাই এ ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনের দিকেও রয়েছে সবার চোখ। দপদপিয়া ইউনিয়নে কে হবেন চেয়ারম্যান সেদিকে তাকিয়ে আছেন ১৮ হাজার ৯০০ ভোটার।

রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, আগামী ২১ জুন অনুষ্ঠিতব্য নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন নৌকা প্রতীক নিয়ে বর্তমান চেয়ারম্যান ছোহরাব হোসেন বাবুল মৃধা। তার পরিবারের আরো দুজন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন এই পদে। আনারস প্রতীক নিয়ে তার ছেলে সাদ্দাম হোসেন আকিব ও অটোরিকশা প্রতীক নিয়ে মামাতো ভাই গোলাম হোসেন। যদিও বাবুল মৃধা ছাড়া অন্য দুজন সাজানো (ডামি) প্রার্থী বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

এদিকে দলের বিদ্রোহী প্রার্থী (সতন্ত্র) হিসেবে মাঠে রয়েছেন ঘোড়া প্রতীক নিয়ে মিজানুর রহমান হাওলাদার। একই পদে তার স্ত্রী সুমনা রহমান লড়ছেন মোটরসাইকেল প্রতীক নিয়ে। তিনিও সাজানো (ডামি) প্রার্থী বলে জানা গেছে। প্রকৃতপক্ষে এই তিন প্রার্থী শুধু নামেই, থাকবেন না ভোটের মাঠে।

এ ছাড়াও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের হাতপাখা প্রতীকে কাঞ্চন আলী খান ও সতন্ত্র প্রার্থী বজলুর রহমান হাওলাদার প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। উপজেলা ১০টি ইউনিয়নের মধ্যে দপদপিয়া ইউনিয়নেই চেয়ারম্যান প্রার্থীর সংখ্য বেশি।

স্থানীয়রা বলেন, বাবা-ছেলে এবং স্বামী-স্ত্রী প্রার্থী হয়েছে, যদি বাছাইতে কেউ বাদ পড়েন এই ভয়ে। একজন বাদ পড়লে যেন আরেকজন থাকে। কারো মতে, তাদেরকে ভবিষ্যৎ নির্বাচনের জন্য তৈরি করা হচ্ছে।উত্তর জুরকাঠি এলাকার গিয়াসউদ্দিন খান বলেন, প্রার্থী যারা হয়েছেন, তাদের মধ্যে যোগ্যতাসম্পন্ন ব্যক্তি আছেন। আমরা একজন সৎ, যোগ্য ও ভালো মানুষকে ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করতে চাই। এ জন্য নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবি জানাচ্ছি।

স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী মিজানুর রহমান হাওলাদার বলেন, ভোট সুষ্ঠ হতে হবে। বহিরাগত কোনো সন্ত্রাসী যেন এলাকায় প্রবেশ করতে না পারে সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে রিটার্নিং কর্মকতার। মানুষ যেন ২১ জুন কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিতে পরে, এটাই আমার কামনা। আমার স্ত্রী প্রার্থী হলেও আমার পক্ষেই কাজ করবেন।

নৌকা প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী ছোহরাব হোসেন বাবুল মৃধা বলেন, নির্বাচনের প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছি। এখানকার জনগণ শান্তিপ্রিয়, তারা ভদ্র ও ভালো মানুষকে চায়। আমি সততার সঙ্গে টানা দুই দফায় চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে জনকল্যাণে কাজ করেছি। আশাকরি, জনগণ আমাকে আবারো নির্বাচিত করবেন। আমার ছেলে ও মামাতো ভাই প্রার্থী হলেও তারা আমার পক্ষে কাজ করবেন।

Print Friendly

Related Posts