খান মাইনউদ্দিন, বরিশাল : প্রচন্ড বৃষ্টির সহযোগীতায় করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে সাতদিনের কঠোর বিধিনিষেধের প্রথম দিন বেশ সুনসান নিরবতাই ছিলো গোটা নগরীজুড়ে। তবে প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোথাও কঠোর আবার কোথাও ঢিলেঢালা অবস্থা লক্ষ্য করা গেছে।
নগর কেন্দ্রীক দু-একটি সড়কে যাচাই-বাছাই করে গাড়ি ছাড়া হলেও, অন্য সব সড়কে নির্দ্বিধায় চলেছে গাড়ি। পুলিশের কঠোরতাও ওই দু-একটি সড়কেই সীমাবদ্ধ ছিলো। তবে বিধি নিষেধ অমান্য করায় বেশ কয়েকজনকে ৭ হাজার ৬শ টাকা জরিমানা করেছে জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালত।
এছাড়া প্রথম দিনেই বরিশালে টহল দিয়েছে সেনাবাহিনী ও বিজিবি সদস্যরা। বৃহস্পতিবার বরিশাল নগরীর সদর রোড, কাকলির মোড়, সাগদী পোলসহ কয়েকটি এলাকা ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।
নগরীর বিভিন্ন স্থানের চিত্র:
নিষেধ থাকা সত্বেও নগরীর কয়েকটি স্থানে অটোরিকশা, মাহিন্দ্রা চলাচল করতে দেখা গেছে। অনেক জায়গায় দেখা গেছে রিকশা থামিয়ে যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। যৌক্তিক কারণ থাকলে কাউকে আটকানো হচ্ছে না। তবে মোটরসাইকেলগামী যাত্রীদের সতর্ক করা হচ্ছে। দুইজন যাত্রী নিয়ে চলাচল করলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। সড়কে গাড়ি বা সিএনজি নিয়ে বের হওয়া অধিকাংশ মানুষই হাসপাতালে রোগী থাকার কারণ দেখাচ্ছেন। সত্যতা যাচাই করে সহজে ছাড়াও পাচ্ছেন তারা। কেউ কেউ মিথ্যার আশ্রয় নেয়ার চেষ্টা করছেন বলেও অভিযোগ দায়িত্বরত পুলিশ কর্মকর্তাদের। বাইকে দুইজন যাত্রী চলাচল নিষেধ থাকলেও চলাচল করছেন অনেকে।
দায়িত্বরত এক পুলিশ কর্মকর্তা জানান, সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা আমাদের দায়িত্ব পালনের চেষ্টা করছি। কেউ যৌক্তিক কারণে বের হলে আমরা যেতে দিচ্ছি। তবে কারণ ছাড়া তেমন কেউ বের হচ্ছেন না। আমরা গাড়িগুলো থামিয়ে যাচাই-বাছাই করছি।
অন্যদিকে নগরীর চরকাউয়া খেয়াঘাট সংলগ্ন কাঁচা বাজারেও দেখা গেছে প্রতিদিনের মতই মানুষ বাজারে এসেছে। অধিকাংশ মানুষের মুখেই ছিলো না মাস্ক।এছাড়া ও পোর্ট রোড মৎস বাজারেও ছিলো মানুষের উপচেপড়া ভিড়। স্বাস্থ্য বিধির লেশমাত্র ছিলো না হাজারো মানুষের এই বাজারে। প্রশাসনেরও ছিলো না কোন কঠোরতা।
এদিকে সকাল ১১টার দিকে বরিশাল জেলা প্রশাসক মো. জসীম উদ্দীন হায়দয় প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের নিয়ে নগরীর বিভিন্ন সড়ক পরিদর্শন করেন। এসময় তিনি বলেন, আমরা গত অনেক দিন যাবত মাস্ক বিতরণসহ স্বাস্থ্যবিধি মানতে প্রচার-প্রচারণা চালিয়েছি। আর কোন মাস্ক বিতরণ নয়। এখন থেকে কঠোরভাবে দায়িত্ব পালন। জেল-জরিমানা করা হবে এখানে কোন ছাড় দেয়া হবে না।
নগরী ও বিভিন্ন উপজেলায় লকডাউন বাস্তবায়নে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেটের নেতৃত্বে বিশ জন ম্যাজিষ্ট্রেট দায়িত্ব পালন করছেন। এছাড়া টহল দিচ্ছেন ৩ প্লাটুন সেনাবাহিনী ও ২ প্লাটুন বিজিবি সদস্য।