মোকাম্মেল হক মিলন, ভোলা: সিলেটের ছাতক বা সুনামগঞ্জ থেকে বালু, পাথর বা অন্যান্য মালামাল নিয়ে হাতিয়া হয়ে চট্টগ্রাম যাওয়ার পথে ভোলার ইলিশা এলাকার মেঘনা নদীতে অদক্ষ লাইনম্যান দেয়ার নামে চাঁদাবাজির অভিযোগ উঠেছে। অদক্ষ লইনম্যান জোর জবরদস্তি করে দেয়ার কারনে গত একসপ্তাহে হাতিয়ার মোহনায় ৭টি জাহাজ ডুবে গেছে বলে দাবি করা হয়।
এর ফলে এই রুটে কোনো জাহাজ মালিক জাহাজ পাঠাতে বা ভাড়া দিতে অনিহা প্রকাশ করছেন। সোমবার (৫ জুলাই) দুপুরে ভোলার তুলাতলি মাছঘাটে অনুষ্ঠিত এক সাংবাদিক সম্মেলনে এমন অভিযোগ করেন বাংলাদেশ কার্গো ট্রলার বাল্কহেড শ্রমিক ইউনিয়নের তুলাতলি শাখার সাধারণ সম্পাদক আসলাম গোলদারসহ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। এসময় তারা তাদেরকে এসব জাহাজে লাইনম্যান দেয়ার জন্য একমাত্র ভোলার বৈধ সংগঠন বলে জানান।
তিনি অভিযোগ করেন, মালামাল নিয়ে কার্গোগুলে ভোলার ইলিশা রাজাপুর এলাকার মেঘনা নদীতে প্রবেশ করলেই ওই এলাকার একটি গ্রুপ ভূইফোর কিছু সংগঠনের নামে লাঠিসোঠা নিয়ে কার্গোতে গিয়ে উঠে এবং নদীপথ চিনিয়ে দেয়ার জন্য লাইনম্যান লোক নিয়োগ দেয়ার জন্য কার্গো স্টাফদেরকে চাপ প্রয়োগ করে। অনভিজ্ঞ এসব লোক হাতিয়া বা চট্টগ্রাম গিয়ে কার্গো থেকে নেমে যাবে এবং ১০ হাজার টাকা পারিশ্রমিক দিতে হবে। কোন কার্গোর স্টাফরা এধরণের লোক নিতে না চাইলে মারধর করার অভিযোগও রয়েছে।
তিনি আরো অভিযোগ করে বলেন, আমরা দক্ষ লাইনম্যান দিতে গেলে বা জাহাজ মালিকরা আমাদের কাছে থেকে দক্ষ লাইনম্যান নিতে গেলে তাদেরকে বিভিন্ন জায়গা থেকে হত্যার হুমকি দেয়া হয়। আমরা এবিষয়ে ভোলা পুলিশ সুপারের সাথে দেখা করে কথা বলেছি। তিনি আমাদেরকে এর একটা সুরাহ করবেন বলে দু-দিনের সময় নিয়েছেন। তবে এসব চাদাবাজদের পক্ষ হয়ে ভোলা সদর থানায় এসআই ইমাম নামে একজন পুলিশ তুলাতলি এসে আমাকে গালিগালাজ করেন এবং ইলিশার লোকজন এসব জাহাজে লাইনম্যান দিবে যতদিন যাবত পুলিশ সুপার সিদ্বান্ত না দেন তা জানিয়ে গেছেন বলেন এমন অভিযোগ করেন তিনি।
সংগঠনের সভাপতি লাল মিয়া মাঝি অভিযোগ করেন, কার্গোগুলোকে নিরাপদে রুট চিনিয়ে দেয়ার নাম করে মূলত নীরব চাদাবাজি করা হচ্ছে। গত ৩রা জুলাই এদের দেয়া লোকেরা ভুল পথে নেয়ায় ৪ টি কাল্কহেড ডুবির ঘটনা ঘটেছে। তিনি জানান, এমভি ফাহাদ নামের বাল্কহেডটিতে বুদ্ধি মাঝি, সৈয়দ মিয়ান শাহতে রুবেল মাঝি, এমভি এমরান জোনায়েদ নামের বাল্কহেডটিতে সিরাজ মাঝিকে দেয়া হয়েছিল। অনভিজ্ঞ এসব লোক ভুলপথে নেয়ার বাক্লহেডগুলো দুর্ঘটনার শিকার হয়ে ডুবে যায়। এসব কার্গো ডুবির ঘটনায় থানায় জিডি করা হয়েছে বলেও তিনি জানান।
সংবাদ সম্মেলনে তারা আরও জানান, এসব চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে ৪ঠা জুলাই বাল্কহেড মালিকদের পক্ষে অভিযোগ করা হলে ভোলা সদরের ইলিশা নৌপুলিশ দুজনকে আটক করে। পরে তারা আর জাহাজে গিয়ে চাদাবাজি করবে না বলে মুচলেকা আসে। প্রশাসনের কাছে অনতিবিলম্বে এই চাদাবাজি বন্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানিয়েছেন।
বাংলাদেশ কার্গো ট্রলার বাল্কহেড শ্রমিক ইউনিয়নের কেন্দ্রিয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক মো: হাবিবুর রহমান জানান, আমরা যারা সিলেট থেকে পাথর বা অন্যান্য মালামাল নিয়ে ভোলার মেঘনা হয়ে চট্টগ্রাম যেতে চাই তারা একজন দক্ষ লাইনম্যান নিয়ে চট্টগ্রাম যেতে চাই। কারন আমরা ভোলার এ পথগুলো চিনি না। সে জন্য আমরা জাহাজের পক্ষে একটা টাকা দিতে হয়। ভোলার ইলিশা এলাকায় আসলে আমরা যাদেরকে নিতে চাই না বা যা অদক্ষ এমন কিছু ভূইফোর বাংলাদেশ নৌ-যান শ্রমিক ও কর্মচারী ইউনিয়ন সংগঠনের পক্ষে আমাদেরকে জোর করে লইনম্যান প্রদান করে। তারা নদীপথ চিনেন না।