ঈদে দুটি গান নিয়ে আসছেন সঙ্গীতশিল্পী উত্তমকুমার রায়

বিডিমেট্রোনিউজ ডেস্ক ॥ এবারের ঈদুল আজহায় রিলিজ হচ্ছে উত্তমের একটি মৌলিক আধুনিক গান ও একটি নজরুল সঙ্গীত। এর মধ্যে নিজের সুর-সঙ্গীত ও কণ্ঠে ‘’মুখ খুললেই গান’’ আর কাজী নজরুলের অনন্যসাধারন এক সৃষ্টি ‘’আকাশে ভোরের তারা’’।

এছাড়া আসন্ন দূর্গা পূজার জন্যও বাংলাদেশ বেতার ও বাংলাদেশ টেলিভিশনের প্রথম শ্রেণির তালিকাভূক্ত সঙ্গীতশিল্পী, সুরকার ও সঙ্গীত পরিচালক উত্তমকুমার রায় বেশ কয়েকটি বেসিক গান তৈরির কাজ নিজের হোম স্টুডিওতে করে চলেছেন। সবগুলো গানই নিজের ইউটিউব চ্যানেল থেকেই মুক্তি দেয়ার পরিকল্পনা করছেন।

তিনি নিজস্ব ইউটিউব চ্যানেলে নজরুলের গানের প্রমিত বাণী ও সুরে মিউজিক টিউটোরিয়াল সিরিজি আকারে আপ করছেন নিয়মিত গিটার কর্ডসহ।

উল্লেখ্য, নজরুলের গানের ক্ষেত্রে এই ধরণের টিউটোরিয়াল ওয়েভ জগতে একেবারেই নতুন। এছাড়া উত্তমের চ্যানেলে নিয়মিত আপ হচ্ছে নিজের মৌলিক গান ও নানা ধারার কভার সং।

ছেলেবেলা থেকেই উত্তমের গান গাওয়ার শুরু। স্কুল থেকে বিশ্ববিদ্যালয় জীবন। সবখানেই সঙ্গীতশিল্পী হিসেবে জুটেছে সম্মান আর পুরষ্কার। উত্তমের পড়াশুনা চট্ট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়। বিষয় সমাজবিজ্ঞান।

নজরুল ইন্সটিটিউট থেকে ডিপ্লোমায় প্রথম শ্রেণি প্রাপ্ত ও সরকারি এই প্রতিষ্ঠানটির নজরুলের প্রশিক্ষক হিসেবে সার্টিফিকেটধারী। দীর্ঘদিন শিখেছেন ওখানে। এছাড়া রবীন্দ্রভারতী থেকে বিমিউজ সম্পন্ন করেছেন। তালিম নিয়েছেন বাংলাদেশ ও ভারতের খ্যাতিমান সব সঙ্গীতজ্ঞের কাছে। এখন নিজেও গান শেখান। উত্তম একটি বেসরকারি মহিলা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিষয়ের সহকারি অধ্যাপক। গণমাধ্যমকর্মী হিসেবেও কাজ করছেন দীর্ঘদিন।

২০০৪ সালে উত্তমের ডেব্যু অ্যালবাম ‘হাওয়া’ ছিল আধুনিক গানের। এরপর বেশ ক’টি একক অ্যালবাম নজরুলসহ নানা ধারার গানের। কাজী নজরুলের বাছাই করা অবিস্মরণীয় কীর্তন, ভজন, বাউল, শ্যামা বিষয়ক ভক্তিগীতিও গেয়েছেন এ্যালবামে। আধুনিক যন্ত্রানুষঙ্গে কিন্তু শুদ্ধ বাণী ও সুরে স্বকীয়ভাবে । যা শ্রোতাদের ভালো লেগেছে। উত্তম বিটিভিসহ প্রায় সবগুলো বেসরকারি টিভি চ্যানলে লাইভসহ রেকর্ডেড নানা ধারার গানের অনুষ্ঠান করে নাম কুড়িয়েছেন। আরো বেশকটি প্রোজেক্ট নিয়ে কাজ করছেন উত্তম। যার মধ্যে রয়েছে ফোক ফিউশন, আধুনিক, নজরুল, রবীন্দ্র ও সুফি ফিউশন। নিজের স্টুডিওতে দীর্ঘদিন ধরে কাজ এগিয়ে নিচ্ছেন উত্তম। তিনি চান একজন কমপ্লিট মিউজিশিয়ান হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করতে।

ছোটবেলা থেকেই বিভিন্নধরণের মিউজিক শোনা ও চর্চার অভ্যেস। চান তাই সব ধরণের গান গাইতে। গিটার ও কি-বোর্ড বাজিয়ে হিসেবে নজর কাড়লেও অন্য বেশ কটি ইনস্ট্রুমেন্টও বাজাতে পারেন উত্তম। স্টুডিওতেও এ কাজগুলো করতে বেশ আনন্দ পান তিনি।

তিনি চান, প্রত্যেক স্কুল-কলেজে মিউজিক ক্লাস হোক। ছেলে-মেয়েরা গুরুর কাছে গিয়ে গান শিখুক। ৪-৫ বছর শেখার আগে কেউ পারফর্ম না করুক। বাংলাদেশ বেতার ও বাংলাদেশ টেলিভিশনে মূলত নজরুলসঙ্গীত ও আধুনিক গান করেন উত্তম। গভীর আবেগী গায়নভঙ্গীর অনন্যতার জন্য এরইমধ্যে উত্তম সঙ্গীতজনদের দৃষ্টি কেড়েছেন। সমানতালে স্টেজ শো-ও করতেন নিয়মিত – করোনায় যাতে অন্যান্য শিল্পীদের মতোই বাধ সেধেছে । সব ধরণের সঙ্গীতেই উত্তমের আগ্রহ। শুনেনও শাস্ত্রীয় সঙ্গীত থেকে শুরু করে পাশ্চাত্য রক-ফিউশন নির্বিচারে। গানের জন্য অনেক ত্যাগ স্বীকারও করেছেন তিনি। আজ আর গান গাওয়ার কোনো বিকল্পই খুঁজে পান না। ভালোলাগা, বিশ্বাস, জীবনবোধ তার সঙ্গীতকে ঘিরেই।

উত্তম দীর্ঘদিন নজরুল চর্চা করেছেন সঙ্গীতজ্ঞ সুধীন দাশ ও সোহরাব হোসেনের কাছে। উত্তমের সঙ্গীতের প্রথম শিক্ষক স্থানীয় শিশু একাডেমিতে প্রয়াত দেলোয়ার হক। বিশুদ্ধ মার্গসঙ্গীত শিখেছেন উস্তাদ মিহির লালা, অনিলকুমার সাহা, গৌতম ভট্টাচার্য, উস্তাদ মাশকুর আলী খান, শুভ্রা গুহ, বিদুষী শান্তি শর্মা প্রমুখের কাছে। এছাড়া উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতে উচ্চতর তালিম নিচ্ছেন গত ৬ বছরেরও বেশি সময় ধরে পণ্ডিত তুষার দত্তের কাছে।

প্রিয় দর্শক-শ্রোতা, গণমাধ্যমকর্মীসহ সংশ্লিষ্টদের দোয়া ও ভালবাসা চান উত্তম। চান আমৃত্যু গান গেয়ে যেতে।

Print Friendly

Related Posts