জ.ই বু্লবুল : দেশে করোনার সংক্রমণ এখনো ঊর্ধ্বমুখী। সেইসঙ্গে বাড়ছে মৃত্যুর সংখ্যাও। সময় এখন বর্ষাকাল। সব মিলিয়ে এ সময় করোনা, ডেঙ্গু সহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বেশি।
করোনার শুরুতে অনেক চিকিৎসক এবং গবেষকরা জানিয়েছিলেন, গরমে করোনা সংক্রমণের আশঙ্কা কমে যাবে। তবে তা হয়নি, বরং করোনার দ্বিতীয় ঢেউ চলছে। এ কারণে বর্ষার এ মৌসুমে সবাইকে সচেতন থাকতে হবে। এ সময় করোনাসহ বিভিন্ন রোগ থেকে বাঁচতে নিয়মিত মেনে চলুন কয়েকটি সতর্কতা-
১. যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি বজায় রাখুন:
করোনা মহামারির শুরু থেকেই বিশেষজ্ঞরা যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার পরামর্শ দিয়ে আসছেন। বর্ষার এ মৌসুমে করোনাসহ বিভিন্ন রোগ থেকে আঁচতে অবশ্যই ব্যক্তিগত সুরক্ষা নিশ্চিত করতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলুন।
নিয়মিত হাত ধুয়ে নিন। কোনো কাজের পর হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করুন। কাশি বা হাঁচির সময় ডিসপোজেবল টিস্যু ব্যবহার করুন। পাশাপাশি খাওয়ার আগে হাত ভাল করে ধুয়ে ফেলতে ভুলবেন না। বাইরে যাওয়ার আগে অবশ্যই মাস্ক, হ্যান্ড গ্লাভস ব্যবহার করুন।
*বাড়ী ঘরের আংঙিনা পরিষ্কার রাখুন:
করোনার মাঝে এখন ডেঙ্গু’ র উপসর্গ যোগ হলো-তাই সতর্কতা আরো বেশি বাড়নোর প্রয়োজন,আপনার বাড়ী ঘরের চারপাশ, পরিষ্কার রাখুন,কোন ভাবেই যেনো ময়লার স্তুপ বা টবে, নানার গলিতে পানি জমে না থাকে। সন্ধায় কয়েল না জ্বালিয়ে ধুপও জ্বালাতে পারেন।তাতে মশা কমে যাবে,প্বার্শপ্রতিক্রিয়া কম হবে।
২. নিজেকে হাইড্রেটেড রাখুন:
বর্ষার এ সময় পানি খাওয়ার পরিমাণ কমিয়ে দেন অনেকেই। এ কারণে শরীরে পানিশূন্যতার সৃষ্টি হয়। যা মোটেও ভালো লক্ষণ নয়। ডিহাইড্রেশন মূলত গ্রীষ্মের মৌসুমে ঘটে এমনটি নয়, বর্ষাকালেও ডিহাইড্রেশনের মুখোমুখি হতে পারেন।
সুতরাং শরীরকে হাইড্রেটেড রাখতে আপনার নিয়মিত পানি পান করা উচিত। পাশাপাশি ডিটক্স ওয়াটারসহ বিভিন্ন পুষ্টিকর পানীয় পান করতে পারেন এসময়। যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াবে এবং বিভিন্ন সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সহায়তা করবে।
৩. ক্ষত পরিষ্কার রাখুন:
বর্ষার এ সময় ত্বকের কোনো ক্ষতস্থান খোলা থাকলে সংক্রমণ ঘটতে পারে। শরীরের কাটা বা ক্ষত স্থান প্রায়শই জীবাণু এবং ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণের ঝুঁকিতে থাকে। তাই ক্ষত স্থান পরিষ্কার করতে হবে এবং সেখানে ব্যান্ডেজ দিয়ে বেঁধে রাখতে হবে।
এ ছাড়াও বর্ষার সময় ত্বকের খোসা ছাড়ানো এবং দাগ পড়তে দেখা যায়। তাই ত্বকের খোসা ধরে টানবেন না, এতে ক্ষত তৈরি হতে পারে। ত্বকের শুষ্কতা কাটাতে ক্রিম, লোশন বা ময়শ্চারাইজার ব্যবহার করতে পারেন।
৪. বায়ু দূষণ এড়িয়ে চলুন:
বর্ষায় বাতাসে প্রচুর পরিমাণে আর্দ্রতা থাকে। এই আর্দ্রতা প্রায়শই বাতাসের গুণমানকে প্রভাবিত করে এবং আসবাবপত্র এবং অন্যান্য গৃহস্থালীর পণ্যগুলোর ক্ষয়-ক্ষতি বা অবনতির দিকে পরিচালিত করে।
এটি বর্ষাকালে বায়ু দূষণের সম্ভাবনা বাড়িয়ে তুলতে পারে। তাই ঘরের দেয়াল এবং ছাদে কোনো প্রকারের ফুটো আছে কি-না তা পরীক্ষা করে দেখুন। নিয়মিত আপনার এয়ার কন্ডিশনারের ফিল্টারগুলো পরিষ্কার করুন এবং আপনার জুতো জোড়া বাড়ির বাইরে রাখুন।
৫. থালা-বাসন আলাদা করুন:
করোনা সংক্রমণ এড়াতে বাড়ির প্রতিটি সদস্যের উচিত পৃথক থালা-বাসন ব্যবহার করা। নিয়মিত প্লেটসহ বিভিন্ন বস্তু শেয়ার করলে করোনা সংক্রমণ বাড়তে পারে। এজন্য প্রয়োজনীয় বিভিন্ন ব্যবহার্য তৈজসপত্র আলাদা করুন।
৬. বাড়িতে বায়ু চলাচলের ব্যবস্থা:
প্রথমতো বর্ষা মৌসুম, তার উপরে যদি ঘরবদ্ধ অবস্থায় থাকেন; তাহলে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি বেড়ে যাবে। এমনকি অফিসের পরিবেশও যদি বদ্ধ হয়ে থাকে; তাহলে বিপদের কারণ হতে পারে। তাই যেখানেই থাকুন না কেন, সেখানে যেন বায়ু চলাচলের ব্যবস্থা থাকে তা নিশ্চিত করুন। পর্যাপ্ত সূর্যের আলো পেতে দরজা এবং জানালা খোলা রাখুন।
৭. ভিটামিন সাপ্লিমেন্ট নিন:
আপনার শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে এসময় ভিটামিন সি, ভিটামিন ডি এবং জিংক সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ করুন। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে এসব ভিটামিনের গুরুত্ব অনেক। শরীরের এসব ভিটামিন পর্যাপ্ত পরিমাণে থাকলে বিভিন্ন সংক্রমণ রোগের বিরুদ্ধে আপনার দেহ লড়াই করতে পারবে।
৮. ভিড় এড়িয়ে চলুন:
করোনাকালে ভিড় এড়িয়ে চলুন। গরুর বাজার সহ দোকান, সুপারশপ, বাসস্ট্যান্ডসহ বিভিন্ন জনবহুল স্থানগুলো এ সময় যতটা পারেন এড়িয়ে চলুন। প্রয়োজনে সপ্তাহখানের বাজার একসঙ্গে করে রাখুন। তাহলে বারবার বাজারে যেতে হবে না। নিরাপদ থাকতে অনলাইনেও বাজার করতে পারেন।
* মাক্স ও হাত ধোয়া যত্নবান হোন:
মাক্স ও হাত ধোয়া অধিকতর যত্নবান হোন,শুধু হাত ধুয়া ও মাক্স পড়লেই হবে না,এর নিয়মনীতি জেনে ব্যবহার করা দরকার। বাজারের ভালো মাক্স পড়া,খুলার ও ফেলে দেওয়ার নিয়ম জেনে রাখা দরকার।হাত কতসময় ধুতে হবে এবং কিভাবে, কতটা দুরুত্ব মানা দরকার?,স্বাশ- প্রশ্বাসে কথাবার্তায় ও কিন্তু আক্রমণ হচ্ছি আমরা।তাই এসব বিষয়ে জানা ও পরিবারের সবাইকে জানানো জরুরি।
৯. চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ রাখুন:
শত স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার পর কিংবা করোনা ভ্যাকসিন নেওয়ার পরেও আপনি করোনায় আক্রান্ত হতে পারেন। তাই যেকোনো পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত থাকা জরুরি। এজন্য চিকিৎসকদের পরামর্শ নিতে হবে। সেইসঙ্গে করোনা সম্পর্কিত বিভিন্ন আপডেট গণমাধ্যম থেকে জানা জরুরি।আর সর্বোপরি সৃষ্টিকর্তার চাওয়া একান্ত দরকার।ঘরেই থাকুন,পরিবার নিয়ে ভালো থাকুন।
সূত্র : অ্যাপোলা২৪৭
অনুলেখন: জ,ই বু্লবুল।