ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কোরবানির হাটে মানুষের ঢল, মাস্ক পড়তে অনিহা

জ,ই বু্লবুল: ঈদুল আজহা উপলক্ষে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিভিন্ন গরুর হাট বাজারে হাজার হাজার ক্রেতা-বিক্রেতার সমাগম ঘটেছে।

প্রশাসনের পক্ষ থেকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার নির্দেশনা ও বাজার কমিটির শক্তভাবে পরিচালনা করার কথা থাকলেও এ উপচে পড়া ভিড়ের জোয়ারে ভুলেই গেছে সব কিছু; সচেতনতার ছিটেফোটাও দেখা যায়নি। মাস্ক তো দুরের কথা মানুষের ধাক্কা ও চাপে দম ফেলাও কঠিন হয়ে পড়েছে তাদের।

সরেজমিন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরের পূর্বাঞ্চলের ঐতিহাসিক শিবপুর উচ্চ বিদ্যালয় খেলার মাঠ, জিনোদপুর,ও বাঙরা বাজারে গিয়ে দেখা যায়, বিপুল ক্রেতা-বিক্রেতার উপস্থিতিতে সেখানে তিল ফেলার জায়গাটুকুও নেই।

এ সময় স্বাস্থ্যবিধি পালনে বাজারে আসা লোকজনে মাঝে উদাসীনতা লক্ষ্য করা যায়। বাজার কর্তৃপক্ষ বিনামূল্যে মাস্ক ও হাত দোয়ার সাবান বেসিন দিয়ে রাখলেও তা ব্যবহারে কথা ভুলেই গেছেন তারা, এক ধরনের অনিহা প্রকাশ তাদের মাঝে। মাস্ক পকেটে, কেউবা হাতে নিয়ে, কেউ কানে ঝুলিয়ে রাখছেন ঠিকই, বাজারে ঢুকে খুলে ফেলছেন কেউ কেউ।

হাটে আসা এক গরু ব্যবসায়ী তাহের মিয়ার কাছে মাস্কের কথা জানতে চাইলে তিনি বলেন, “অন্ন কাউরে পাইছো না, গরমে এমনি বাঁচি না, আবার বলো মাস্ক নাই কেড়ে,,,।

হাটে আসা জিনোদপুরের চাকুরীজীবি মুক্তার হােসেন বলেন, ভাই মাস্ক ঘামে নস্ট হয়ে গেছে তাই ফেলে দিছি, দেশে কি করোনা বেশি? আর মরলে মইরা যামু।

ইউপি চেয়ারম্যান শাহীন সরকার বলেন, জনগণকে সচেতনতার জন্য পুলিশ-আনসার ও স্বেচ্ছাসেবীরা মিলে কাজ করে যাচ্ছি, হাটে মাস্ক বিতরণ করা হচ্ছে। তবে অতিরিক্ত গরমে
অতিষ্ঠ হয়ে কেউ কেউ মাস্ক পড়তে অনীহা দেখাচ্ছে। তাদের স্বাস্থ্যবিধি মানানাের চেষ্টা করা হচ্ছে। ঈদ নিকটবর্তী হওয়ায় হঠাৎ করে ক্রেতা-বিক্রেতা বেড়ে গেছে। তাই ভিড় সামলাতে শতাধিক মাঠকর্মীকে হিমশিম খেতে হচ্ছে।

এ ব্যাপারে শিবপুর পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই নজরুল ইসলাম বলেন, সকাল থেকে পুলিশ ও মাঠকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে কাজ করছি অনেকেই মাস্ক পড়ছেন। যারা পরেননি
তাদের বিনামূল্যে মাস্ক দেয়া হচ্ছে। হাটে অতিরিক্ত ভিড়। প্রচণ্ড গমের মধ্যেও স্বাস্থ্যবিধি মানাতে চেষ্টা চলছে। স্হানীয় হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, হঠাৎ করেই নবীনগরে করোনা রোগী বেড়েই যাচ্ছে, মানুষের মাঝে স্বাস্হ্য সচেতনার বড়ই অভাব। এভাবে চলতে থাকলে অবস্থা ভয়ানক পর্যায়ে চলে যেতে পারে।

★করোনার আপডেট :
আজ শনিবার (১৭ জুলাই) ব্রাহ্মণবাড়িয়া হতে প্রাপ্ত রিপোর্টে ৭ জনের করোনা শনাক্ত। আক্রান্তদের বাড়ি- তিয়ারা (২জন), বিদ্যাকুট, মনিপুর, নারায়ণপুর, গাংগেরকোট, উত্তরপারায় একজন করে। এখন পর্যন্ত মোট আক্রান্ত-৭৮৫ জন। মোট সুস্থ্য- ৫৩০ জন। মৃত্যুবরণ করেছেন-১৬ জন। আক্রান্ত অবস্থায় আইসোলেশনে আছেন-২৩৯ জন। তাই স্হানীয় সংসদ সদস্য মোহাম্মদ এবাদুল করিম বু্লবুল বেশ উদ্বেগ প্রকাশ করে সবাইকে সচেতনতার পরামর্শ দিয়েছেন।

ছবি: স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষা করে নবীনগরের ঐতিহ্যবাহী শিবপুর, জিনোদপুর গরুর হাটে ক্রেতা-বিক্রেতার সমাগম। শনিবার (১৭ জুলাই) সন্ধ্যায় তােলা।

Print Friendly

Related Posts